কলকাতা, 12 অগস্ট: এ বছর বৃষ্টিপাত (Rain in South Bengal) সেভাবে না হওয়ায় দক্ষিণবঙ্গে আমন ধান চাষ ব্যাপক ভাবে মার খাচ্ছিল (Nabanna)। কিন্তু সাম্প্রতিক কয়েক দিনের বৃষ্টি দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায় সেই চিত্রে কিছুটা হলেও বদল আনতে সক্ষম হয়েছে । এ বছরের শুরু থেকেই বর্ষার খামখেয়ালিপনা ভাবাচ্ছিল দক্ষিণবঙ্গকে ৷ জুলাইয়ের শেষেও দক্ষিণবঙ্গের অধিকাংশ জেলাগুলিতে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি ছিল 40% এর কাছাকাছি । এই অবস্থায় চাষীদের যখন মাথায় হাত ঠিক সেসময় অনেকটাই আশীর্বাদের মতো হয়ে এসেছে গত এক সপ্তাহ ধরে চলা নিম্নচাপ । যেখানে নতুন করে চারা রোপনের জন্য পর্যাপ্ত জলের যোগানই ছিল না, সেখানে এই নিম্নচাপের বৃষ্টি কৃষকদের মুখে হাসি ফোটাতে চলেছে (Aman rice cultivation)।
এ প্রসঙ্গে রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলা হলে তিনি বলেন, "গত এক সপ্তাহ যাবৎ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ভালোই বৃষ্টিপাত হয়েছে । যদিও এই বৃষ্টিপাত চাহিদার তুলনায় পর্যাপ্ত নয় ৷ তবুও যা বৃষ্টিপাত হয়েছে তাকে মন্দের ভালো হিসাবেই দেখছে চাষিরা । 15 অগস্টের মধ্যে ধানের চারা রোপন না করলে যেখানে বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, বড় ক্ষতির মুখে পড়তেন কৃষকেরা । বর্তমানে বিভিন্ন জেলা থেকে যে রিপোর্ট আমাদের কাছে আসছে তাতে 50 শতাংশ জমিতে ধান রোপন হয়ে গিয়েছে । এরকম চলতে থাকলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যে বাকি জমিতেও ধান রোপন করা সম্ভব হবে ।"
তিনি আরও জানান, বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বর্ধমান, হুগলি, মুর্শিদাবাদ, নদিয়ার মতো জেলাগুলিতে এ বছর বর্ষার শুরু থেকেই বৃষ্টিপাত একটু কম হয়েছিল । সেখানে মূলত সেচের জলের উপর নির্ভর করেই চাষাবাদ করতে হচ্ছিল কৃষকদের । তবে দক্ষিণবঙ্গের মুর্শিদাবাদ ছাড়া বাকি জেলাগুলিতে গত কয়েকদিনে বৃষ্টির ঘাটতি মিটেছে অনেকটাই ।
আরও পড়ুন: বৃষ্টির ঘাটতিতে আমন চাষ নিয়ে উদ্বিগ্ন নবান্ন, সেচ দফতরকে প্রস্তুত থাকার নির্দেশ
মৌসম ভবনের তথ্য বলছে, গত কয়েকদিনে পুরুলিয়ায় বৃষ্টি হয়েছে 91 মিলিমিটার, বাঁকুড়ায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ 85.4 মিলিমিটার, হুগলিতে 74 মিলিমিটার, উত্তর চব্বিশ পরগনায় 55.6 মিলিমিটার, দুই বর্ধমান, ঝাড়গ্রাম, পশ্চিম মেদিনীপুর এবং দক্ষিণ 24 পরগনায় 30 মিলিমিটারের মতো বৃষ্টিপাত হয়েছে । তবে এর মধ্যে একমাত্র নদিয়া জেলাতেই 30 মিলিমিটারের কম বৃষ্টিপাত হয়েছে । বীরভূম এবং মুর্শিদাবাদে ও প্রয়োজনীয় বৃষ্টিপাত হয়নি তাই এই কয়েকটি জেলাতে বৃষ্টিপাতের ঘাটতি রয়েছে ।
কৃষি দফতরের বিশেষজ্ঞেরা মনে করছেন যে, যে সব জমিতে 30 থেকে 40 মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, সেখানে ভালোভাবেই চারা রোপন করা যাবে । অন্যদিকে, যেখানে বৃষ্টি হয়নি সেই মুর্শিদাবাদ এবং বীরভূমে কিছুটা পরিমাণেও কৃষকদের অস্থায়ী সেচের উপর নির্ভর করতে হবে ।