কলকাতা, 25 অগস্ট: বিজেপি-র বর্তমান রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar) সঙ্গে তাঁর পূর্বসূরি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) 'মতের অমিল' বহুবার প্রকাশ্যে এসেছে ৷ কিন্তু, এ বার তাঁদের দু'জনের গলাতেই শোনা গেল এক সুর ! ইস্যু, সুকান্ত মজুমদারের গত মঙ্গলবারের ফেসবুক পোস্ট ৷ 'বাঙালির স্বার্থেই সমগ্র বাঙালি জাতিকে একজোট হওয়ার' আহ্বান জানিয়েছিলেন বিজেপি-র বর্তমান রাজ্য সভাপতি ৷ তাঁর এই আবেদনকে সমর্থন জানালেন তাঁর পূর্বসূরি দিলীপ ঘোষ ৷
প্রতিদিনের মতোই বৃহস্পতিবারও নিউ টাউনের ইকো পার্কে প্রাতঃভ্রমণ করতে এসেছিলেন দিলীপ ৷ সেখান থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি ৷ একটি প্রশ্নের উত্তরে জানান, যদি কেন্দ্র থেকে নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) ও তাঁর নেতৃত্বাধীন সরকারকে উৎখাত করার জন্য ডান-বাম মনোভাবাপন্ন সকলে একজোট হতে পারেন, তাহলে রাজ্য থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সরকারকে (Mamata Banerjee Government) উপড়ে ফেলতে কেন সব দলের মানুষ রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে একজোট হতে পারবেন না !
আরও পড়ুন: বঙ্গ বিজেপিকে কি আদৌ গুরুত্ব দেয় দিল্লি, সুকান্তের পোস্টে প্রশ্ন অধীরের
প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার একটি ফেসবুক পোস্ট করেন সুকান্ত মজুমদার ৷ সেখানে তিনি লেখেন, "সময় এসেছে বিজেপি, তৃণমূল, সিপিএম, কংগ্রেস ভেদাভেদকে দূরে সরিয়ে রেখে বাংলার স্বার্থে, 10 কোটি বাঙালির স্বার্থে সকল শ্রেণির, সকল স্তরের মানুষকে একত্রিত হয়ে ভয়ের গ্যাস চেম্বার থেকে বেরিয়ে এসে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভুল নীতি, খামখেয়ালিপনা, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার এবং আয়না দেখানোর ৷ আজ না করতে পারলে ভবিষ্যতের কাছে আমাদের জবাব দেওয়ার মতো কোনও উত্তর থাকবে না ৷"
বৃহস্পতিবার সুকান্তর এই পোস্ট নিয়েই প্রশ্ন করা হয় দিলীপ ঘোষকে ৷ তার প্রেক্ষিতে তিনি বলেন, "যদি নরেন্দ্র মোদিকে হঠাতে ডান-বাম, সাদা-কালো-নীল এক হতে পারে, তাহলে বাংলার স্বার্থে, বাংলার ভবিষ্যতের স্বার্থে আমার সভাপতি যদি মানুষকে একজোট হওয়ার আহ্বান জানিয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে যাঁরা বাংলার শুভাকাঙ্ক্ষী, তাঁদের একসঙ্গে আসা উচিত ৷" দিলীপের বক্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়কে হঠাতে গেলে সকলকে একজোট হতেই হবে ৷ না হলে রাজ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়া দুর্নীতির শিকড় উপড়ে ফেলা যাবে না ! দিলীপের কথায়, "প্রয়োজনে আপনি আপনার ঝান্ডা নিয়ে আসুন, আপনার এজেন্ডা রাখুন ৷ কিন্তু, একসঙ্গে আসুন ৷"
সুকান্ত ও দিলীপের এই এক সুর স্বাভাবিকভাবেই নজর কেড়েছে রাজনৈতিক মহলের ৷ তাঁদের একাংশ মনে করছেন, সংগঠন নিয়ে সুকান্ত এবং দিলীপের মধ্যে বিস্তর মতভেদ রয়েছে ৷ আবার প্রকাশ্যে বিবৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রেও দুই বিজেপি নেতার মধ্যে তারতম্য দেখা যায় ৷ তবে, দলের অভ্য়ন্তরে কিছু বিষয়ে পারস্পরিক ভেদাভেদ থাকলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় ও তাঁর সরকারের বিরোধিতার প্রশ্ন তাঁরা যে এককাট্টা, সেটা বোঝাতেই রাজ্য সভাপতির সুরে সুর মিলিয়েছেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি তথা দলের জাতীয় সহ-সভাপতি ৷ প্রসঙ্গত, এর আগে সুকান্ত মজুমদারের এই পোস্ট নিয়ে ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী ৷ ফের একবার তৃণমূল-বিজেপি গোপন আঁতাঁতের অভিযোগ তুলেছিলেন তিনি ৷