কলকাতা, 14 ফেব্রুয়ারি : কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় রেকর্ড সময়ে চার্জশিট পেশ করল পুলিশ । মাত্র সাত দিনে সমস্ত তথ্যপ্রমাণ সহ চার্জশিট দেওয়া হয়েছে আলিপুর আদালতে । ধৃতদের বিরুদ্ধে 342, 366a, 506, 376d, 34 এবং POCSO অ্যাক্টের ছয় নম্বর ধারার চার্জ আনা হয়েছে । এই ঘটনায় ইতিমধ্যে সব অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ । নির্যাতিতার মেডিকেল পরীক্ষা হয়েছে । ঘটনাস্থানের ফরেনসিক পরীক্ষা হয়েছে । বিচারকের সামনে নির্যাতিতা গোপন জবানবন্দি দিয়েছে । পুরো ঘটনার যত CCTV ফুটেজ পাওয়া গেছে সেগুলি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে । তথ্যপ্রমাণ হিসেবে সেগুলি আদালতে পেশ করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর ।
পরিকল্পনা আগে থেকেই তৈরি হয়েছিল । সেভাবেই পর্ণশ্রী থেকে একবালপুরের ফ্ল্যাটটিতে নিয়ে আসা হয় ওই কিশোরীকে । ওই ঘরে আগে থেকেই মজুত ছিল মদ । কিশোরীকে সেখানে আনার পর তাকে খাওয়ানো হয় সেটা । তখন রাত প্রায় ন'টা । নেশাগ্রস্ত হয়ে গেলে তাঁর উপর শারীরিক অত্যাচার চালায় অভিযুক্তরা । 6 ফেব্রুয়ারি রাত 9 টা থেকে 7 ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সময়ের ঘটনা । স্কুলে যাতায়াতের সূত্র ধরেই অমরজিৎ চৌপাল ওরফে রাহুল এবং মনোজ শর্মা সঙ্গে আগে থেকেই পরিচিতি ছিল ওই কিশোরীর । রাহুলের বাড়ি মহেশতলা এলাকায় । মনোজ পর্ণশ্রী এলাকার বাসিন্দা । এই দুজনের সঙ্গেই সন্ধ্যায় বের হয় ওই কিশোরী । বাইক চালাচ্ছিল রাহুল । মাঝখানে বসেছিল ওই কিশোরী । তাকে সোজা নিয়ে যাওয়া হয় একবালপুরের 4/3/H/51 ভূকৈলাস রোডের ফ্ল্যাটটিতে ।
ওই ফ্ল্যাটটি সঞ্জয় মৃধার মায়ের। সঞ্জয় মায়ের সঙ্গে থাকে 21/1 ময়ূরভঞ্জ রোডে । ভূকৈলাশ রোডের ফ্ল্যাটটি ফাঁকাই থাকে । মায়ের কাছ থেকে ওই ফ্লাটের চাবি আগে থেকেই নিয়ে রেখেছিল সঞ্জয় ।ওই দিন সন্ধ্যা থেকেই একবালপুরের ফ্ল্যাটে হাজির ছিল বিকাশ মল্লিক, সঞ্জয় মৃধা এবং তাদের বন্ধু রাঁচির ঋত্বিক রাম । ওই কিশোরীকে নিয়ে রাত ন'টা নাগাদ ওই ফ্ল্যাটে পৌঁছায় রাহুল এবং মনোজ । অত্যাচারের সময় অবশ্য সঞ্জয় ওই ঘরে ছিল না বলে জেনেছে পুলিশ । পাশের একটি ঘরে বসে সে মদ্যপান করছিল বলে জানা গেছে জেরায়।
রাতভর চলে অত্যাচার । সকাল ন'টা নাগাদ হুঁশ ফেরে ওই কিশোরীর । তখন ওই ঘরে কেউ ছিল না । সে ওই ফ্ল্যাট থেকে বেরিয়ে চলে যায় পর্ণশ্রী থানায় । তখন রীতিমতো বিধ্বস্ত ছিল সে । কোনওরকমে ডিউটি অফিসারকে সব কথা জানায় । তারপর একে একে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয় ।