কলকাতা, 9 ফেব্রুয়ারি : পরিকল্পনা আগে থেকেই তৈরি হয়েছিল । সেভাবেই পর্ণশ্রী থেকে একবালপুরের ফ্ল্যাটটিতে নিয়ে আসা হয় ক্লাস সেভেনের ওই ছাত্রীকে । সেখানেই একপ্রকার জোর করে তাকে মদ পান করানো হয়। তখন রাত প্রায় ন'টা । তারপর তার উপর একে একে ঝাঁপিয়ে পড়ে সবাই । জেরায় এই তথ্য উঠে এসেছে তদন্তকারীদের কাছে । যদিও নির্যাতিতাকে এখনও পর্যন্ত সেভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায়নি। কারণ সে মানসিকভাবে একেবারেই বিপর্যস্ত অবস্থায় রয়েছে ।
স্কুলে যাতায়াতের সূত্র ধরে অমরজিৎ চৌপাল ওরফে রাহুল (21) ও মনোজ শর্মা সঙ্গে আগে থেকেই পরিচিতি ছিল ওই কিশোরীর । রাহুলের বাড়ি মহেশতলা এলাকায় । মনোজ পর্নশ্রীর বাসিন্দা । এই দু'জনের সঙ্গেই ওই দিন সন্ধ্যায় বের হয়েছিল কিশোরী। বাইক চালাচ্ছিল রাহুল । মাঝখানে বসানো হয়েছিল ওই কিশোরীকে । তারপর সোজা নিয়ে যাওয়া হয় একবালপুরের 4/3/H/51 ভূকৈলাশ রোডের ফ্ল্যাটটিতে ।
ওই ফ্ল্যাটটি সঞ্জয় মিরধার মায়ের । যদিও সে মায়ের সঙ্গে থাকে 21/1 ময়ূরভঞ্জ রোডে । ভূকৈলাশ রোডের ফ্ল্যাটটি ফাঁকাই থাকত । মায়ের কাছ থাকত ওই ফ্ল্যাটের চাবি ৷ সেই চাবি আগে থেকেই নিজের কাছে রেখেছিল সঞ্জয় । ওই দিন সন্ধে থেকেই একবালপুরের ফ্ল্যাটে উপস্থিত ছিল 24 বছরের বিকাশ মল্লিক, সঞ্জয় মিরধা (28) ও তাদের বন্ধু রাঁচির ঋত্বিক রাম(19) । তারা আগে থেকেই মদ খেয়ে ছিল । কিশোরীকে নিয়ে রাত ন'টা নাগাদ ওই ফ্ল্যাটে পৌঁছায় রাহুল ও মনোজ । এরপর পরিকল্পনা মতোই শুধুমাত্র আনন্দ করার কথা বলে কিশোরীকে মদ পান করানো হয় । নেশাগ্রস্ত হয়ে গেলে ওই কিশোরীর উপর একে একে ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা । তখন অবশ্য সঞ্জয় ওই ঘরে ছিল না বলেই তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ । পাশের একটি ঘরে বসে সে মদ্যপান করছিল । রাতভর চলে অত্যাচার ।
সকাল ন'টা নাগাদ হুঁশ ফেরে কিশোরীর । তখন ওই ঘরে কেউ ছিল না । সে ওখান থেকে বেরিয়ে কোনওরকমে চলে যায় সোজা পর্ণশ্রী থানায় । তখন রীতিমতো বিধ্বস্ত সে । কোনরকমে ডিউটি অফিসারকে গতরাতের সব কথা জানায় । ওই কিশোরী মানসিকভাবে এতটাই বিধ্বস্ত যে তাকে সেভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেননি তদন্তকারী অফিসারেরা । সঞ্জয়কে গ্রেপ্তার করার পর ওই চারজনের মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর । আজ সঞ্জয়কে আদালতে পেশ করে নিজেদের হেপাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে পুলিশ ।