কলকাতা, 24 মার্চ : বিপদে পড়েছিল কেরালা থেকে আসা প্রায় 40 জন অসমের শ্রমিক । খবর আসে ETV ভারতের কাছে । ETV ভারতের তরফে যোগাযোগ করা হয় লালবাজারে । কলকাতা পুলিশের সিনিয়র অফিসাররা আশ্বস্ত করেছিলেন । জানিয়েছিলেন, বিপদে পড়া অসমের শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াবেন । কথা রাখলেন কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দা প্রধান মুরলীধর শর্মা । রাতেই কেরালা থেকে আসা শ্রমিকদের উদ্ধার করে পুলিশ । তারপর তারা যাতে অসমের সীমান্তের কাছাকাছি পৌঁছে যেতে পারেন, সে বিষয়ে পদক্ষেপ করা হল । বিশেষ বাসে বিপদে পড়া শ্রমিকদের পাঠিয়ে দেওয়া হল শিলিগুড়ি । কলকাতা পুলিশের এই পদক্ষেপে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কেরালা থেকে আসা শ্রমিকরা । পাশাপাশি ধন্যবাদ জানিয়েছেন ETV ভারতকেও ।
কোরোনা সংক্রমিত রাজ্যগুলির মধ্যে কেরালা অন্যতম । আজ গোটা রাজ্যে লকডাউন ঘোষণা করেছে কেরালা সরকার । সে রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যা 104 । ফলে কেরালার বর্ডার সিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার । অন্যদিকে অসমে আগামীকাল সন্ধ্যা থেকে 31 মার্চ পর্যন্ত লকডাউনের ঘোষণা হয়েছে । এরই মধ্যে সমস্যায় পড়েছেন অনেকে । যারা রুজির টানে গিয়েছিলেন ভিন রাজ্যে । পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে বুঝতে পেরে গত সপ্তাহের শেষ দিকে নিজের রাজ্যে ফেরার চেষ্টা শুরু করেন অসমের 30-40 জন শ্রমিক । গত শনিবার রাতে তাঁরা পৌঁছান হাওড়া স্টেশনে । তারপর আর অসম যাওয়ার কোনও ট্রেন ছিল না ।
22 মার্চ ছিল জনতা কারফিউ । পূর্ব রেল এবং নর্থ ফ্রন্টিয়ার ডিভিশনের সমস্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল । তারপরই গতকাল ঘোষণা করা হয় ট্রেন চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ । এমনটা যে হতে পারে তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি অসমের চিরাগের শান্তিপুরের মনোরঞ্জন বর্মণ কিংবা রাজেশ্বর বর্মণরা । কে যেন বলেছিল মাঝেমধ্যে একটা আধটা ট্রেন চলছে । সেই শুনেই ছুটে আসেন শিয়ালদায় । তবে ট্রেন চলেনি । একরাশ হতাশা নিয়ে পেটের টানে ভিন রাজ্যে যাওয়া শ্রমিকরা বসেছিলেন শিয়ালদা স্টেশন চত্বরেই । সন্ধ্যার পর হঠাৎই লাঠি নিয়ে তেড়ে আসে RPF । মনোরঞ্জন বলেন, " শিয়ালদায় বসেছিলাম । আমরা বুঝতে পারিনি এমনটা হবে । শিয়ালদায় RPF ব্যাপক লাঠিচার্জ করল । যেখানে যাচ্ছি, মার খাচ্ছি । এখন আমরা হেঁটে মালদা যাব । পথে যদি মার খাই, মার খেয়েই প্রাণ দিয়ে দেব ।" যদিও লাঠিচার্জের বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চায়নি শিয়ালদা GRP কিংবা RPF ।
ETV ভারতের কাছে এই খবর পৌঁছাতেই দ্রুত যোগাযোগ করা হয় লালবাজারে । তখন অসমের শ্রমিকরা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সামনে । কী করা যায় তা দেখার আশ্বাস দেন লালবাজারের শীর্ষ কর্তারা । গোয়েন্দাপ্রধান মুরলীধর শর্মা জানান, শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াবে কলকাতা পুলিশ । তারপর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার সামনে থেকে উদ্ধার করা হয় ওই শ্রমিকদের । আগাগোড়া তাঁদের সঙ্গে ছিলেন হেয়ার স্ট্রিট থানার অফিসার । গভীর রাতে ধর্মতলা থেকে শিলিগুড়িগামী স্পেশাল বাসে তুলে দেওয়া হয় ওই শ্রমিকদের । দুপুর দু'টো নাগাদ তাঁরা পৌঁছান রায়গঞ্জে । পরে মনোরঞ্জন বলেন, "ETV ভারতকে ধন্যবাদ । আপনারা ছাড়া আমরা বড় সমস্যায় পড়ে যেতাম । ধন্যবাদ জানাই কলকাতা পুলিশকেও । "