ETV Bharat / city
"ডাক্তাররা চটকলের কর্মী ?" দিল্লির ধর্মঘটে 'নীরব' বাংলার নির্মল - Nirmal Majhi
কেন্দ্রীয় সরকারের NMC বিলের বিরুদ্ধে দিল্লিতে IMA-র হেড কোয়ার্টারের এক ঘোষণার জেরে ভিন্ন অবস্থানে বিতর্কের সূত্রপাত ।
ছবি
By
Published : Aug 1, 2019, 10:19 AM IST
| Updated : Aug 1, 2019, 10:25 AM IST
কলকাতা, 1 আগস্ট : দু'জনই তৃণমূলের নেতা । একজন রাজ্যসভার সদস্য । অন্যজন, রাজ্যের এক মন্ত্রী । দুই জনই ডাক্তারদের নেতা । বর্তমানে, একজন সর্বভারতীয়স্তরের । এবং অন্যজন রাজ্যস্তরের । একজন শান্তনু সেন অপরজন নির্মল মাজি ।
কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন (NMC) বিলের বিরুদ্ধে সর্বভারতীয়স্তরের নেতা যেখানে বলছেন ধর্মঘটের কথা, সেখানে রাজ্যস্তরের নেতা বলছেন নীরব প্রতিবাদের কথা । পথে নেমে শান্তনু সেন গ্রেপ্তার হচ্ছেন । আর, নির্মল মাজি বলছেন, ডাক্তাররা চটকলের কর্মী নন যে রাস্তায় নেমে জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ করবেন । এই পরিস্থিতির জেরে, বিতর্কের সম্মুখীন ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (IMA)-এর দেশজুড়ে আন্দোলনের কর্মসূচি ।
কেন্দ্রীয় সরকারের NMC বিলের বিরুদ্ধে দিল্লিতে IMA-র হেড কোয়ার্টারের এক ঘোষণার জেরে ভিন্ন অবস্থানে বিতর্কের সূত্রপাত । মঙ্গলবার, IMA-র সর্বভারতীয় সভাপতি শান্তনু সেন এবং IMA-র সেক্রেটারি জেনেরাল আর ভি অশোকান প্রতিটি রাজ্যের প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি, বিভিন্ন লোকাল ব্রাঞ্চের প্রেসিডেন্ট এবং সেক্রেটারি সহ IMA-র ন্যাশনাল ওয়ার্কিং কমিটির প্রতিটি সদস্য-সহ বিভিন্ন পদাধিকারীদের কাছে একটি আবেদন রাখেন । বলা হয়, বুধবার সকাল ছ'টা থেকে পরের দিন সকাল ছ'টা পর্যন্ত জরুরি এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্র বাদে অন্য সব ক্ষেত্রে চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ রাখবেন গোটা দেশের ডাক্তাররা । এই ঘোষণায়, দেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতাল, নার্সিংহোম এমন কী ব্যক্তিগত চিকিৎসাও বন্ধ রাখার কথা বলা হয় । লোকসভায় NMC বিল, 2019 পাশ হয়ে যাওয়ার জেরে IMA-র ইমারজেন্সি অ্যাকশন কমিটি 24 ঘণ্টার জন্য এভাবে চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ।
কর্মসূচির বিষয়ে শান্তনু সেন বলেন, "ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন বিলের বিরুদ্ধে 2017 থেকে আমরা আন্দোলন করছি । এই বিল গণতন্ত্র বিরোধী । চিকিৎসক বিরোধী । সমাজের স্বার্থ বিরোধী । বিলটি আসলে মেডিকেল এডুকেশনকে কর্পোরেটের হাতে বিক্রি করে দেওয়ার চক্রান্ত করছে ।" এ দিকে বুধবারের এই কর্মসূচির বিষয়ে নির্মল মাজির সাফ জবাব, "আমরা প্রতীকী প্রতিবাদ জানিয়েছি । কাজ বন্ধ করে লাখ লাখ মানুষকে দুর্গতির মধ্যে ফেলে দিয়ে প্রতিবাদ নয় । প্রতিবাদ মন থেকে হবে । প্রতিবাদ চলবে । আমাদের প্রতিবাদ নীরব । কাজে ফাঁকি দিয়ে প্রতিবাদ নয়।"
IMA-র হেড কোয়ার্টারের ঘোষণা অনুযায়ী বুধবারের কর্মসূচিকে সমর্থন করে ডাক্তারদের অন্য বিভিন্ন সংগঠন । পশ্চিমবঙ্গে ডাক্তারদের বিভিন্ন সংগঠনের তরফে, বিশেষ করে বহির্বিভাগে পরিষেবা না দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় । বুধবার কর্মসূচি শুরু হওয়ার পরে দেখা যায় কলকাতার বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অন্যদিনের তুলনায় রোগীদের সংখ্যা কম । কলকাতার অন্য বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এই কর্মসূচি যতটা প্রভাব ফেলেছে, তার অনেক বেশি প্রভাব ফেলেছে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । কলকাতার এই মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বুধবার বহির্বিভাগের পরিষেবা কার্যত স্তব্ধ হয়ে গেছিল । পূর্ব নির্ধারিত কিছু অস্ত্রোপচার হয়নি । বহির্বিভাগের জন্য টিকিট করেছেন রোগী, তবে তাঁকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়েছে হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে । যদিও, এই হাসপাতালে চেস্ট মেডিসিন সহ অন্য দু'-একটি বহির্বিভাগে বুধবার পরিষেবা দিয়েছেন ডাক্তাররা । কলকাতা লাগোয়া কামারহাটির কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড সাগর দত্ত হাসপাতাল, এবং কলকাতার বাইরে মালদা, মুর্শিদাবাদ আর উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বুধবারের এই কর্মসূচি বেশ ভালো প্রভাব ফেলেছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন ।
