কলকাতা, 9 অক্টোবর: গতকাল অর্থাৎ, শনিবার বিকেলে দু’রকম ছবি দেখে বঙ্গবাসী ৷ একদিকে দুর্গাপুজোর কার্নিভাল (Durga Puja Carnival) ঘিরে আলোর ঝলকানি আর হাজার হাজার মানুষের ঢল। আর ঠিক রেড রোড থেকে ঢিলছড়া দূরত্বে টেট ও এসএসসি চাকরিপ্রার্থীদের দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান-বিক্ষোভে বসে থাকা (TET and SSC Agitation) ৷ সেই অবস্থান বিক্ষোভকেই শনিবার কলকাতা পুলিশের তরফে সাদা কাপড় দিয়ে ঘিরে দেওয়া হয় ৷ যা নিয়ে গতকাল থেকেই বিতর্ক শুরু হয়েছে ৷ এদিকে আজ রবিবার আবার লক্ষ্মীপুজো ৷ ধরনা মঞ্চেই এদিন লক্ষ্মীপুজো সারলেন আন্দোলনকারী চাকরিপ্রার্থীরা ৷ তাঁদের সঙ্গে আজ দেখা করতে আসেন প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সাধারণ সম্পাদক আশুতোষ চট্টোপাধ্যায় ৷
রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে (Ashutosh Chatterjee Criticises TMC Government) তিনি বলেন, ‘‘মাতঙ্গিনী হাজরার মূর্তির পাদদেশে জীবন্ত লক্ষ্মীদের পাশে থাকতে এসেছি ৷ চাকরির নামে আমাদের রাজ্যে সার্কাস চলছে ৷ এটা আমাদের বাংলার বড় লজ্জা, শিক্ষকরা রাস্তায় বসে আছেন ৷ চাকরির জন্য বাড়িঘর ত্যাগ করে মাসের পর মাস তাঁরা ধরনা দিচ্ছেন ৷ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী প্রত্যেক দিন এই চাকরিপ্রার্থীদের খোঁজখবর নেন ৷ তাঁদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে থাকেন ৷ সমস্ত শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ এই যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের নিয়োগের দাবি করছে ৷ অথচ একদিকে উৎসব হচ্ছে, আর ধরনা মঞ্চ সাদা কাপড় দিয়ে ঘিরে দেওয়া হচ্ছে ৷ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে চাই যে, আন্দোলনকে সাদা কাপড়ে ঢাকা দেওয়া যায় না ৷ ঠিক তেমনি মানুষের মন, বিবেক ও সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরাকে সাদা কাপড় দিয়ে আড়াল করা যায় না ৷ দিদি-মোদি একই কাজ করছেন ৷ এ লজ্জা ঢাকা যায় না ৷ বাড়ির লক্ষ্মীরা আজ রাস্তায় বসে আছেন ৷’’
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রী ভয় পেয়েছেন বলেই চাকরিপ্রার্থীদের তুলে দেওয়া হচ্ছে ! মমতাকে 'রুদ্র-বাণ'
গান্ধিমূর্তির পাদদেশ ও শহিদ মিনারের কাছে মাতঙ্গিনী হাজরা মূর্তির পাদদেশে চারটি ধরনা মঞ্চ মিলিয়ে দেড় থেকে দু’শো চাকরিপ্রার্থী অবস্থান বিক্ষোভ করছেন ৷ উচ্চ প্রাথমিক, গ্রুপ-ডি, গ্রুপ-সি মিলিয়ে মোট চারটি ক্ষেত্রে চাকরিপ্রার্থীরা অবস্থান বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন দীর্ঘদিন ধরে ৷ তাদের মধ্যে কারও লিখিত পরীক্ষা হয়ে গেছে সাত বছর আগে ৷ কারও আবার চার বছর আগে ৷ অনেকে আবার একাধিকবার ইন্টারভিউ দেওয়ার পরেও নিয়োগপত্র পাননি ৷ অথচ ঘুরপথে অন্য অনেকে চাকরি করছেন বলে তাঁদের অভিযোগ ৷ এই পরিস্থিতিতে সংসার চালাতে কেউ কেউ ভিন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছেন ৷ অনেক নিজের এলাকায় অন্য কাজ শুরু করেছেন ৷ কিন্তু, যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও, কেন নিয়োগপত্র পাচ্ছেন না, এই হতাশায় অনেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন ৷