কলকাতা, 8 অগস্ট: 1947 সালের 15 অগস্ট ৷ ব্রিটিশ শাসনের শৃঙ্খল ছিন্ন করে 75 বছর আগের এই দিনেই স্বাধীনতা অর্জন করে দেশ ৷ ইংরেজশাসকদের অত্যাচার, তাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে হাজার হাজার প্রাণের বিনিময়ে ছিনিয়ে নেওয়া সেই স্বাধীনতা দেখতে দেখতে আজ 75 বছর ৷ আর এক সপ্তাহ পর স্বাধীনতার 75তম বর্ষের উজ্জ্বল মাইলফলক ছোঁবে ভারত ৷ এই বছর তাই স্বাধীনতা দিবস উদযাপনে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র ৷ 'আজাদ কা অমৃত মহোৎসব' (Azadi Ka Amrit Mahotsav)-এর অঙ্গ হিসেবে 'হর ঘর তেরঙ্গা' কর্মসূচির ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৷ তাঁর এই আহ্বানের পর বেড়ে গিয়েছে তেরঙ্গা পতাকার চাহিদা ৷
রাজ্য ও কেন্দ্র সরকারের বিভিন্ন দফতর ও প্রতিষ্ঠান তো বটেই, বেসরকারি বিভিন্ন সংগঠন, সংস্থা ও সাধারণ মানুষের মধ্যেও এবছর জাতীয় পতাকা কেনার বাড়তি উৎসাহ চোখে পড়ার মতো ৷ যেন হিরিক লেগেছে ৷ কলকাতার বড় বাজারের ব্যবসায়ী, পতাকা বিক্রেতাদের দাবি, এবছর তেরঙ্গার চাহিদা বেড়েছে 10-12 গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে । চাহিদা মেটাতে দিনরাত এক করে কাজ করতে হচ্ছে কারিগর, প্রিন্টিং কর্মীদের ৷
বড় বাজারের কোনও কোনও দোকান 4 থেকে 5 লক্ষ পর্যন্ত জাতীয় পতাকার অর্ডার পেয়েছে ৷ ছোট, বড় ও মাঝারি সব ধরনের পতাকারই চাহিদা রয়েছে ৷ কোনও কোনও দোকান ইতিমধ্যেই 3-4 লক্ষ জাতীয় পতাকা বিক্রি করে ফেলেছে । সোমবার বড়বাজারের ফ্লাগ হাউজ নামে একটি দোকানে গিয়ে দেখা গেল, কর্মীরা তৎপরতার সঙ্গে তেরঙ্গা তৈরির কাজে ব্যস্ত । কেউ তিনটি রঙের কাপড় পরপর জুড়ছেন তো, কেউ আবার অশোক চক্র ছাপার কাজে ব্যস্ত । কেউ বা পতাকা বাইন্ডিংয়ের কাজে ব্যস্ত ৷
আরও পড়ুন: প্রতি ঘরে তেরঙ্গার প্রচারে শহরে চলবে বিশেষ ট্রাম ! সৌজন্যে ডাক বিভাগ
সেই ব্যস্ততার ছবিই ধরা পড়েছে ইটিভি ভারতের ক্যামেরায় ৷ ক্রেতা থেকে বিক্রেতা, দোকানের কর্মী সকলেই জানালেন এবছর অতিরিক্ত পতাকার চাহিদার কথা ৷ দোকানের মালিক সতীশ সিংহ বলেন, "গত বছরগুলি থেকে প্রায় দশগুণ চাহিদা বেশি জাতীয় পতাকার । 'হর ঘর তেরঙ্গা' কর্মসূচির ঘোষণা, প্রধানমন্ত্রী আরও আগে ঘোষণা করলে সুবিধা হত । আমরা আরও লোকবল নিয়ে পতাকা তৈরি করতাম ।" একইসঙ্গে তিনি জানান, এবছর প্লাস্টিক ব্যান হওয়ায় জাতীয় পতাকা প্লাস্টিকের তৈরি হচ্ছে না, এটা খুব ভাল বিষয় । তেরঙ্গা রাস্তায় না-ফেলার অনুরোধ তিনি করেছেন সকলের কাছে ৷
আরও পড়ুন: গর্বের জাতীয় পতাকার 'জন্ম' দেশের এই অখ্যাত গ্রামে
এবছর ভারতীয় পোস্ট অফিসগুলি থেকেও জাতীয় পতাকা বিক্রি করা হচ্ছে । ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কেল ইতিমধ্যেই এক লাখ কুড়ি হাজার জাতীয় পতাকা বিক্রি করে ফেলেছে । অনলাইনেও বিক্রি হচ্ছে তেরঙ্গা। রবিবার এবং ছুটির দিনেও পোস্ট অফিসগুলিতে কাউন্টার খুলে জাতীয় পতাকার বিক্রি চলছে বলে জানিয়েছেন ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কেলের মুখ্য পোস্ট মাস্টার জেনারেল জে চারুকেশী । তিনি বলেন,"আমরা প্রতিটি মানুষের কাছে পৌঁছনোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছি । সুন্দরবন থেকে পাহাড় সমস্ত জায়গায় নানান ভাবে প্রচার চলছে । জিএসটি ছাড়া পতাকাগুলি বিক্রি হচ্ছে । বিনামূল্যে অনলাইনে ডেলিভারি করা হচ্ছে জাতীয় পতাকা ।"