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ডাক্তারদের একটি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গল । সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক, মানস গুমটা বলেন, "প্রভাব পড়েছে । IMA-র দেশের সব চিকিৎসক সমাজ এবং জুনিয়র ডাক্তার, সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।" পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ডাক্তারদের অন্য একটি সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক, সজল বিশ্বাস বলেন, "আন্দোলনের ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়বে । কারণ বিভিন্ন ব্রাঞ্চ যদি আলাদা আলাদা সিদ্ধান্ত নেয়, তা হলে সেই আন্দোলনের শক্তিটা কমে যায় । "
IMA-র দিল্লি হেড কোয়ার্টার এবং বেঙ্গল হেড কোয়ার্টারের দুই অবস্থানের বিষয়ে নির্মল মাজি বলেন, "কখনই আলাদা নয় । NMC বিলের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিবাদ এই রাজ্য থেকে মুখ্যমন্ত্রী করেছেন । এখানে জনমুখী একটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা রয়েছে, যেটা নজিরবিহীন, একটা নবজাগরণের সূচনা করেছে ।" বুধবার কালো ব্যাজ পরে তাঁরা প্রতিবাদ করেছেন । বিভিন্ন পোস্টার লিখে জনগণকে সচেতন করেছেন । এ কথা জানিয়ে নির্মল মাজি বলেন, "এটা দীর্ঘমেয়াদী আন্দোলন । সংখ্যাতত্ত্বের বিচারে কেন্দ্রীয় সরকার এই বিল লোকসভায় পাশ করিয়েছে । এর বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে ।"
কলকাতা, 1 আগস্ট : দু'জনই তৃণমূলের নেতা । একজন রাজ্যসভার সদস্য । অন্যজন, রাজ্যের এক মন্ত্রী । দুই জনই ডাক্তারদের নেতা । বর্তমানে, একজন সর্বভারতীয়স্তরের । এবং অন্যজন রাজ্যস্তরের । একজন শান্তনু সেন অপরজন নির্মল মাজি ।
কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন (NMC) বিলের বিরুদ্ধে সর্বভারতীয়স্তরের নেতা যেখানে বলছেন ধর্মঘটের কথা, সেখানে রাজ্যস্তরের নেতা বলছেন নীরব প্রতিবাদের কথা । পথে নেমে শান্তনু সেন গ্রেপ্তার হচ্ছেন । আর, নির্মল মাজি বলছেন, ডাক্তাররা চটকলের কর্মী নন যে রাস্তায় নেমে জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ করবেন । এই পরিস্থিতির জেরে, বিতর্কের সম্মুখীন ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (IMA)-এর দেশজুড়ে আন্দোলনের কর্মসূচি ।
কেন্দ্রীয় সরকারের NMC বিলের বিরুদ্ধে দিল্লিতে IMA-র হেড কোয়ার্টারের এক ঘোষণার জেরে ভিন্ন অবস্থানে বিতর্কের সূত্রপাত । মঙ্গলবার, IMA-র সর্বভারতীয় সভাপতি শান্তনু সেন এবং IMA-র সেক্রেটারি জেনেরাল আর ভি অশোকান প্রতিটি রাজ্যের প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারি, বিভিন্ন লোকাল ব্রাঞ্চের প্রেসিডেন্ট এবং সেক্রেটারি সহ IMA-র ন্যাশনাল ওয়ার্কিং কমিটির প্রতিটি সদস্য-সহ বিভিন্ন পদাধিকারীদের কাছে একটি আবেদন রাখেন । বলা হয়, বুধবার সকাল ছ'টা থেকে পরের দিন সকাল ছ'টা পর্যন্ত জরুরি এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্র বাদে অন্য সব ক্ষেত্রে চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ রাখবেন গোটা দেশের ডাক্তাররা । এই ঘোষণায়, দেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতাল, নার্সিংহোম এমন কী ব্যক্তিগত চিকিৎসাও বন্ধ রাখার কথা বলা হয় । লোকসভায় NMC বিল, 2019 পাশ হয়ে যাওয়ার জেরে IMA-র ইমারজেন্সি অ্যাকশন কমিটি 24 ঘণ্টার জন্য এভাবে চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ।
