ETV Bharat / city

শোভন-বৈশাখী, নুসরতদের নিয়ে কি বেশি ভাবছে আমবাঙালি ? - নুসরত জাহান

ইদানীংকালে সংবাদ শিরোনামে রয়েছেন শোভন-বৈশাখী এবং নুসরত জাহান ৷ আপাতত এঁরা সকলেই সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন ৷ আর তা নিয়েই কাটাছেড়া শুরু করেছে আমবাঙালি ৷ অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, এই বিখ্যাতদের নৈতিকতা নিয়ে ৷ যদিও মনোবিদদের একাংশ বলছেন, সেলেব হোন, বা অন্য কেউ ৷ আসলে অন্য়ের ব্যক্তিগত জীবনে নাক গলানোটাই অনৈতিক ৷

expert opinion on Sovan-Baishakhi and Nusrat-Nikhil relation
শোভন-বৈশাখী, নুসরতদের নিয়ে কি বেশি ভাবছে আমবাঙালি ?
author img

By

Published : Jun 18, 2021, 7:00 PM IST

কলকাতা, 18 জুন : শোভন-বৈশাখী কিংবা নুসরত-নিখিল, কিছুটা ছক ভাঙা এই সম্পর্কগুলো নিয়ে কি একটু বেশিই ভাবছে আমবাঙালি ? নাক গলাচ্ছে সেলেবদের একান্ত ব্যক্তিগত পরিসরে ? এই প্রশ্ন উঠছেই ৷ কারণ, শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ের (Sovan Chatterjee) তাঁর বান্ধবী বৈশাখীকে (Baishakhi Banerjee) নিজের সম্পত্তি দান করা হোক, কিংবা নিখিল জৈনের (Nikhil Jain) সঙ্গে নুসরত জাহানের (Nusrat Jahan) ‘লিভ-ইন’, ঘটনা প্রবাহের বাস্তব চরিত্রগুলো নিয়ে কাটাছেড়া শুরু হয়েছে নানা মহলে ৷ উঠছে নৈতিকতার প্রশ্নও ৷ আর এখানেই আপত্তি তুলছেন মনোবিদদের একাংশ ৷ তাঁদের মতে, এভাবে কেউই অন্য কারও ব্য়ক্তিগত পরিসরে নাক গলাতে পারে না ৷ কারণ সেটাও অনৈতিক ৷

সেলেবদের জীবন আর পাঁচজনের থেকে আলাদা ৷ অন্তত এমন একটা ধারণাতেই অভ্যস্ত অধিকাংশ আমআদমি ৷ বিখ্য়াতরাও যে রক্ত-মাংসের মানুষ, এটা বহু ক্ষেত্রেই ভুলে যাই আমরা ৷ বদলে গ্ল্য়ামার, অর্থ, প্রতিপত্তি আর কেচ্ছার মধ্যেই তাঁদের বেঁধে ফেলতে ভালোবাসি ৷ আর তাই পান থেকে চুন খসলেই সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় ৷ চায়ের আসরে মুচমুচে আলোচনার রসদ বাড়ে ৷

expert opinion on Sovan-Baishakhi and Nusrat-Nikhil relation
নিখিল জৈনের সঙ্গে নুসরত জাহান ৷

আরও পড়ুন : Sovan-Ratna : শোভনকে ‘পাগল’ প্রমাণ করতে পারলে সম্পত্তি ফিরে পাবেন রত্না

শোভন-বৈশাখী বা নুসরত-নিখিল পর্বের মধ্যেও যেন সেই প্রবণতাই ধরা দিচ্ছে ৷ কারও কারও যুক্তি, এঁরা যেহেতু সমাজের ওপরতলার মানুষ, তাই এঁদের এমন ‘বেহিসাবি’ আচরণে প্রভাবিত হবেন বাকিরা ৷ প্রশ্ন উঠছে, এঁদের দেখে কী শিখবেন মাটির কাছাকাছি থাকা লোকজন ? সব মিলিয়ে কেমন যেন একটা গেল গেল রব ! বিশেষজ্ঞরা কিন্তু এত ভাবনা, চিন্তার মধ্যে যেতে রাজি নন ৷

মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের মতে, একজন সাধারণ মানুষ প্রেম করার আগে কখনও ভেবে দেখেন না, শেষ কবে কোন সেলিব্রিটি কার প্রেমে পড়েছিলেন ৷ তিনি প্রেম করেন, কারণ তাঁর কাউকে ভাল লাগে ৷ তাই কোন সেলিব্রিটি কতবার প্রেম করলেন, বা প্রেম করতে গিয়ে সমাজের প্রথার উল্টো দিকে হাঁটলেন কিনা, সেই আলোচনা অপ্রাসঙ্গিক বলেই মনে করেন অনুত্তমা ৷

সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসে অভিনেত্রী সাংসদ নুসরত জাহানের গর্ভবতী হওয়ার খবর ৷ তাঁর ভাবী সন্তানের বাবা কে ? আপাতত এই প্রশ্নেই বুঁদ নেট নাগরিক থেকে খবরের কাগজের আমপাঠক ৷ এই প্রেক্ষিতে মনোবিদদের পাল্টা প্রশ্ন, এমন প্রসঙ্গ উঠছে কেন ? কারণ, কে, কোন সম্পর্ককে তাঁর জীবনে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দেবেন, সেটা তো একেবারেই তাঁর নিজের সিদ্ধান্ত ৷ সেটা বিবাহিত সম্পর্ক যেমন হতে পারে, তেমনই অন্য কোনও সম্পর্কও হতে পারে ৷

আরও পড়ুন : Ratna-Sovan-Baishakhi : রত্নার ‘মার’ থেকে বাঁচতে পুলিশ কমিশনারকে চিঠি বৈশাখীর

শোভন-বৈশাখীর ক্ষেত্রেও একই কথা বলছেন অনুত্তমা ৷ তাঁর মতে, শোভন কাকে তাঁর সম্পত্তি দেবেন, বা কাকে দেবেন না, মানুষ বা ব্যক্তি হিসাবে সেটা নির্ধারণ করার অধিকার একমাত্র তাঁরই ৷ আইনি জটিলতা বা নিয়ম-কানুন অন্য বিষয় ৷ কিন্তু মানুষের মনকে তো অন্য কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না ৷

কথায় বলে, ‘‘আঙুর ফল খেতে না পেলে টক লাগে’’ ৷ অনুত্তমা বলছেন, আমাদের অনেকের জন্যই এই প্রবাদ বাক্য খেটে যায় ৷ আমরা যারা খুব সাধারণ, তাঁদের নাগাল সীমিত ৷ তাই স্বপ্ন অনেক থাকলেও সাধ্যে সবকিছু কুলোয় না ৷ কিন্তু একজন প্রতিষ্ঠিত বা সমাজের উঁচুতলার মানুষ সেসব অনায়াসে অর্জন করতে পারেন ৷ কোথাও না কোথাও এই তারতম্য আমাদের হজম হয় না ৷ তাই অন্য কেউ যখন অকপটে তাঁর লিভ-ইনের কথা বলেন, বান্ধবীকে নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দেন, তখন আমাদের চোখে সেসব অনৈতিক ঠেকে ৷

আরও পড়ুন : Nusrat Jahan: "বীজটা কার? কবে রোপণ করা হল ?" ট্রোলের শিকার নুসরত

সবশেষে বলতে হয়, বিয়ে জিনিসটা নিয়ে আজও আমাদের মধ্যে অনেক বাধ্যবাধকতা, সীমাবদ্ধতা রয়েছে ৷ চিরাচরিত রীতি ভাঙা সহজ নয় ৷ তা যে সকলের জন্য একান্ত জরুরি, সেটাও নয় ৷ কিন্তু, বদল, ব্য়তিক্রম তো থাকবেই ৷ বাঙালি সমাজও তার থেকে আলাদা কিছু নয় ৷ তাই এমন অনেক কিছু আমরা দেখি, যা আগে দেখিনি ৷ কিন্তু, তার মানেই এই নয় যে, সেটা গর্হিত ৷ এই মানসিকতা আসলে প্রাচীনত্বের প্রতি আনুগত্য, হয়তো বা কিছুটা ঐতিহ্য ভাঙার ভয়ও ৷ কিছুক্ষণের জন্য এসব দূরে রেখে যদি ভাবা যায়, তাহলে বোঝা যাবে, সম্পর্কের এমন টানাপোড়েন মোটেও খুব উদ্ভট কিছু নয় ৷

