কলকাতা, 17 সেপ্টেম্বর : উত্তর দিনাজপুরে সংখ্যালঘু এবং অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য চালু সরকারি স্কলারশিপের টাকা তুলে নিচ্ছে অসাধু চক্র ৷ এ নিয়ে এবার তদন্তের নির্দেশ কলকাতা হাইকোর্ট ৷ ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ আজ এই নির্দেশ দিয়েছে ৷
সংখ্যালঘু কোটা ও অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণির জন্য সরকার স্কলারশিপ দেয় ৷ অভিযোগ, সেই স্কলারশিপে নাম ভাড়িয়ে ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি করে টাকা তুলে নিচ্ছে অসাধুচক্রের সঙ্গে জড়িত বেশ কিছু লোকজন ৷ এর পিছনে বড়সড় চক্র চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ মামলাকারীরা আরটিআই করে জানতে পেরেছেন, শুধুমাত্র উত্তর দিনাজপুরের করণদিঘি ব্লকে 9 জনের খোঁজ পাওয়া গেছে ৷ এরা সবাই ওই অসাধু চক্রের সঙ্গে যুক্ত বলে অভিযোগ ৷ এনিয়ে পুলিশে অভিযোগ জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ যার পরেই কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন মীর সেলিম-সহ বহু ছাত্রছাত্রী ৷ ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ আগামী 24 নভেম্বরের মধ্যে উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসককে এ নিয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ৷
আরও পড়ুন : Chandana Bauri : চন্দনা বাউরির বিরুদ্ধে এফআইআরে আট সপ্তাহের স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের
মামলাকারীদের তরফে আইনজীবী শুভ্রপ্রকাশ লাহিড়ী ও হাবিবুর রহমান বলেন, ‘‘কর্তৃপক্ষের ইন্ধন ছাড়া এটা সম্ভব নয় ৷ ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি করে এটা করা হচ্ছে ৷ এর পিছনে কাজ করছে একটা বড় চক্র ৷ লক্ষ লক্ষ টাকা জালিয়াতি হয়েছে ৷ গোটা দেশেই এই চক্র সক্রিয় ৷’’
আরও পড়ুন : Calcutta High Court : রঘুনাথপুরে ওয়েস্ট বেঙ্গল পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশনের কাজে স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের
এ ব্যাপারে রাজ্যের তরফে আইনজীবী তপন মুখোপাধ্যায় জানান, জেলা পুলিশ সুপারকে ইতিমধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ আদালতকে তিনি এই ব্যাপারে আরও প্রয়োজনীয় নির্দেশ দিতে আর্জি জানান ৷ কিন্তু ক্ষুব্ধ ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল বলেন, ‘‘আপনারা সবসময় কেন আদালতের দিকে তাকিয়ে থাকেন ? আপনারা নিজে বিষয়টি তদন্ত করুন ৷ তদন্ত করে রিপোর্ট দিন ৷ তার পর আদালত যা ব্যবস্থা নেওয়ার নেবে ৷’’
আরও পড়ুন : Manik Bhattacharya : স্বস্তি প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতির, আপাতত দিতে হবে না জরিমানার টাকা
উল্লেখ্য সংখ্যালঘু এবং অন্যান্য পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মেধাবী ছেলে-মেয়েদের শিক্ষাক্ষেত্রে নানারকম স্কলারশিপ দেওয়া হয় সরকারের তরফে ৷ পড়াশোনা, কলেজ ও হোস্টেল ফি বাবদ হাজার হাজার টাকা পায় পড়ুয়ারা ৷ ভুয়ো পরিচয়পত্র বানিয়ে সেই টাকা তোলা হচ্ছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে ৷ এর সঙ্গে প্রশাসনের লোকজন যুক্ত থাকতে পারে বলে মনে করেন মামলাকারীরা ৷ বিহার, ঝাড়খণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, পঞ্জাব, অসম-সহ দেশের বহু রাজ্যে এই চক্র এতদিন সক্রিয় ছিল ৷ কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গে এই প্রতারণা চক্রের কথা এতদিন সেভাবে শোনা যায়নি ৷ এবার ওই চক্র বাংলাতেও ঘাঁটি গেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে ৷