কলকাতা, 30 ডিসেম্বর : জারি রাজ্যপাল-শিক্ষামন্ত্রী তরজা । তবে, এবার টুইটারে নয় । একেবারে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শিক্ষামন্ত্রীর টুইটের জবাব দিলেন রাজ্যপাল । বললেন, "মুখ্যমন্ত্রী ও তিনি একই অবস্থানে রয়েছেন । হয়তো সেটা বুঝতে শিক্ষামন্ত্রীর সময় লাগতে পারে ।"
28 ডিসেম্বর থেকে টুইটারে রাজ্যপাল ও শিক্ষামন্ত্রীর মধ্যে একপ্রকার যুদ্ধ চলছিল বলা যেতে পারে । 28 ডিসেম্বর রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় একটি টুইট করেন । সেখানে তাঁর পাঠানো চিঠির উত্তরে মুখ্যমন্ত্রী 26 ডিসেম্বর তাঁকে যে চিঠি পাঠিয়েছিলেন তার ছবিও দিয়েছিলেন তিনি । সেই টুইটের পরদিনই শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় রাজ্যপালকে টুইট করে উত্তর দেন । তিনটি টুইটে রাজ্যপালকে দেওয়া চিঠি ও স্কুল শিক্ষা এবং উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সাফল্যের খতিয়ানের রিপোর্টের ছবিও দেন শিক্ষামন্ত্রী । শিক্ষামন্ত্রীর টুইট করার ঘন্টাখানেকের মধ্যেই রাজ্যপাল টুইট করে বলেন, "এটা টিট পর ট্যাটের সময় নয়।" সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে গতকালই এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, "ইট খেলে পাটকেল মারব এই শিক্ষা আমাদের নেই ।" আজ আবার শিক্ষামন্ত্রীকে কটাক্ষ করে জল্পনা বাড়িয়ে দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় ।
আরও পড়ুন : সংঘাত জারি, পালটা টুইটে রাজ্যপালকে জবাব শিক্ষামন্ত্রীর
আজ সকালে ICCR-এ একটি অনুষ্ঠানে গেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড় । সেখানে তাঁর সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীর টুইট যুদ্ধ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "আমাদের বিতর্ক থেকে দূরে থাকা উচিত । আমাদের আশা নিয়ে, ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে আগে তাকানো উচিত । শিক্ষা জগতে যা কিছু হচ্ছিল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যে অশান্তির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, তাতে আমি চিন্তিত ছিলাম, কষ্টে ছিলাম, দুঃখে ছিলাম । 25 ডিসেম্বরে আমি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে আমার কষ্টের কথা জানাই । আমি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীকে লিখি যে, আমি আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিতে দৃষ্টি না দিলে আগামী প্রজন্মকে আমরা নীচের দিকে নিয়ে যাব । এগুলো আমাদের জন্য ঠিক নয় । 24 ঘন্টার মধ্যে মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী আমায় চিঠি লেখেন । এত বড় পদক্ষেপ নিয়েছেন উনি যে আমরা একই অবস্থানে চলে এলাম । উনি বলেন, উচ্চশিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী এই বিষয়গুলো নিয়ে আপনার সঙ্গে আলোচনা করবেন । আমি এটাকে অনেক বড় পদক্ষেপ বলে মনে করি । এর পরিণাম অনেক ভালো হবে । এটা বুঝতে হয়তো মন্ত্রী মহোদয়ের সময় লাগতে পারে ৷ মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো চিঠি ওঁকে বেশ কয়েকবার পড়তে হতে পারে ।"
তিনি আরও বলেন, "নেগেটিভে পড়ে থাকলে দেখতে থাকবেন এটা কে করল, ওটা কে করল । কিন্তু, আগে এগোবে না । ব্যক্তিদের মধ্যে বিবাদ হতে পারে । দুটি সংস্থার মধ্যে বিবাদ হতে পারে না । আমি সাংবিধানিক প্রধান, মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী প্রশাসনিক প্রধান । আমরা দুজনই নিজেদের সীমা বুঝি, নিজেদের কর্তব্য বুঝি । উনি (শিক্ষামন্ত্রী) বুঝতে পারছেন না যে এটা লড়াই নয় । এটা না টুইটার যুদ্ধ, না টুইটার দঙ্গল ।"