কলকাতা, 18 জুন : শোভন-বৈশাখী কিংবা নুসরত-নিখিল, কিছুটা ছক ভাঙা এই সম্পর্কগুলো নিয়ে কি একটু বেশিই ভাবছে আমবাঙালি ? নাক গলাচ্ছে সেলেবদের একান্ত ব্যক্তিগত পরিসরে ? এই প্রশ্ন উঠছেই ৷ কারণ, শোভন চট্টোপাধ্য়ায়ের (Sovan Chatterjee) তাঁর বান্ধবী বৈশাখীকে (Baishakhi Banerjee) নিজের সম্পত্তি দান করা হোক, কিংবা নিখিল জৈনের (Nikhil Jain) সঙ্গে নুসরত জাহানের (Nusrat Jahan) ‘লিভ-ইন’, ঘটনা প্রবাহের বাস্তব চরিত্রগুলো নিয়ে কাটাছেড়া শুরু হয়েছে নানা মহলে ৷ উঠছে নৈতিকতার প্রশ্নও ৷ আর এখানেই আপত্তি তুলছেন মনোবিদদের একাংশ ৷ তাঁদের মতে, এভাবে কেউই অন্য কারও ব্য়ক্তিগত পরিসরে নাক গলাতে পারে না ৷ কারণ সেটাও অনৈতিক ৷

সেলেবদের জীবন আর পাঁচজনের থেকে আলাদা ৷ অন্তত এমন একটা ধারণাতেই অভ্যস্ত অধিকাংশ আমআদমি ৷ বিখ্য়াতরাও যে রক্ত-মাংসের মানুষ, এটা বহু ক্ষেত্রেই ভুলে যাই আমরা ৷ বদলে গ্ল্য়ামার, অর্থ, প্রতিপত্তি আর কেচ্ছার মধ্যেই তাঁদের বেঁধে ফেলতে ভালোবাসি ৷ আর তাই পান থেকে চুন খসলেই সমালোচনার ঝড় বয়ে যায় ৷ চায়ের আসরে মুচমুচে আলোচনার রসদ বাড়ে ৷

expert opinion on Sovan-Baishakhi and Nusrat-Nikhil relation
নিখিল জৈনের সঙ্গে নুসরত জাহান ৷

আরও পড়ুন : Sovan-Ratna : শোভনকে ‘পাগল’ প্রমাণ করতে পারলে সম্পত্তি ফিরে পাবেন রত্না

শোভন-বৈশাখী বা নুসরত-নিখিল পর্বের মধ্যেও যেন সেই প্রবণতাই ধরা দিচ্ছে ৷ কারও কারও যুক্তি, এঁরা যেহেতু সমাজের ওপরতলার মানুষ, তাই এঁদের এমন ‘বেহিসাবি’ আচরণে প্রভাবিত হবেন বাকিরা ৷ প্রশ্ন উঠছে, এঁদের দেখে কী শিখবেন মাটির কাছাকাছি থাকা লোকজন ? সব মিলিয়ে কেমন যেন একটা গেল গেল রব ! বিশেষজ্ঞরা কিন্তু এত ভাবনা, চিন্তার মধ্যে যেতে রাজি নন ৷

মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের মতে, একজন সাধারণ মানুষ প্রেম করার আগে কখনও ভেবে দেখেন না, শেষ কবে কোন সেলিব্রিটি কার প্রেমে পড়েছিলেন ৷ তিনি প্রেম করেন, কারণ তাঁর কাউকে ভাল লাগে ৷ তাই কোন সেলিব্রিটি কতবার প্রেম করলেন, বা প্রেম করতে গিয়ে সমাজের প্রথার উল্টো দিকে হাঁটলেন কিনা, সেই আলোচনা অপ্রাসঙ্গিক বলেই মনে করেন অনুত্তমা ৷

