কলকাতা, 9 সেপ্টেম্বর: 2024 লোকসভা নির্বাচনে (2024 Lok Sabha Election) বিজেপি'কে হারাতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিকল্পিত বিরোধী জোট অংকে কতটা গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছেন নীতীশ কুমার-অখিলেশ যাদব-হেমন্ত সোরেনরা ? শরদ পাওয়ার, অরবিন্দ কেজরিওয়াল কি ব্রাত্য মমতার কাছে ? বিষয়টি নিয়ে জল্পনা চলছে রাজনৈতিকমহলে ৷
মহারাষ্ট্রে শিবসেনা এবং এনসিপি জোট দুর্বল হতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) মুখ থেকে বাদ পড়ে শরদ পাওয়ারের নাম । উলটোদিকে বিজেপি'র হাত ছেড়ে লালুপুত্রের হাত ধরে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হয়ে সে রাজ্যের নির্ণায়ক শক্তি হয়েছেন নীতীশ কুমার । মনে করা হচ্ছে সে কারণেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখে জোট সমীকরণে জেডিইউ প্রধানের নাম ।
2024 এর লোকসভা নির্বাচনের আগে এখনও অনেকটা পথ চলা বাকি ৷ তবে এই নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূল কংগ্রেসের অংক কষা কিন্তু শুরু হয়ে গিয়েছে এখন থেকেই । বৃহস্পতিবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে তৃণমূল নেত্রীর মুখে শোনা গিয়েছে জোট প্রসঙ্গ ৷ সেখানে তাঁর মুখে তাৎপর্যপূর্ণভাবে উঠে এসেছে নীতীশ, অখিলেশ ও হেমন্ত সোরেনের নাম (formation of opposition alliance) ৷
আরও পড়ুন: শুভেন্দু-সুকান্ত-দিলীপের নেতৃত্বে তিন দিক থেকে এগোবে মিছিল, নবান্নকে ঘিরতে পরিকল্পনা বিজেপি'র
এই প্রেক্ষিতে খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে 2024 এর জন্য মমতার জোট অংকে কি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হতে চলেছেন এরা ? অন্যদিকে, শরদ পাওয়ার বা অরবিন্দ কেজরিওয়ালদের সঙ্গে তৃণমূল সুপ্রিমোর (TMC Supremo Mamata Banerjee) সখ্যতা দেখা গেলেও এই ভোট অংক থেকে কি তারা বাদ ! সাম্প্রতিক অতীতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল ন্যাশনালিস্ট কংগ্রেস পার্টির (এনসিপি) সুপ্রিমো শরদ পাওয়ারের। এরপর উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময়ও আর আগের মতো সক্রিয়ভাবে এই দুই নেতাকে ময়দানে দেখা যায়নি । রাজনৈতিক মহলের অনেকেই মনে করছেন, শরদ পাওয়ারের সঙ্গে দূরত্বের কারণে এবং এককভাবে কংগ্রেস সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে মমতার নির্দেশে তৃণমূল রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোটাভুটি থেকে বিরত থেকেছে ।
অন্যদিকে, অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বরাবরই সুসম্পর্ক থাকলেও সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে পরস্পরকে দূরে থাকতেই দেখা গিয়েছে । আর সেই জায়গা থেকে রাজনৈতিক মহলের একাংশ মনে করছে আগামী লোকসভা নির্বাচনের পূর্ববর্তী জোটে, অখিলেশ, নীতীশ বা হেমন্তের দেখা গেলেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল বা শরদ পাওয়ারদের নাও দেখা যেতে পারে (Mamata Banerjee and opposition alliance) ।
আরও পড়ুন: রাহুলের টি-শার্টের পালটা মোদির 10 লক্ষের স্যুট নিয়ে ফের কটাক্ষ কংগ্রেসের
এই প্রসঙ্গে বিশিষ্ট রাজনৈতিক বিশ্লেষক তথা রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক রাজু রায় বলেন, "রাজনীতি বরাবরই আনপ্রেডিক্টটেবল। এখানে চিরন্তন বন্ধু এবং চিরন্তন শত্রু বলে কিছু হয় না । সবকিছুই নির্ধারিত হয় রাজনৈতিক প্রয়োজনের নিরিখে । অতএব এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই । তবে আমার মনে হয় এখনও লোকসভা নির্বাচনের অনেকটা দেরি আছে । জাতীয় ক্ষেত্রে জোট নিয়ে ভাবনা বা কোনও সমীকরণ তৈরি হওয়ার জন্য এখনও অনেকটা সময় বাকি ।" তাঁর মতে, জাতীয় রাজনীতিতে, কংগ্রেস গুরুত্বপূর্ণ শক্তি । ভোট যত এগিয়ে আসবে কংগ্রেসকে নিয়ে তৃণমূলের সমীকরণও স্পষ্ট হবে ।
অন্যদিকে, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ তথা রাজনৈতিক বিশ্লেষক রাজা গোপাল ধর চক্রবর্তী বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার যে কথা বলেছেন এটা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ । এক্ষেত্রে জাতীয় রাজনীতির ভোট অংক অনেকটা স্পষ্ট হচ্ছে । তবে এটাও পুরোপুরি ঠিক নয়, যে এই কয়েকটা শক্তি এক জায়গায় হয়ে গেলেই বিজেপিকে হারিয়ে দেওয়ার সহজ হবে ।"