কলকাতা, 12 ফেব্রুয়ারি : সম্প্রতি আরও একবার তৃণমূল কংগ্রেসের সভানেত্রী নির্বাচিত হন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (TMC Chairperson Mamata Banerjee) ৷ তাঁর ওই পদটিকে বাদ দিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসে সব পদের অবলুপ্তি হয়ে গেল (except mamata all post of tmc dissolve) ৷
শনিবার বিকেলে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কালীঘাটে নিজের বাড়িতে বৈঠক ডেকেছিলেন ৷ সেখানেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে খবর ৷ তৃণমূল সূত্রে খবর, পরে মমতা ঠিক করবেন কে কোন পদ থাকবেন ৷
এর থেকে স্পষ্ট হল যে আপাতত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (TMC Leader Abhishek Banerjee) তৃণমূল সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক নন ৷ 2021-এর বিধানসভা নির্বাচনের সাফল্যের পর তাঁকে তৃণমূলের তরফে ওই পদে বসানো হয়েছিল ৷ কিন্তু সাম্প্রতিক কিছু টানাপোড়েনের জেরে তিনি ওই পদ ছেড়ে দিতে পারেন বলেও জল্পনা তৈরি হচ্ছিল ৷ শোনা যাচ্ছিল আগামী সোমবার বা মঙ্গলবার তিনি ওই পদ থেকে ইস্তফা দেবেন ৷
যদিও তার আগেই তৃণমূল নেত্রী নিজেই দলের শীর্ষস্তরের পদ থেকে সকলকে সরিয়ে দিয়ে বিতর্ক কিছুটা হলেও স্তিমিত করলেন ৷ আর তৈরি করলেন নতুন জল্পনার ৷ কারণ, এখন তৃণমূলের ওই পদগুলিতে কে কে জায়গা পাবেন, সেই অপেক্ষা শুরু হল রাজ্য রাজনীতিতে ৷
তবে এই নিয়ে দলের তরফে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে নারাজ ৷ এদিন বৈঠকের পর প্রথমে পার্থ চট্টোপাধ্যায় দলের 16 জন কর্মসমিতির সদস্যের নাম ঘোষণা করেন ৷ তিনি জানান, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আরও চার জনের নাম চূড়ান্ত করছেন ৷
পরে ফিরহাদ হাকিম পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করেন ৷ তিনি জানান, তৃণমূলের জাতীয় কর্মসমিতির সভানেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ এছাড়া ওই কর্মসমিতিতে থাকছেন আরও 19 জন ৷ তাঁরা হলেন, অমিত মিত্র, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডল, অরূপ বিশ্বাস, অসীমা পাত্র, বুলুচিক বরাইক, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সুব্রত বক্সি, পার্থ চট্টোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, গৌতম দেব, জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, কাকলি ঘোষ দস্তিদার, শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, রাজেশ ত্রিপাঠী, মলয় ঘটক, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, সুখেন্দুশেখর রায়, যশবন্ত সিনহা ৷
জাতীয় কর্মসমিতিতে অন্য রাজ্যের নেতা বলতে দু’জন রাজেশ ত্রিপাঠী ও যশবন্ত সিনহা ৷ আর বেশিরভাগ দলের বর্ষীয়ান নেতা ও সাংসদরা ৷ কিন্তু তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে নেই লোকসভার সাংসদ সৌগত রায় ও রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনের নাম ৷ সম্প্রতি অভিষেকের এক ব্যক্তি এক পদ নীতির সমর্থনে মুখ খুলেছিলেন সৌগত ৷ তাই কর্মসমিতিতে তাঁর ঠাঁই না পাওয়াকে অর্থবহ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷ পাশাপাশি অভিষেক ঘনিষ্ঠ কোনও নেতাকে কর্মসমিতিতে নেওয়া হয়নি ৷ দলের পুরনোদেরকেই কর্মসমিতিতে রাখা হয়েছে ৷
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, দীর্ঘদিনের কুশলী রাজনীতিক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পৌরনির্বাচনের সময় দলে বিতর্কে ইতি টানতে চেয়েছেন ৷ তাই তিনি শীর্ষস্তরের পদের অবলুপ্তি ঘটিয়েছেন ৷ কারণ, অভিষেক পদত্যাগ করলে ভোটের আবহে ভুল বার্তা যেত ৷ দলে বিভাজনও আড়াআড়ি হত ৷
নতুন পদে কারা আসবেন এবং তা নির্ধারণ করতে কি এক ব্যক্তি এক পদ নীতি অনুসরণ করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ? আপাতত সেই দিকেই তাকিয়ে রাজনৈতিক মহল ৷
আরও পড়ুন : TMC Party Meeting : ডামাডোল চলছেই তৃণমূলের অন্দরে, মমতার ডাকা বৈঠকের দিকে নজর রাজনৈতিক মহলের