কলকাতা, 2 সেপ্টেম্বর : BJP-র বিরুদ্ধে মাওবাদীদের কাজে লাগাতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি ৷ আজ এভাবেই তৃণমূল সুপ্রিমোকে আক্রমণ করলেন BJP-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ৷
লোকসভা ভোটের আগে সন্দেশখালিতে দুই BJP কর্মীকে হত্যা করা হয় । ঘটনায় নিখোঁজ আরও এক কর্মী ৷ হত্যাকারীদের ফাঁসি ও কর্মীদের খুনের CBI তদন্তের দাবিতে আজ থেকে শ্যামবাজার পাঁচ মাথার মোড়ে তিনদিনের অবস্থান কর্মসূচি শুরু করল BJP ৷ দিলীপ ঘোষ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন BJP নেতা সায়ন্তন বসু ৷
সভামঞ্চ থেকে দিলীপবাবু বলেন, "পুরুলিয়ার বলরামপুর ব্লকে তিনজন যুব-কর্মীকে হত্যা করেছে দুষ্কৃতীরা । অনেকে বলছে তাতে মাওবাদীদের হাত আছে । আজ বিরোধীদের আটকানোর জন্য পুলিশ বা গুন্ডা দিয়ে হচ্ছে না । মাওবাদীদের থেকেও সহযোগিতা নেওয়া হচ্ছে । আর BJP যখন জিতেছে, শক্তি সঞ্চয় করছে, তখন মুখ্যমন্ত্রী নিজে এবং মন্ত্রীমণ্ডলের লোকেরা প্রাক্তন মাওবাদীদের একত্রিত করার জন্য জঙ্গলমহলে বারে বারে যাচ্ছেন । আমার কাছে খবর আছে । মুখ্যমন্ত্রী চাইলে সমস্ত তথ্য দিয়ে দেব । তিনি নিজে গিয়ে মিটিং করেছেন ৷ কারণ গণতান্ত্রিকভাবে আমাদের আটকাতে পারছেন না । তাই আবার হত্যার রাজনীতি, আবার মাওবাদী রাজনীতি শুরু করতে চাইছেন ।" তিনি আরও বলেন, "আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে ৷ প্রমাণও রয়েছে ৷ মমতা ব্যানার্জি ও ওঁর নেতারা জঙ্গলমহলের প্রাক্তন মাওবাদীদের সঙ্গে বারবার বৈঠক করছেন ৷ তাঁদের আবার সক্রিয় করে আমাদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের প্রচেষ্টা করছেন ৷"
অসমে NRC-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হয়েছে । পশ্চিমবঙ্গেও NRC হবে বলে জানিয়ে রাখলেন দিলীপ ঘোষ । বলেন, "আগে অসমে হয়ে যাক ৷ তারপর বাংলারটা আমরা দেখব ৷" কিন্তু এরাজ্যে NRC-র প্রয়োজন কী ? দিলীপবাবু বলেন, "বাংলায় অনুপ্রবেশ বেশি হয়েছে ৷ এই অনুপ্রবেশকারীদের যতক্ষণ না চিহ্নিত করা হচ্ছে, বাংলার রাজনীতি, অর্থনীতি, প্রশাসন কোনও কিছুই সুরক্ষিত নয় ৷"
ব্যারাকপুরের ঘটনা নিয়ে এরাজ্যকে কাশ্মীরের সঙ্গে তুলনা করেন দিলীপবাবু ৷ বলেন, "একজন পুলিশ কমিশনার লাঠি ভাঙছেন রাস্তায় দাঁড়িয়ে । পিস্তল চালাচ্ছেন খোলাখুলি । আইন-শৃঙ্খলা কোথায় গেছে? কাশ্মীরে আমাদের সেনাদের এরকমভাবে গুলি চালাতে হত না । আজ কাশ্মীরের থেকেও খারাপ অবস্থা পশ্চিমবঙ্গের ব্যারাকপুরের । এখানে পার্টি করতে হলে একটাই পার্টি করতে হবে TMC ৷ অন্য কোনও পার্টি করলে বাঁচার অধিকার নেই । আপনাকে গুলি করে মারা হবে ৷ আপনাকে পিটিয়ে মারা হবে ৷ কেস দেওয়া হবে ৷ জেলে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে ।" তিনি আরও বলেন, "পশ্চিমবঙ্গের প্রশাসনিক ব্যবস্থা ধীরে ধীরে ভেঙে পড়ছে । বাঙালির জীবনে এত অধঃপতন, এত দুর্নীতি জীবনে দেখিনি । আজ আমি একটা পুজো উদ্বোধন করতে গেছিলাম সল্টলেকে । ওখানকার প্রাক্তন মেয়র, MLA, পুজোর প্রেসিডেন্ট সব্যসাচীবাবু বলছেন যে, কাশ্মীর শান্ত হয়ে গেল । অথচ বাংলা এখনও শান্ত হল না । কাশ্মীরের থেকেও পশ্চিমবঙ্গের অবস্থা খারাপ । এতদিন আমরা বলে এসেছিলাম । এখন ওঁর পার্টির লোকজন বলছেন । কাশ্মীরে বন্দুক-গুলি নেই । তাতে দিদির খুব কষ্ট হচ্ছে ৷ লোককে না কি ঘরের মধ্যে বন্দী করে রাখা হয়েছে । কিন্তু আপনি চোর, চিটিংবাজ, তোলাবাজ, কাটমানিখোরদের রাস্তায় ছেড়ে রেখেছেন । ভদ্রলোক রাস্তায় বের হতে পারছেন না । এই পশ্চিমবঙ্গ চাই না । লন্ডন, সিঙ্গাপুর, সুইৎজ়ারল্যান্ড বা গোয়া হল না, পুরো পশ্চিমবঙ্গ আজ কাশ্মীর হয়ে গেছে, পাকিস্তান হয়ে গেছে । উনি নাকি কথায় কথায় বলেন, আমরা বাইরের লোকদের নিয়ে এসেছি । কিন্তু বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারী এলে, মায়ানমার থেকে রোহিঙ্গারা এলে তারা কিন্তু ওঁর ভাই আর ভাইপো ! "