ETV Bharat / city

চুক্তিভিত্তিক, আংশিক ও অতিথি অধ্যাপকদের স্টেট এডেড কলেজ টিচার হিসেবে মান্যতা

পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক ও আংশিক সময়ের অধ্যাপকদের স্টেট এডেড কলেজ টিচার হিসেবে মান্যতা দিল উচ্চশিক্ষা দপ্তর । গতকাল এই সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশিকা জারি হয়েছে । যদিও, নির্দেশিকায় কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।

Higher Education Department
বিকাশ ভবন
author img

By

Published : Dec 28, 2019, 3:20 PM IST

কলকাতা, ২৮ ডিসেম্বর : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী রাজ্যের অতিথি, পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক ও আংশিক সময়ের অধ্যাপকদের স্টেট এডেড কলেজ টিচার হিসেবে মান্যতা দিল উচ্চশিক্ষা দপ্তর । গতকাল এই সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে উচ্চশিক্ষা দপ্তর। প্রকাশিত নির্দেশিকা অনুযায়ী, আগামী বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নতুন পদের বেতন পাবেন স্টেট এডেড কলেজ শিক্ষকরা। যদিও, নির্দেশিকায় আরও বেশ কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। সেই বিষয়গুলি নিয়ে তাঁরা শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করবে বলে জানাচ্ছে ।

চলতি বছরের অগাস্টে হাওড়া জেলার পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের অতিথি, পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক ও আংশিক সময়ের অধ্যাপকদের এক ছাতার তলায় নিয়ে আসার কথা ঘোষণা করেন। তিনি জানান, এবার থেকে এই তিন শ্রেণির অধ্যাপকরা স্টেট এডেড কলেজ টিচার বলে পরিচিত হবেন। সেখানেই তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, স্টেট এডেড কলেজ টিচার পদের কয়টি ভাগ থাকবে ও কোন পদের বেতন কত হবে। সেই অনুযায়ী গতকাল এই তিন শ্রেণির অধ্যাপকদের স্টেট এডেড কলেজ টিচারের মান্যতা দিল উচ্চশিক্ষা দপ্তর।

Higher Education Department
স্টেট এডেড কলেজ টিচারদের জন্য নির্দেশিকা উচ্চশিক্ষা দপ্তরের

সরকারি নির্দেশিকায় এই নতুন পদের কোন ভাগে কত বেতন, কারা এর আওতায় আসবে, কীভাবে আসবে, কবে থেকে এটি চালু হবে, কাজের পরিধি কী হবে সেই বিষয়গুলো স্পষ্ট করা হয়েছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও কলেজ সার্ভিস কমিশনের বেঁধে দেওয়া যোগ্যতা যাঁদের আছে তাঁদের এখন থেকে বলা হবে 'স্টেট এডেড কলেজ টিচার, ক্যাটেগরি ওয়ান'। এই ক্যাটেগরির আওতায় আসা শিক্ষক যাঁরা ১০ বছরের কম সময় চাকরি করছেন তাঁরা প্রতি মাসে সান্মানিক পাবেন ৩১ হাজার টাকা ৷ যাঁরা ১০ বছরের বেশি সময় ধরে সার্ভিস করছেন তাঁরা প্রতি মাসে ৩৫ হাজার টাকা সান্মানিক পাবেন।

'স্টেট এডেড কলেজ টিচার, ক্যাটাগরি টু'-তে রাখা হয়েছে সরকার অনুমোদিত আংশিক সময়ের শিক্ষক, পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক এবং অতিথি অধ্যাপকদের, যাঁদের কলেজ শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও কলেজ সার্ভিস কমিশনের বেঁধে দেওয়া যোগ্যতা নেই। তাঁদের ক্ষেত্রে ১০ বছরের কম চাকরি করছেন যাঁরা, সেই অধ্যাপকদের প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা এবং ১০ বছরের বেশি সময় ধরে চাকরি করছেন যাঁরা, তাঁদের প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা সাম্মানিক দেওয়া হবে। যে আংশিক সময়ের শিক্ষক ও পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকরা বর্তমানে নির্দেশিকায় বেঁধে দেওয়া সান্মানিকের থেকে বেশি টাকা পাচ্ছেন, তাঁদের পে-প্রোটেকশন দেওয়া হবে।

