ETV Bharat / city

পুজোর পর কোরোনার সংক্রমণ লাগামছাড়া হতে পারে, আশঙ্কায় চিকিৎসকরা

পুজোয় যে সংখ্যক মানুষ বেরিয়েছে, তার জেরে কোরোনার সংক্রমণ বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন রাজ্যের চিকিৎসকদের একাংশ ।

COVID 19
পুজোর দিনে কলকাতার রাস্তার ছবি
author img

By

Published : Oct 27, 2020, 7:06 PM IST

কলকাতা, 27 অক্টোবর: পুজোর সময় যাতে জনসমাগম না হয় তার জন্য সরকারি এবং বেসরকারি চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের তরফে আবেদন জানানো হয়েছিল । তা সত্ত্বেও যে সংখ্যক মানুষ রাস্তায় বেরিয়েছে তার জেরে রাজ‍্যে কোরোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা । ফলে হাসপাতালের বেডের সংকট আরও বাড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা ।

অনেক পুজো মণ্ডপেই এবার আগের তুলনায় জনসমাগম কম হয়েছে, সেই কথা স্বীকার করে সরকারি এবং বেসরকারি চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনকে নিয়ে গঠিত জয়েন্ট প্ল‍্যাটফর্ম অফ ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গলের যুগ্ম আহ্বায়ক, চিকিৎসক পুণ্যব্রত গুণ বলেন, "সবেমাত্র পুজো শেষ হল । পুজোয় যে সংখ্যক মানুষ বেরিয়েছে তার জেরে COVID-19-এর সংক্রমণ কী রূপ নেবে, তা দেখার জন্য কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে।" তিনি বলেন, "COVID-19-এর সংক্রমণ বেড়ে গেলে বেডের সংকট হবে বলে আমরা বার বার সরকারকে বলেছি । সাধারণকে বলেছি যেন পুজোর সময় তারা না বের হয়। অনেকে বিশেষ করে কলকাতার দিকের আমাদের কথা শুনেছেন । জেলাগুলির দিকে বহু স্থানে আমাদের আবেদন সেভাবে সাড়া মেলেনি । এর ফল আমাদের ভুগতে হবে। এটা কী রূপ নেবে, তা আর কয়েক দিনের মধ্যেই বুঝতে পারা যাবে।"

পুজোর আগে রাজ্যজুড়ে বেড বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করা হয়েছে । বেড বৃদ্ধির কথা বলা হলেও পরিকাঠামো কি যথাযথ রয়েছে ? চিকিৎসক পুণ্যব্রত গুণ বলেন, "প্রোটোকল মনিটরিং টিমের হয়ে আমরা যখন বিভিন্ন হাসপাতালে পরিদর্শনে গেছি, তখন আমরা দেখেছি স্বাস্থ্য দপ্তরের ওয়েবসাইটে ঘোষিত যে বেড, তার সঙ্গে বাস্তবের বেড সংখ্যার মধ‍্যে ফারাক আছে । এই ফারাক বহু ক্ষেত্রে 100 থেকে 200।" তিনি বলেন, "সরকার প্রস্তাব করল এই বেডগুলি COVID-19-এর জন্য হোক, সঙ্গে সঙ্গে বেডের সংখ্যা ওয়েবসাইটে আপলোড করে দেওয়া হচ্ছে । প্রস্তুতি রয়েছে কি না, ওই বেডগুলি চালানোর মতো চিকিৎসক, নার্স এবং, অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীর ব্যবস্থা না করে এই বেডগুলির ঘোষণা হয়ে যাচ্ছে । সুতরাং ওয়েবসাইটে বেডের সংখ্যা দেখা যাচ্ছে সেগুলি সঠিক নয় বলেই আমার মনে হয় ।"

আরও পড়ুন : দৈনিক সংক্রমণ আজও 4 হাজার পার, কলকাতায় বাড়ছে আক্রান্ত

চালু বেডগুলির জন্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী সহ অন্য পরিকাঠামোও যথাযথ কি রয়েছে ? পুণ্যব্রত গুণ বলেন, "না যথাযথ পরিকাঠামো নেই । ঘোষিত COVID হাসপাতালগুলির মধ্যে অনেকগুলো ক্ষেত্রেই যথাযথ পরিকাঠামো এবং লোকবল নেই।" কোরোনা পরীক্ষার সংখ্যা আরও বাড়ানো উচিত? তিনি বলেন, "টেস্টের সংখ্যা বাড়ানো হোক, এটা আমরা শুরু থেকেই দাবি করে আসছি । টেস্টের সংখ্যা যদি বাড়ানো হতো, আমরা যদি জানতে পারতাম কারা কারা উপসর্গহীন কিন্তু COVID-19 আক্রান্ত, তাঁদেরকে যদি আমরা পৃথক করে রাখতে পারতাম 14 দিনের জন্য, তাহলে সংক্রমণ ঠেকানো যেত । সেটা করা হয়নি ।"

তিনি আরও বলেন, "শোনা যাচ্ছে, টেস্টের সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হয়েছে । কত শতাংশকে COVID-19 পজ়িটিভ ঘোষণা করা যাবে, সেটা স্বাস্থ্য ভবনের অনুমতি নিয়ে করতে হচ্ছে। তবে, এটা কতটা সত্যি তা যাচাই করার মতো উপায় এই মুহূর্তে আমাদের হাতে নেই ।"

রাজ‍্যের সরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন, "কোরোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির বিষয়টি দুটি বিষয়ের উপর নির্ভর করছে। এক, টেস্টিং-এর স্ট্র্যাটেজি যদি সায়েন্টিফিক না হয় তাহলে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা খুব একটা বাড়বে না। সায়েন্টিফিক বলতে যেখানে উপসর্গ রয়েছে সেখানে বেশিরভাগ টেস্ট করাতে হবে, যাঁদের উপসর্গ রয়েছে, তাঁদের সবাইকে টেস্ট করাতে হবে, কাউকে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না।" তিনিও আরও বলেন, "এখনও পর্যন্ত টেস্টিং রিপোর্ট পেতে 3.4 দিন সময় লেগে যাচ্ছে। 24 ঘণ্টার মধ্যে যদি রিপোর্ট না পাওয়া যায়, তাহলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে । বহু কেসের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে চাপা পড়ে যাচ্ছে । রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে না । এই ধরনের ঘটনাগুলি বাড়তে থাকলে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি বাড়বে না অথচ বাস্তবে কিন্তু অনেক আক্রান্ত পাওয়া যাবে।"

কলকাতা, 27 অক্টোবর: পুজোর সময় যাতে জনসমাগম না হয় তার জন্য সরকারি এবং বেসরকারি চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনের তরফে আবেদন জানানো হয়েছিল । তা সত্ত্বেও যে সংখ্যক মানুষ রাস্তায় বেরিয়েছে তার জেরে রাজ‍্যে কোরোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা । ফলে হাসপাতালের বেডের সংকট আরও বাড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা ।

অনেক পুজো মণ্ডপেই এবার আগের তুলনায় জনসমাগম কম হয়েছে, সেই কথা স্বীকার করে সরকারি এবং বেসরকারি চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠনকে নিয়ে গঠিত জয়েন্ট প্ল‍্যাটফর্ম অফ ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গলের যুগ্ম আহ্বায়ক, চিকিৎসক পুণ্যব্রত গুণ বলেন, "সবেমাত্র পুজো শেষ হল । পুজোয় যে সংখ্যক মানুষ বেরিয়েছে তার জেরে COVID-19-এর সংক্রমণ কী রূপ নেবে, তা দেখার জন্য কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে।" তিনি বলেন, "COVID-19-এর সংক্রমণ বেড়ে গেলে বেডের সংকট হবে বলে আমরা বার বার সরকারকে বলেছি । সাধারণকে বলেছি যেন পুজোর সময় তারা না বের হয়। অনেকে বিশেষ করে কলকাতার দিকের আমাদের কথা শুনেছেন । জেলাগুলির দিকে বহু স্থানে আমাদের আবেদন সেভাবে সাড়া মেলেনি । এর ফল আমাদের ভুগতে হবে। এটা কী রূপ নেবে, তা আর কয়েক দিনের মধ্যেই বুঝতে পারা যাবে।"

পুজোর আগে রাজ্যজুড়ে বেড বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করা হয়েছে । বেড বৃদ্ধির কথা বলা হলেও পরিকাঠামো কি যথাযথ রয়েছে ? চিকিৎসক পুণ্যব্রত গুণ বলেন, "প্রোটোকল মনিটরিং টিমের হয়ে আমরা যখন বিভিন্ন হাসপাতালে পরিদর্শনে গেছি, তখন আমরা দেখেছি স্বাস্থ্য দপ্তরের ওয়েবসাইটে ঘোষিত যে বেড, তার সঙ্গে বাস্তবের বেড সংখ্যার মধ‍্যে ফারাক আছে । এই ফারাক বহু ক্ষেত্রে 100 থেকে 200।" তিনি বলেন, "সরকার প্রস্তাব করল এই বেডগুলি COVID-19-এর জন্য হোক, সঙ্গে সঙ্গে বেডের সংখ্যা ওয়েবসাইটে আপলোড করে দেওয়া হচ্ছে । প্রস্তুতি রয়েছে কি না, ওই বেডগুলি চালানোর মতো চিকিৎসক, নার্স এবং, অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মীর ব্যবস্থা না করে এই বেডগুলির ঘোষণা হয়ে যাচ্ছে । সুতরাং ওয়েবসাইটে বেডের সংখ্যা দেখা যাচ্ছে সেগুলি সঠিক নয় বলেই আমার মনে হয় ।"

আরও পড়ুন : দৈনিক সংক্রমণ আজও 4 হাজার পার, কলকাতায় বাড়ছে আক্রান্ত

চালু বেডগুলির জন্য চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মী সহ অন্য পরিকাঠামোও যথাযথ কি রয়েছে ? পুণ্যব্রত গুণ বলেন, "না যথাযথ পরিকাঠামো নেই । ঘোষিত COVID হাসপাতালগুলির মধ্যে অনেকগুলো ক্ষেত্রেই যথাযথ পরিকাঠামো এবং লোকবল নেই।" কোরোনা পরীক্ষার সংখ্যা আরও বাড়ানো উচিত? তিনি বলেন, "টেস্টের সংখ্যা বাড়ানো হোক, এটা আমরা শুরু থেকেই দাবি করে আসছি । টেস্টের সংখ্যা যদি বাড়ানো হতো, আমরা যদি জানতে পারতাম কারা কারা উপসর্গহীন কিন্তু COVID-19 আক্রান্ত, তাঁদেরকে যদি আমরা পৃথক করে রাখতে পারতাম 14 দিনের জন্য, তাহলে সংক্রমণ ঠেকানো যেত । সেটা করা হয়নি ।"

তিনি আরও বলেন, "শোনা যাচ্ছে, টেস্টের সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হয়েছে । কত শতাংশকে COVID-19 পজ়িটিভ ঘোষণা করা যাবে, সেটা স্বাস্থ্য ভবনের অনুমতি নিয়ে করতে হচ্ছে। তবে, এটা কতটা সত্যি তা যাচাই করার মতো উপায় এই মুহূর্তে আমাদের হাতে নেই ।"

রাজ‍্যের সরকারি চিকিৎসকদের সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন, "কোরোনা সংক্রমণ বৃদ্ধির বিষয়টি দুটি বিষয়ের উপর নির্ভর করছে। এক, টেস্টিং-এর স্ট্র্যাটেজি যদি সায়েন্টিফিক না হয় তাহলে কোরোনা আক্রান্তের সংখ্যা খুব একটা বাড়বে না। সায়েন্টিফিক বলতে যেখানে উপসর্গ রয়েছে সেখানে বেশিরভাগ টেস্ট করাতে হবে, যাঁদের উপসর্গ রয়েছে, তাঁদের সবাইকে টেস্ট করাতে হবে, কাউকে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না।" তিনিও আরও বলেন, "এখনও পর্যন্ত টেস্টিং রিপোর্ট পেতে 3.4 দিন সময় লেগে যাচ্ছে। 24 ঘণ্টার মধ্যে যদি রিপোর্ট না পাওয়া যায়, তাহলে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়বে । বহু কেসের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে চাপা পড়ে যাচ্ছে । রিপোর্ট পাওয়া যাচ্ছে না । এই ধরনের ঘটনাগুলি বাড়তে থাকলে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি বাড়বে না অথচ বাস্তবে কিন্তু অনেক আক্রান্ত পাওয়া যাবে।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.