কলকাতা, 22 অক্টোবর: দুর্গাপূজায় রাজ্য সরকার অনুদান দিচ্ছে কয়েক বছর ধরেই । এবছর মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় অনুদান বেড়েছে অনেকটাই । অনুমোদিত পুজো কমিটিগুলোকে 25 হাজার টাকা করে অনুদান দিয়েছে রাজ্য সরকার । এবার কালীপূজা কমিটিগুলি বঞ্চনার অভিযোগ তুলে দাবি জানাল অনুদানের । গতকাল কলকাতা পুলিশের সঙ্গে শহরের পুজো কমিটিগুলির সমন্বয় বৈঠকে এই দাবি করা হয় । যদিও এ বিষয়ে পুলিশের কাছে কোনও উত্তর ছিল না ।
দুর্গাপুজোয় কলকাতা পুলিশের কাজ প্রশংসা কুড়িয়েছে সর্বত্র । একই ভাবে কালীপূজা সাফল্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ করতে চাইছে পুলিশ । সেই সূত্রেই আজ শহর কলকাতার কালীপূজা কমিটিগুলির সঙ্গে সমন্বয় বৈঠক করে কলকাতা পুলিশ । বৈঠকে হাজির ছিলেন নগরপাল অনুজ শর্মা সহ পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারা । দুর্গাপুজো এবং কালীপুজোর মধ্যে চরিত্রগত পার্থক্য রয়েছে। পুলিশের কাছে দুই পুজোর চ্যালেঞ্জ দু'রকমের । দুর্গাপুজো সামাল দিয়ে শহর সচল রাখাই পুলিশের লক্ষ্য থাকে । কালীপূজায় ভিড় হয় না তেমন । এখানে কলকাতা পুলিশের চ্যালেঞ্জ থাকে শব্দ-দানবের হাত থেকে শহরবাসীকে রক্ষা করার ।
বহুদিন ধরেই কলকাতা শহরে শব্দবাজি নিষিদ্ধ । শব্দবাজির ক্ষেত্রে বেঁধে দেওয়া আছে 90 ডেসিবেল । কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে বেশ কিছু বাজি। সেই নিষিদ্ধ বাজির তালিকাও তৈরি করেছে পুলিশ। সেগুলি হল ক্র্যাকার, ভুঁই পটকা, আগুনে পটকা, বোমা । আর্সেনিক সালফেট বা পটাশিয়াম ক্লোরেট দিয়ে তৈরি সব বাজি নিষিদ্ধ । ছুঁচো বাজি, উড়ন তুবড়ি, চটপটি, চকলেট বোমা, রকেট বা শব্দ উৎপাদনকারী সব বাজি নিষিদ্ধ শহরে । কিন্তু প্রতি বছরই বিধিনিষেধের তোয়াক্কা না করে ব্যাপক পরিমাণে শব্দ বাজি ফাটে তিলোত্তমায় । বাজির কারণে গোটা শহরে ছড়ায় দূষণ । অনেক ক্ষেত্রে ঘটে যায় অগ্নিকাণ্ড । কলকাতা পুলিশের কাছে বাজি তাণ্ডব বন্ধ করাই থাকে কালীপূজার মূল চ্যালেঞ্জ । আজ সমন্বয় বৈঠকে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জাভেদ শামিম কালীপূজা কমিটিগুলোকে বাজির তাণ্ডবের হাত থেকে শহরবাসীকে রক্ষা করতে বিশেষ আবেদন জানান৷
গতকাল পূজা কমিটির পক্ষ থেকে বেশ কিছু সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয় । সেখানেই দাবি ওঠে অনুদানের । মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি থেকে ঢিলছোড়া দূরত্বে কালীঘাট গরমিল সংঘ । তাদের তরফে বলা হয়, ''দুর্গাপূজার সময় মুখ্যমন্ত্রী বৈঠক করেন পুজো কমিটি গুলোর সঙ্গে । তাঁরা চান, উনি কালীপূজা কমিটির সঙ্গে বৈঠক করুন । তাঁরা নানা দিক থেকে বঞ্চিত । কমিটির একাংশের দাবি, দুর্গাপূজা এতদিন ধরে চলে যে অনেক সময় পুজোর প্যান্ডেল কালীপূজার আগে খোলা হয় না । চাঁদাও মেলেনা তেমন ভাবে । বিজ্ঞাপন নেই । এই অবস্থায় কালীপূজা করা কষ্টকর ।
দুর্গাপুজোয় 25000 টাকা করে অনুদান দিয়েছে রাজ্য । তাই কালীপূজার ক্ষেত্রে ন্যূনতম 10 হাজার টাকা অনুদানের দাবি জানানো হয় ৷ বেশ কয়েকটি পূজা কমিটির দাবি, বিদ্যুতের মাশুলের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হোক তাদের । তাদের বক্তব্য, ''কালীপুজো আলোর উৎসব । দুর্গাপুজোর সময় বিদ্যুতের মাশুলে প্রচুর ছাড় দেওয়া হয়েছে । আমাদের ক্ষেত্রে কোনও ছাড় নেই । আমাদের জন্যও ছাড়ের ব্যবস্থা করুক রাজ্য ।"