নির্দেশিকা অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকেই এই নতুন পদ অনুযায়ী আর্থিক সুবিধা চালু হয়ে যাবে। প্রতি বছর ১ জুলাই তিন শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধি হবে স্টেট এডেড কলেজ টিচারদের। ১০ বছর সার্ভিস সম্পূর্ণ করলে, ৬০ বছরে অবসর গ্রহণের সময় এই শিক্ষকদের পাঁচ লাখ টাকা অবসরকালীন ভাতা দেওয়া হবে। ক্যাটাগরি টু-এর স্টেট এডেড কলেজ টিচাররা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বেঁধে দেওয়া যোগ্যতা অর্জন করলে তাদের ক্যাটাগরি ওয়ানের মান্যতা দেওয়া হবে। যদিও, এই যোগ্যতা অর্জনের বিষয়টি রাজ্য সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষ। এই দুটি ক্যাটাগরির শিক্ষকদেরই প্রতি সপ্তাহে ১৫ ঘণ্টা করে ক্লাস নিতে হবে। ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই থেকে বা তার আগে থেকে যে সকল সরকার অনুমোদিত আংশিক সময়ের, পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক ও অতিথি অধ্যাপকরা কলেজে কর্মরত ছিলেন শুধুমাত্র তাঁরাই এই নির্দেশিকার আওতায় সুবিধা পাবেন। পাবলিক সার্ভিসের জন্য এই ধরনের শিক্ষকদের যে কোনও কলেজে পাঠানো হতে পারে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকায়।

নির্দেশিকা প্রকাশ হওয়ায় সন্তুষ্ট আংশিক সময়ের, পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক ও অতিথি অধ্যাপকরা। কিন্তু, তার পরেও নির্দেশিকার বেশ কিছু বিষয় আরও স্পষ্ট করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। কলেজ অ্যান্ড ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গলের (CUTAB) সাধারণ সম্পাদক গৌরাঙ্গ দেবনাথ বলেন, "অনেক দেরি করে হলেও স্টেট এডেড কলেজ টিচারদের সরকারি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছেন। এতে রাজ্যের প্রায় ১৪ হাজার অধ্যাপক উপকৃত হবেন। এর জন্য মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ। তবুও এর সঙ্গে আমরা বলব, এই সরকারি আদেশনামায় বেশ কিছু জায়গায় অস্পষ্টতা এবং মৌলিক ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে। সেগুলো নিয়ে আমরা শিক্ষামন্ত্রীকে জানিয়েছি। বলেছি, এই ত্রুটি-বিচ্যুতি অবিলম্বে দূর করতে হবে। আমরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছি দেশের সর্বত্র চাকরি করার অভিজ্ঞতাকে মূল্য দেওয়া হয়। কিন্তু, এই নির্দেশিকায় অভিজ্ঞ শিক্ষক যাঁরা ৩০-৩৫ বছর পড়াচ্ছেন, তাঁরা কোনও মূল্য পাননি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন করব, অভিজ্ঞতাকে মূল্য দিন। পাশাপাশি এই আবেদনটাও রাখব, সপ্তাহে ১৫ ঘণ্টা ক্লাস নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু, তারজন্য পাঁচদিন, ছয়দিন, সাতদিন কতদিন যেতে হবে? এই অস্পষ্টতা দূর করা উচিত । "

কলকাতা, ২৮ ডিসেম্বর : মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী রাজ্যের অতিথি, পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক ও আংশিক সময়ের অধ্যাপকদের স্টেট এডেড কলেজ টিচার হিসেবে মান্যতা দিল উচ্চশিক্ষা দপ্তর । গতকাল এই সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে উচ্চশিক্ষা দপ্তর। প্রকাশিত নির্দেশিকা অনুযায়ী, আগামী বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নতুন পদের বেতন পাবেন স্টেট এডেড কলেজ শিক্ষকরা। যদিও, নির্দেশিকায় আরও বেশ কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। সেই বিষয়গুলি নিয়ে তাঁরা শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করবে বলে জানাচ্ছে ।

চলতি বছরের অগাস্টে হাওড়া জেলার পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের অতিথি, পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক ও আংশিক সময়ের অধ্যাপকদের এক ছাতার তলায় নিয়ে আসার কথা ঘোষণা করেন। তিনি জানান, এবার থেকে এই তিন শ্রেণির অধ্যাপকরা স্টেট এডেড কলেজ টিচার বলে পরিচিত হবেন। সেখানেই তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, স্টেট এডেড কলেজ টিচার পদের কয়টি ভাগ থাকবে ও কোন পদের বেতন কত হবে। সেই অনুযায়ী গতকাল এই তিন শ্রেণির অধ্যাপকদের স্টেট এডেড কলেজ টিচারের মান্যতা দিল উচ্চশিক্ষা দপ্তর।

