কলকাতা, 20 ডিসেম্বর : মেদিনীপুর কলেজ ময়দানের সভায় বিজেপি নেতা অমিত শাহ সাজানো মিথ্যা বলেছেন বলে অভিযোগ করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও'ব্রায়েন। রবিবার টুইটারের মাধ্যমে ডেরেক তুলে ধরেছেন অমিত শাহের ভাষণে থাকা "সাতটি সাজানো মিথ্যা"। তিনি একটি স্ক্রিনশট শেয়ার করেছেন । যার মাধ্যমে পুরো বিষয়টি স্পষ্ট করেছেন । টুইটে এদিন ডেরেক লিখেছেন, "পর্যটক দলের সদস্যের ভাষণের #ফ্যাক্টচেক। সাতটি সাজানো মিথ্যা। যা আসলে খুবই নিম্নমানের!"
শনিবার মেদিনীপুরে বিজেপির সভায় গেরুয়া শিবিরে যোগ দিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। পদ্ম শিবিরে ভিড়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের আরও অনেক নেতা ও জনপ্রতিনিধি। এই বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়কদিন ধরেই কটাক্ষ করছিল তৃণমূল কংগ্রেস। সেই সমালোচনার জবাব দিতে গিয়ে শনিবারের সভায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কংগ্রেস ত্যাগের বিষয়টি টেনে আনেন অমিত শাহ। অন্য দলের জন্য মমতা কংগ্রেস ছেড়েছিলেন বলে দাবি করেন।
অমিত শাহের এই দাবির পালটা হিসেবে ডেরেকের যুক্তি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্য দলে যোগ দিয়েছিলেন এটা ঠিক নয়। কারণ, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নতুন দল তৈরি করেছিলেন। ১৯৯৮ সালে কংগ্রেস থেকে পদত্যাগ করেই তিনি (মমতা) নতুন দল করেন।
আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের সুবিধা বাংলার মানুষ পাচ্ছেন না। অমিত শাহের এই অভিযোগের পালটা হিসেবে ডেরেক জানিয়েছেন, কেন্দ্রের ওই প্রকল্পের দুই বছর আগেই বাংলায় স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প চালু হয়। স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় ১.৪ কোটি পরিবার বছরে পাঁচ লাখ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিমা পেয়েছেন। আরও ভালো সুবিধা দেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে অন্যতম হল পরিবারের মহিলাদের নামে কার্ড।
অমিত শাহ অভিযোগ করেছিলেন পিএম কিষাণ প্রকল্পের ৬ হাজার টাকা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন বাংলার কৃষকরা। এই নিয়ে ডেরেকের পালটা দাবি, বাংলায় কৃষকবন্ধু প্রকল্পে একর প্রতি ৫ হাজার টাকা করে কৃষকদের দেওয়া হয়েছে। শস্যবিমায় বাংলার সরকার পুরো প্রিমিয়াম দেয়। কিন্তু পিএমএফবিওয়াই-এর জন্য প্রিমিয়ামের টাকার অংশ কেন্দ্র নেয়।
গত দেড় বছরে বিজেপির তিনশো জন কর্মী এই রাজ্যে খুন হয়েছেন বলে শনিবার অভিযোগ করেছিলেন অমিত শাহ। তার জবাবে ডেরেকের দাবি, বিজেপি কর্মীরা দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্বের জেরে খুন হয়েছেন। এমনকী, আত্মহত্যার ঘটনাকেও রাজনৈতিক খুন বলে দাবি করা হচ্ছে। ডেরেকের দাবি, ১৯৯৮ সাল থেকে তৃণমূলের ১০২৭ জন কর্মী রাজনৈতিক কারণে খুন হয়েছেন। লোকসভায় বিজেপির ১১৬ জন সাংসদের বিরুদ্ধে অপরাধের অভিযোগ রয়েছে।
-
#FactCheck of the speech made in Bengal by the henchman of the “tourist gang”.
— Derek O'Brien | ডেরেক ও'ব্রায়েন (@derekobrienmp) December 20, 2020 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="
7 pieces of concocted, false info in one speech. Actually, by his standards, quite low! pic.twitter.com/MgvktqcFt3
">#FactCheck of the speech made in Bengal by the henchman of the “tourist gang”.
— Derek O'Brien | ডেরেক ও'ব্রায়েন (@derekobrienmp) December 20, 2020
7 pieces of concocted, false info in one speech. Actually, by his standards, quite low! pic.twitter.com/MgvktqcFt3#FactCheck of the speech made in Bengal by the henchman of the “tourist gang”.
— Derek O'Brien | ডেরেক ও'ব্রায়েন (@derekobrienmp) December 20, 2020
7 pieces of concocted, false info in one speech. Actually, by his standards, quite low! pic.twitter.com/MgvktqcFt3
বাংলার জন্য প্রধানমন্ত্রীর পাঠানো খাদ্যশস্য তৃণমূল লুট করেছে বলেও অভিযোগ করেছিলেন অমিত শাহ। এই দাবির প্রেক্ষিতে ডেরেকের কথায়, বাস্তব হল ২০২১ সাল পর্যন্ত বাংলার খাদ্যসাথী প্রকল্পে ১০ কোটি মানুষ বিনামূল্যে রেশন পাচ্ছেন।
শনিবারের সভা থেকে অমিত শাহ অভিযোগ করেন যে বাংলার সরকার জেপি নাড্ডাকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা দেয়নি। কিন্তু ডেরেকের দাবি, জেপি নাড্ডাকে বাংলা সরকার জেড প্লাস নিরাপত্তা দিয়েছিল। কিন্তু তাঁর কনভয়ের পিছনে অনেক গাড়ি আসতে দিয়ে নাড্ডাই নিয়ম ভেঙেছেন।
আরও পড়ুন: যত হিংসা করবেন বিজেপি তত বেশি আপনার মোকাবিলা করবে, মমতাকে হুঁশিয়ারি অমিতের
নরেন্দ্র মোদি বাংলার গরিবদের জন্য ঘর দিয়েছেন, অমিত শাহের এই সব দাবির পালটা হিসেবে ডেরেক ও'ব্রায়েন জানিয়েছেন, কেন্দ্র ৬০ শতাংশ অর্থ দেয়। রাজ্য দেয় ৪০ শতাংশ। ২০১১ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে রাজ্য সরকার ৩৩,৮৭,০০০ বাড়ি তৈরিতে খরচ করেছে ৩৯৯৯৩ কোটি টাকা। গীতাঞ্জলি প্রকল্পে ৩,৯০,০০০ বাড়ি তৈরিতে খরচ করা হয়েছে ৩,৫৫০ কোটি টাকা। সকলের জন্য বাড়ি প্রকল্পে ৪,৩০,০০০ বাড়ি তৈরি করা হয়েছে। এর জন্য খরচ হয়েছে ৭,০০০ কোটি টাকা।