কলকাতা, 2 সেপ্টেম্বর : ভোট পরবর্তী হিংসা (Post Poll Violence) নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) মামলা করেছে রাজ্য সরকার ৷ পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) সরকারের এই পদক্ষেপ নিয়ে কটাক্ষ করলেন বিজেপির (BJP) রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) ৷ তাঁর বক্তব্য, বাঁচার শেষ রাস্তা হিসাবে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে রাজ্য সরকার (West Bengal Government) ।
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে ভোট পরবর্তী হিংসার মামলার রায় দেয় কলকাতা হাইকোর্ট ৷ খুন, ধর্ষণ-সহ গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগগুলির ক্ষেত্রে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় আদালত ৷ কম গুরুত্বপূর্ণ অভিযোগগুলির ক্ষেত্রে তদন্তের জন্য একটি বিশেষ তদন্তকারী দল গঠন করা হয় ৷
আরও পড়ুন : Dilip Ghosh : রাজ্য সভাপতিকে না জানিয়েই বিজেপির বৈঠকের দিন স্থির ! দিলীপের বক্তব্য ঘিরে জল্পনা
আদালতের রায়ের পর তদন্তের কাজে নেমে পড়েছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী ব্যুরো ৷ সেই তদন্ত বেশ খানিকটা এগিয়ে যাওয়ার পর সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করল রাজ্য সরকার ৷ গতকাল, বুধবার সন্ধ্যায় প্রকাশ্যে এসেছে এই খবর ৷ তার পর বৃহস্পতিবার সকালে বঙ্গ-বিজেপির সভাপতি এই প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন ৷
দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘তৃণমূলও দাবি করেছে তাদের 16 জন মারা গিয়েছেন । 16 জন লোক মারা যাওয়া কি কম ব্যাপার ! কতজন মানুষ মরলে উনি স্বীকার করবেন ? আমাদের 50-60 কর্মী মারা গিয়েছেন ।’’
আরও পড়ুন : Lakshmi Bhandar Scheme : ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ ঘুম কেড়েছে সিপিএমের, বিরোধিতার প্রশ্নে বাড়ছে দ্বিধা
দিলীপের দাবি, আদালত সমস্ত তথ্য খতিয়ে দেখে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে (NHRC) তদন্ত করতে বলে ৷ পরে কমিশনের রিপোর্ট খতিয়ে দেখেই আদালত এই রায় দিয়েছে ৷ তাঁর মতে, ‘‘আমার মনে হয় পাঁচজন বিচারপতি মিলে যেখানে রায় দিয়েছেন হিংসা হয়েছে তার সুবিচার হওয়া উচিত । আমার মনে হয় না আর কোনও রাস্তা বাকি আছে ।’’
কিন্তু সিবিআই তদন্তে ভয় পেয়েই রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে পালটা মামলা করেছে বলে দিলীপ ঘোষের বক্তব্য ৷ তিনি বলেন, ‘‘যারা এতদিন বলত সিবিআই কোনও কাজেরই না, তারাই এখন সিবিআই-এর ভয় করছে । সিবিআই এখন মাঠে, ঘাটে, জঙ্গলে পৌঁছে যাচ্ছে ৷ এখন বুঝতে পারছে আর কিছু লুকিয়ে রাখা যাবে না । বাঁচার শেষ রাস্তা হিসাবে সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে ।’’
আরও পড়ুন : CM Mamata Banerjee: রান্নার গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিতে বিজেপি সরকারকে ধিক্কার জানিয়ে টুইট মুখ্যমন্ত্রীর
এছাড়া আরও একাধিক ইস্যুতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের সমালোচনায় সরব হয়েছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ৷ স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড (Student Credit Card) নিয়ে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘যার জমির দলিল নেই, যার এল আই সি (LIC) নেই, সে পড়তে পারবে না ?’’ পাশাপাশি ছাত্রদের ঋণের তহবিল রাজ্য সরকার কোথা থেকে জোগাড় করবে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন তিনি ৷
একই সঙ্গে তাঁর দাবি, করোনার চিকিৎসায় স্বাস্থ্যসাথী কার্ড কাজে লাগেনি ৷ তাই লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকাও বেশি দিন পাওয়া যাবে না বলে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি ৷ এই প্রসঙ্গে টেনে এনেছেন কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদি সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কথা ৷ দিলীপের দাবি, সেই প্রকল্পগুলি নিয়ে মানুষকে দৌড়ঝাঁপ করতে হয় না ৷ বরং বাড়ি বসেই উপভোক্তারা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে টাকা পেয়ে যান ৷
আরও পড়ুন : Sujan Chakraborty : বামফ্রন্ট আমলের শিল্পায়নকে নতুন মোড়কে পেশ করছেন মুখ্যমন্ত্রী, কটাক্ষ সুজনের
উল্লেখ্য, রান্নার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি নিয়ে গতকাল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) হস্তক্ষেপ চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন ‘‘মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আবেদন করতেই পারেন ।’’
এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী বুধবার দাবি করেন, এতদিন রাজ্য সামাজিক কাজে এক নম্বরে ছিল ৷ এবার শিল্পে এক নম্বর হবে । এই প্রসঙ্গে দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘সামাজিক কাজ বলতে ক্লাবকে টাকা দেওয়া । কয়েক হাজার কোটি টাকা বিলিয়ে দিলেন । করোনার সময় সেই ক্লাবকে দেখিনি, কোনও কাজে পাইনি । এই টাকাগুলো খেলাধূলায় লেগেছে নাকি তাস খেলায় লেগেছে নাকি পিকনিক হয়েছে !’’
আরও পড়ুন : Post Poll Violence : ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে সিবিআই তদন্ত আটকাতে সুপ্রিম কোর্টে মমতার সরকার
গত 10 বছরে বাংলার খেলাধূলার উন্নতিতে রাজ্য সরকার কী করেছে, সেই প্রশ্নও তুলেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি ৷ সঙ্গে যোগ করেছেন, ‘‘শুধু ক্লাবকে টাকা দিয়ে ক্যাডার তৈরি করেছেন ভোট পাওয়ার জন্য । যদি মনে হয় এটা সামাজিক কাজ, তাহলে সফল হয়েছেন ৷’’