Higher Education Department
স্টেট এডেড কলেজ টিচারদের জন্য নির্দেশিকা উচ্চশিক্ষা দপ্তরের

সরকারি নির্দেশিকায় এই নতুন পদের কোন ভাগে কত বেতন, কারা এর আওতায় আসবে, কীভাবে আসবে, কবে থেকে এটি চালু হবে, কাজের পরিধি কী হবে সেই বিষয়গুলো স্পষ্ট করা হয়েছে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও কলেজ সার্ভিস কমিশনের বেঁধে দেওয়া যোগ্যতা যাঁদের আছে তাঁদের এখন থেকে বলা হবে 'স্টেট এডেড কলেজ টিচার, ক্যাটেগরি ওয়ান'। এই ক্যাটেগরির আওতায় আসা শিক্ষক যাঁরা ১০ বছরের কম সময় চাকরি করছেন তাঁরা প্রতি মাসে সান্মানিক পাবেন ৩১ হাজার টাকা ৷ যাঁরা ১০ বছরের বেশি সময় ধরে সার্ভিস করছেন তাঁরা প্রতি মাসে ৩৫ হাজার টাকা সান্মানিক পাবেন।

'স্টেট এডেড কলেজ টিচার, ক্যাটাগরি টু'-তে রাখা হয়েছে সরকার অনুমোদিত আংশিক সময়ের শিক্ষক, পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক এবং অতিথি অধ্যাপকদের, যাঁদের কলেজ শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও কলেজ সার্ভিস কমিশনের বেঁধে দেওয়া যোগ্যতা নেই। তাঁদের ক্ষেত্রে ১০ বছরের কম চাকরি করছেন যাঁরা, সেই অধ্যাপকদের প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা এবং ১০ বছরের বেশি সময় ধরে চাকরি করছেন যাঁরা, তাঁদের প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা সাম্মানিক দেওয়া হবে। যে আংশিক সময়ের শিক্ষক ও পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকরা বর্তমানে নির্দেশিকায় বেঁধে দেওয়া সান্মানিকের থেকে বেশি টাকা পাচ্ছেন, তাঁদের পে-প্রোটেকশন দেওয়া হবে।

নির্দেশিকা অনুযায়ী, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকেই এই নতুন পদ অনুযায়ী আর্থিক সুবিধা চালু হয়ে যাবে। প্রতি বছর ১ জুলাই তিন শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধি হবে স্টেট এডেড কলেজ টিচারদের। ১০ বছর সার্ভিস সম্পূর্ণ করলে, ৬০ বছরে অবসর গ্রহণের সময় এই শিক্ষকদের পাঁচ লাখ টাকা অবসরকালীন ভাতা দেওয়া হবে। ক্যাটাগরি টু-এর স্টেট এডেড কলেজ টিচাররা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের বেঁধে দেওয়া যোগ্যতা অর্জন করলে তাদের ক্যাটাগরি ওয়ানের মান্যতা দেওয়া হবে। যদিও, এই যোগ্যতা অর্জনের বিষয়টি রাজ্য সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষ। এই দুটি ক্যাটাগরির শিক্ষকদেরই প্রতি সপ্তাহে ১৫ ঘণ্টা করে ক্লাস নিতে হবে। ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই থেকে বা তার আগে থেকে যে সকল সরকার অনুমোদিত আংশিক সময়ের, পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক ও অতিথি অধ্যাপকরা কলেজে কর্মরত ছিলেন শুধুমাত্র তাঁরাই এই নির্দেশিকার আওতায় সুবিধা পাবেন। পাবলিক সার্ভিসের জন্য এই ধরনের শিক্ষকদের যে কোনও কলেজে পাঠানো হতে পারে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকায়।

নির্দেশিকা প্রকাশ হওয়ায় সন্তুষ্ট আংশিক সময়ের, পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক ও অতিথি অধ্যাপকরা। কিন্তু, তার পরেও নির্দেশিকার বেশ কিছু বিষয় আরও স্পষ্ট করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। কলেজ অ্যান্ড ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গলের (CUTAB) সাধারণ সম্পাদক গৌরাঙ্গ দেবনাথ বলেন, "অনেক দেরি করে হলেও স্টেট এডেড কলেজ টিচারদের সরকারি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছেন। এতে রাজ্যের প্রায় ১৪ হাজার অধ্যাপক উপকৃত হবেন। এর জন্য মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ। তবুও এর সঙ্গে আমরা বলব, এই সরকারি আদেশনামায় বেশ কিছু জায়গায় অস্পষ্টতা এবং মৌলিক ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে। সেগুলো নিয়ে আমরা শিক্ষামন্ত্রীকে জানিয়েছি। বলেছি, এই ত্রুটি-বিচ্যুতি অবিলম্বে দূর করতে হবে। আমরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছি দেশের সর্বত্র চাকরি করার অভিজ্ঞতাকে মূল্য দেওয়া হয়। কিন্তু, এই নির্দেশিকায় অভিজ্ঞ শিক্ষক যাঁরা ৩০-৩৫ বছর পড়াচ্ছেন, তাঁরা কোনও মূল্য পাননি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন করব, অভিজ্ঞতাকে মূল্য দিন। পাশাপাশি এই আবেদনটাও রাখব, সপ্তাহে ১৫ ঘণ্টা ক্লাস নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু, তারজন্য পাঁচদিন, ছয়দিন, সাতদিন কতদিন যেতে হবে? এই অস্পষ্টতা দূর করা উচিত । "

