কলকাতা ৩ ডিসেম্বর : আপাতত বকেয়া-ফি না দিতে পারলেও ছাত্রছাত্রীদের অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ করা ও পরীক্ষায় বসা থেকে বঞ্চিত করা চলবে না। বেসরকারি স্কুলগুলির ফি সংক্রান্ত মামলায় নির্দেশ হাইকোর্টের (Calcutta High Court allow Student for exam) । বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় ও বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যর ডিভিশন বেঞ্চ আজ এই নির্দেশ দিয়েছেন। পাশাপাশি আপাতত বকেয়া বেতন মেটাতে না পারলেও যেন কোনও ছাত্রছাত্রীকে স্কুল থেকে বহিষ্কার না করা হয়, সেই নির্দেশও দিয়েছেন বিচারপতিরা। উল্লেখ্য, গত অক্টোবর মাসে বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ বেশ কয়েকটি ভাগে সব ছাত্রছাত্রীকেই ১০০% ফি মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। পাশাপাশি বকেয়া বেতন মেটাতে না পারলেও অনলাইনে পড়াশোনা ও পরীক্ষায় বসার ক্ষেত্রে যেন স্কুলগুলি বাধার সৃষ্টি না করে সেই নির্দেশ দিয়েছিলেন। সেই নির্দেশই কার্যত মেনে চলার কথা বলল আদালত।
আজও অভিভাবকদের তরফে জানানো হয়, অনেক স্কুলের অধ্যক্ষ রীতিমতো হুমকি দিচ্ছেন ফি সংক্রান্ত বিষয়ে। বকেয়া ফি না মেটাতে পারলে অধ্যক্ষ যা সিদ্ধান্ত নেবেন তা মানতে হবে বলে ধমক দিচ্ছেন। আদালত নয়, তিনিই শেষ কথা বলে এক স্কুলের অধ্যক্ষ হুমকি দিয়েছেন অভিভাবকদের বলে অভিযোগ করা হয়। পাশাপাশি অ্যাডামাস স্কুলের তরফে আদালতে অভিযোগ জানানো হয়, অনেক ছাত্রছাত্রীর অভিভাবকরা বিগত দু‘বছর ধরে ফি দিচ্ছেন না। কিছু ছাত্রছাত্রীকে অনলাইন পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি। সেই কারণে বাচ্চাদের হেনস্থা করা হচ্ছে বলে রাজ্যের মহিলা ও শিশু সুরক্ষা কমিশনে অভিযোগ জানিয়েছেন অভিভাবকরা। থানাতেও অভিযোগ করা হয়েছে। পুলিশ স্কুলের অধ্যক্ষকে বারে বারে ডেকে সমস্যার সমাধান করছেন। শিশু সুরক্ষা কমিশন নির্দেশ দিয়েছে, বকেয়া বেতন না দিতে পারলে আপাতত যেন কোনও পদক্ষেপ না করা হয়। কিন্তু এই ব্যাপারে হাইকোর্টের নির্দেশ আপাতত স্কুলের বিরুদ্ধে আদালতের অনুমতি ছাড়া কোনও এফআইআর বা অন্য কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না।
আরও পড়ুন: প্রার্থীপদ প্রত্যাহার করে তৃণমূলকে স্বস্তি দিলেন রতন মালাকার
অক্টোবর মাসে কলকাতা হাইকোর্ট ভাগে ভাগে ১০০% ফি মিটিয়ে দেওয়ার যে নির্দেশ দিয়েছিল সেই নির্দেশের বিরুদ্ধে অভিভাবকরা ইতিমধ্যেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন। সুপ্রিম কোর্টে মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে। আগামী সপ্তাহে শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে সেই মামলার। সেই কারণে শীর্ষ আদালত কি নির্দেশ দেয় সেটা দেখে হাইকোর্ট পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে বলে জানিয়েছে ডিভিশন বেঞ্চ। ১৭ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। আজ বিভিন্ন স্কুলের তরফে ও অভিভাবকদের তরফে যে হলফনামা আদালতে জমা পড়েছে, পরবর্তী শুনানিতে সবগুলিই বিবেচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতি।