কলকাতা, 10 জানুয়ারি : বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের জোট নিয়ে প্রথম দিন থেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কংগ্রেসের একাধিক বিধায়ক। সোমেন মিত্র প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি থাকার সময় পুরুলিয়ার বাঘমুন্ডির কংগ্রেসের বিধায়ক নেপাল মাহাতো স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছিলেন বামফ্রন্টের সঙ্গে জোট হলে তিনি পৃথকভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সিদ্ধান্ত নেবেন। সোমেন মিত্র একাধিকবার নেপাল মাহাতোকে বুঝিয়েছিলেন, বর্তমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে আসন সমঝোতা ছাড়া তৃণমূল এবং বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। নাছোড় নেপাল মাহাতো যুক্তি-পাল্টা যুক্তিতে সেদিন থামিয়ে দিয়েছিলেন তৎকালীন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রকে।
এই পরিস্থিতিতে বামফ্রন্টের সঙ্গে আসন সমঝোতার বার্তা নিয়ে যৌথভাবে পথে নেমেছে বাম ও কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। একাধিক জায়গায় গত দু'বছর ধরে যৌথভাবে কর্মসূচিও করেছে বাম এবং কংগ্রেস। সোমেন মিত্র মারা যাওয়ার পর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হয়েছেন অধীররঞ্জন চৌধুরি। তিনিও বামফ্রন্টের সঙ্গে আসন সমঝোতায় আন্তরিক। যদিও তার দলের একাধিক বিধায়ক বামেদের সঙ্গে জোট করতে নারাজ। যেমন কংগ্রেসের শীর্ষ নেতা দেবপ্রসাদ চট্টোপাধ্যায়, লালগোলার কংগ্রেস বিধায়ক আবু হেনা, ফারাক্কার কংগ্রেস বিধায়ক মইনুল হক সহ একগুচ্ছ কংগ্রেস বিধায়ক এবং নেতারা চাইছেন না বামেদের সঙ্গে আসন সমঝোতা হোক।
আর সেই কারণেই প্রকাশ্যে জোট বিরোধী মন্তব্য করে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের সমঝোতার প্রক্রিয়াকে ভেস্তে দিতে চাইছেন কংগ্রেস বিধায়ক নেপাল মাহাতো। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন এআইসিসি যাই বলুক, এরাজ্যে তিনি বামফ্রন্টের সঙ্গে কোনওভাবেই সমঝোতা করবেন না। কয়েকদিন আগে বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের তরফ থেকে আলাপ-আলোচনার জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে নেপাল মাহাতোর নাম রাখা হলেও, নেপাল মাহাতো ব্যক্তিগতভাবে জানিয়েছেন, বামফ্রন্টের সঙ্গে আলাপ আলোচনায় বসতে তিনি নারাজ। এর আগের লোকসভা নির্বাচনে বামফ্রন্টের সঙ্গে কংগ্রেসের আসন সমঝোতার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ ভেঙে গিয়েছিল কংগ্রেস বিধায়কদের এক রোখা মনোভাবের জন্য। এমনটাই মনে করেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। সেবার পুরুলিয়ার আসন বন্টন নিয়েও বামেদের সঙ্গে সমস্যা তৈরি হয়েছিল। এবার যেন তেমন না হয়। চাইছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।
নেপাল মাহাতো বলেন, “পরিবর্তিত পরিস্থিতির দোহাই দিয়ে বামফ্রন্টের সঙ্গে আসন সমঝোতা করলে কংগ্রেসের ক্ষতি হবে। এই প্রতিকূল অবস্থাতেও কংগ্রেস এককভাবে লড়াই করলে ভালো ফল করবে। বামফ্রন্টের সঙ্গে আসন সমঝোতা করলে মানুষ আমাদের ভুল বুঝবে। আসন সমঝোতার পক্ষে নই আমি।”