সম্প্রতি প্রকাশ্যে আসে অভিনেত্রী সাংসদ নুসরত জাহানের গর্ভবতী হওয়ার খবর ৷ তাঁর ভাবী সন্তানের বাবা কে ? আপাতত এই প্রশ্নেই বুঁদ নেট নাগরিক থেকে খবরের কাগজের আমপাঠক ৷ এই প্রেক্ষিতে মনোবিদদের পাল্টা প্রশ্ন, এমন প্রসঙ্গ উঠছে কেন ? কারণ, কে, কোন সম্পর্ককে তাঁর জীবনে সবথেকে বেশি গুরুত্ব দেবেন, সেটা তো একেবারেই তাঁর নিজের সিদ্ধান্ত ৷ সেটা বিবাহিত সম্পর্ক যেমন হতে পারে, তেমনই অন্য কোনও সম্পর্কও হতে পারে ৷

আরও পড়ুন : Ratna-Sovan-Baishakhi : রত্নার ‘মার’ থেকে বাঁচতে পুলিশ কমিশনারকে চিঠি বৈশাখীর

শোভন-বৈশাখীর ক্ষেত্রেও একই কথা বলছেন অনুত্তমা ৷ তাঁর মতে, শোভন কাকে তাঁর সম্পত্তি দেবেন, বা কাকে দেবেন না, মানুষ বা ব্যক্তি হিসাবে সেটা নির্ধারণ করার অধিকার একমাত্র তাঁরই ৷ আইনি জটিলতা বা নিয়ম-কানুন অন্য বিষয় ৷ কিন্তু মানুষের মনকে তো অন্য কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না ৷

কথায় বলে, ‘‘আঙুর ফল খেতে না পেলে টক লাগে’’ ৷ অনুত্তমা বলছেন, আমাদের অনেকের জন্যই এই প্রবাদ বাক্য খেটে যায় ৷ আমরা যারা খুব সাধারণ, তাঁদের নাগাল সীমিত ৷ তাই স্বপ্ন অনেক থাকলেও সাধ্যে সবকিছু কুলোয় না ৷ কিন্তু একজন প্রতিষ্ঠিত বা সমাজের উঁচুতলার মানুষ সেসব অনায়াসে অর্জন করতে পারেন ৷ কোথাও না কোথাও এই তারতম্য আমাদের হজম হয় না ৷ তাই অন্য কেউ যখন অকপটে তাঁর লিভ-ইনের কথা বলেন, বান্ধবীকে নিজের সর্বস্ব উজাড় করে দেন, তখন আমাদের চোখে সেসব অনৈতিক ঠেকে ৷

আরও পড়ুন : Nusrat Jahan: "বীজটা কার? কবে রোপণ করা হল ?" ট্রোলের শিকার নুসরত

সবশেষে বলতে হয়, বিয়ে জিনিসটা নিয়ে আজও আমাদের মধ্যে অনেক বাধ্যবাধকতা, সীমাবদ্ধতা রয়েছে ৷ চিরাচরিত রীতি ভাঙা সহজ নয় ৷ তা যে সকলের জন্য একান্ত জরুরি, সেটাও নয় ৷ কিন্তু, বদল, ব্য়তিক্রম তো থাকবেই ৷ বাঙালি সমাজও তার থেকে আলাদা কিছু নয় ৷ তাই এমন অনেক কিছু আমরা দেখি, যা আগে দেখিনি ৷ কিন্তু, তার মানেই এই নয় যে, সেটা গর্হিত ৷ এই মানসিকতা আসলে প্রাচীনত্বের প্রতি আনুগত্য, হয়তো বা কিছুটা ঐতিহ্য ভাঙার ভয়ও ৷ কিছুক্ষণের জন্য এসব দূরে রেখে যদি ভাবা যায়, তাহলে বোঝা যাবে, সম্পর্কের এমন টানাপোড়েন মোটেও খুব উদ্ভট কিছু নয় ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.