Intro:কলকাতা, ২৮ ডিসেম্বর: মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘোষণা অনুযায়ী রাজ্যের অতিথি, পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক ও আংশিক সময়ের অধ্যাপকদের স্টেট এডেড কলেজ টিচার্সের দর্জা দিল উচ্চশিক্ষা দপ্তর। গতকাল এই সংক্রান্ত সরকারি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছে উচ্চশিক্ষা দপ্তর। প্রকাশিত নির্দেশিকা অনুযায়ী, আগামী বছর অর্থাৎ ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকে নতুন পদের বেতন পাবেন স্টেট এডেড কলেজ টিচাররা। যদিও, নির্দেশিকায় বেশ কয়েকটি বিষয় আরও স্পষ্ট করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। বিষয়গুলি নিয়ে তাঁরা শিক্ষামন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন বলে জানাচ্ছেন।
Body:চলতি বছর অগাস্ট মাসে হাওড়া জেলার পর্যালোচনা বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের অতিথি, পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক ও আংশিক সময়ের, এই তিন শ্রেণির অধ্যাপকদের এক ছাতার তলায় নিয়ে আসার কথা ঘোষণা করেন। তিনি জানান, এবার থেকে এই তিন শ্রেণির অধ্যাপকরা স্টেট এডেড কলেজ টিচার বলে পরিচিত হবেন। সেখানেই তিনি জানিয়ে দিয়েছিলেন, স্টেট এডেড কলেজ টিচার পদের কটি ভাগ থাকবে ও কোন পদের বেতন কত হবে। সেই অনুযায়ী গতকাল এই তিন শ্রেণির অধ্যাপকদের স্টেট এডেড কলেজ টিচারের দর্জা দিল উচ্চশিক্ষা দপ্তর।

প্রকাশিত সরকারি নির্দেশিকায় এই নতুন পদের কোন ভাগে কতো বেতন, কারা এর আওতায় আসবেন, কীভাবে আসবেন, কবে থেকে এটি লাগু হবে, কাজের পরিধি কী হবে সেই বিষয়গুলো স্পষ্ট করা হয়েছে। বলা হয়েছে, এই নির্দেশিকা প্রকাশের সময় শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও কলেজ সার্ভিস কমিশনের প্রেসক্রাইব করা যোগ্যতা আছে যে সকল সরকার অনুমোদিত আংশিক সময়ের শিক্ষক (PTTs), সরকার অনুমোদিত পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক (CWTTs) এবং অতিথি অধ্যাপকদের তাঁদের নতুন নাম হবে স্টেট এডেড কলেজ টিচার, ক্যাটাগরি ওয়ান। এই ক্যাটাগরির আওতায় আসা শিক্ষক যাঁরা ১০ বছরের কম সময় সার্ভিস করছেন তাঁরা প্রতি মাসে ৩১ হাজার টাকা ও যাঁরা ১০ বছরের বেশি সময় ধরে সার্ভিস করছেন তাঁরা প্রতি মাসে ৩৫ হাজার টাকা সান্মানিক পাবেন। স্টেট এডেড কলেজ টিচার, ক্যাটাগরি টু-তে রাখা হয়েছে সেই সকল সরকার অনুমোদিত আংশিক সময়ের শিক্ষক, সরকার অনুমোদিত পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষক এবং অতিথি অধ্যাপকদের যাঁদের কলেজ শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ও কলেজ সার্ভিস কমিশন দ্বারা প্রেসক্রাইব করা যোগ্যতা নেই। তাঁদের ক্ষেত্রে ১০ বছরের কম সার্ভিস করা অধ্যাপকদের প্রতি মাসে ২০ হাজার টাকা ও ১০ বছরের বেশি সময় ধরে সার্ভিস করে আসাদের প্রতি মাসে ২৫ হাজার টাকা সাম্মানিক দেওয়া হবে। যে সকল সরকার অনুমোদিত আংশিক সময়ের শিক্ষক ও পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক শিক্ষকরা বর্তমানে বেশি সাম্মানিক পাচ্ছেন তাঁদের পে-প্রোটেকশন দেওয়া হবে।

নির্দেশিকা অনুযায়ী, আগামী বছর অর্থাৎ, ২০২০ সালের ১ জানুয়ারি থেকেই এই নতুন পদ অনুযায়ী আর্থিক সুবিধা লাগু হয়ে যাবে। প্রতি বছর ১ জুলাই ৩ শতাংশ হারে বেতন বৃদ্ধি হবে স্টেট এডেড কলেজ টিচারদের। ১০ বছর সার্ভিস সম্পূর্ণ করলে, ৬০ বছরে অবসরগ্রহণকালে এই শিক্ষকদের ৫ লক্ষ টাকা অবসরকালীন ভাতা দেওয়া হবে। ক্যাটাগরি টু-এর স্টেট এডেড কলেজ টিচাররা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের প্রেসক্রাইব যোগ্যতা অর্জন করলে অর্জন করার দিন থেকেই তাদের ক্যাটাগরি ওয়ানের দর্জা দেওয়া হবে। যদিও, এই যোগ্যতা অর্জনের বিষয়টি রাজ্য সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষ। এই দুটি ক্যাটাগরির শিক্ষকদেরই প্রতি সপ্তাহে ১৫ ঘন্টা করে ক্লাস নিতে হবে। ২০১৯ সালের ১৩ জুলাই থেকে বা তার আগে থেকে যে সকল সরকার অনুমোদিত আংশিক সময়ের, পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক ও অতিথি অধ্যাপকরা কলেজে কর্মরত ছিলেন শুধুমাত্র তাঁরাই এই নির্দেশিকার সুবিধাগুলো পাবেন। পাবলিক সার্ভিসের জন্য এই ধরনের শিক্ষকদের যে কোনও কলেজে পাঠানো হতে পারে বলেও স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে নির্দেশিকায়।

অগাস্ট মাসে ঘোষণার পর অবশেষে ডিসেম্বর মাসে নির্দেশিকা প্রকাশ হওয়ায় একধারে সন্তুষ্ট আংশিক সময়ের, পূর্ণ সময়ের চুক্তিভিত্তিক, অতিথি অধ্যাপকরা। কিন্তু, তার পরেও নির্দেশিকার বেশ কিছু বিষয় আরও স্পষ্ট করার প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা। কলেজ অ্যান্ড ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গলের (CUTAB) সাধারণ সম্পাদক গৌরাঙ্গ দেবনাথ বলেন, "অনেক দেরি করে হলেও স্টেট এডেড কলেজ টিচারদের সরকারি নির্দেশিকা প্রকাশ করেছেন। এতে বাস্তবিকপক্ষে রাজ্যের প্রায় ১৪ হাজার অধ্যাপক উপকৃত হবেন। এর জন্য মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ও মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ। তবুও এর সঙ্গে আমরা বলব, এই সরকারি আদেশনামায় বেশ কিছু জায়গায় অস্পষ্টতা এবং মৌলিক ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়েছে। সেগুলো নিয়ে আমরা শিক্ষামন্ত্রীকে জানিয়েছি। বলেছি, এই ত্রুটি-বিচ্যুতি অবিলম্বে দূর করতে হবে। এর সঙ্গে আমরা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছি ও আগামী দিনে জানাব যে, দেশের সর্বত্র চাকরিতে অভিজ্ঞতাকে মূল্য দেওয়া হয়। কিন্তু, এই নির্দেশিকায় অভিজ্ঞ শিক্ষক যাঁরা ৩০-৩৫ বছর পড়াচ্ছেন, তাঁরা কোনও মূল্য পাইনি। এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। আমরা মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আবেদন করব, অভিজ্ঞতাকে মূল্য দিন। পাশাপাশি এই আবেদনটাও রাখব, সপ্তাহে ১৫ ঘন্টা ক্লাস নিতে বলা হয়েছে। কিন্তু, তারজন্য পাঁচদিন, ছয়দিন, সাতদিন কতদিন যেতে হবে? এই অস্পষ্টতা, দুর্বোধ্যতাগুলোকে শিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে স্বচ্ছ ঘোষণার মধ্য দিয়ে প্রকাশ করলে এই অর্ডারের সামগ্রিক সুবিধা আমরা পাব বলে মনে করছি।"
Conclusion:
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.