কর্মসূচির বিষয়ে শান্তনু সেন বলেন, "ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন বিলের বিরুদ্ধে 2017 থেকে আমরা আন্দোলন করছি । এই বিল গণতন্ত্র বিরোধী । চিকিৎসক বিরোধী । সমাজের স্বার্থ বিরোধী । বিলটি আসলে মেডিকেল এডুকেশনকে কর্পোরেটের হাতে বিক্রি করে দেওয়ার চক্রান্ত করছে ।" এ দিকে বুধবারের এই কর্মসূচির বিষয়ে নির্মল মাজির সাফ জবাব, "আমরা প্রতীকী প্রতিবাদ জানিয়েছি । কাজ বন্ধ করে লাখ লাখ মানুষকে দুর্গতির মধ্যে ফেলে দিয়ে প্রতিবাদ নয় । প্রতিবাদ মন থেকে হবে । প্রতিবাদ চলবে । আমাদের প্রতিবাদ নীরব । কাজে ফাঁকি দিয়ে প্রতিবাদ নয়।"
IMA-র হেড কোয়ার্টারের ঘোষণা অনুযায়ী বুধবারের কর্মসূচিকে সমর্থন করে ডাক্তারদের অন্য বিভিন্ন সংগঠন । পশ্চিমবঙ্গে ডাক্তারদের বিভিন্ন সংগঠনের তরফে, বিশেষ করে বহির্বিভাগে পরিষেবা না দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয় । বুধবার কর্মসূচি শুরু হওয়ার পরে দেখা যায় কলকাতার বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অন্যদিনের তুলনায় রোগীদের সংখ্যা কম । কলকাতার অন্য বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এই কর্মসূচি যতটা প্রভাব ফেলেছে, তার অনেক বেশি প্রভাব ফেলেছে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে । কলকাতার এই মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বুধবার বহির্বিভাগের পরিষেবা কার্যত স্তব্ধ হয়ে গেছিল । পূর্ব নির্ধারিত কিছু অস্ত্রোপচার হয়নি । বহির্বিভাগের জন্য টিকিট করেছেন রোগী, তবে তাঁকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়েছে হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে । যদিও, এই হাসপাতালে চেস্ট মেডিসিন সহ অন্য দু'-একটি বহির্বিভাগে বুধবার পরিষেবা দিয়েছেন ডাক্তাররা । কলকাতা লাগোয়া কামারহাটির কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড সাগর দত্ত হাসপাতাল, এবং কলকাতার বাইরে মালদা, মুর্শিদাবাদ আর উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বুধবারের এই কর্মসূচি বেশ ভালো প্রভাব ফেলেছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন ।
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ডাক্তারদের একটি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গল । সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক, মানস গুমটা বলেন, "প্রভাব পড়েছে । IMA-র দেশের সব চিকিৎসক সমাজ এবং জুনিয়র ডাক্তার, সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।" পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ডাক্তারদের অন্য একটি সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক, সজল বিশ্বাস বলেন, "আন্দোলনের ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়বে । কারণ বিভিন্ন ব্রাঞ্চ যদি আলাদা আলাদা সিদ্ধান্ত নেয়, তা হলে সেই আন্দোলনের শক্তিটা কমে যায় । "
IMA-র দিল্লি হেড কোয়ার্টার এবং বেঙ্গল হেড কোয়ার্টারের দুই অবস্থানের বিষয়ে নির্মল মাজি বলেন, "কখনই আলাদা নয় । NMC বিলের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিবাদ এই রাজ্য থেকে মুখ্যমন্ত্রী করেছেন । এখানে জনমুখী একটা স্বাস্থ্য ব্যবস্থা রয়েছে, যেটা নজিরবিহীন, একটা নবজাগরণের সূচনা করেছে ।" বুধবার কালো ব্যাজ পরে তাঁরা প্রতিবাদ করেছেন । বিভিন্ন পোস্টার লিখে জনগণকে সচেতন করেছেন । এ কথা জানিয়ে নির্মল মাজি বলেন, "এটা দীর্ঘমেয়াদী আন্দোলন । সংখ্যাতত্ত্বের বিচারে কেন্দ্রীয় সরকার এই বিল লোকসভায় পাশ করিয়েছে । এর বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে ।"
Intro:কলকাতা, ৩১ জুলাই: দু'জনই তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা। একজন রাজ্যসভার সদস্য। অন্যজন, পশ্চিমবঙ্গের এক মন্ত্রী। এবং, এই দুজন-ই ডাক্তারদেরও নেতা। বর্তমানে, একজন সর্বভারতীয় স্তরের। এবং, অন্যজন রাজ্য স্তরের। কেন্দ্রীয় সরকারের ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন (NMC) বিলের বিরুদ্ধে সর্বভারতীয় স্তরের নেতা যেখানে বলছেন ধর্মঘটের কথা, সেখানে রাজ্য স্তরের নেতা বলছেন নীরব প্রতিবাদের কথা। পথে নেমে সর্বভারতীয় স্তরের নেতা গ্রেপ্তার হচ্ছেন। আর, রাজ্য স্তরের নেতা বলছেন, ডাক্তাররা চটকলের কর্মী নন যে রাস্তায় নেমে জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ করবেন। এমনই পরিস্থিতির জেরে, বিতর্কের সম্মুখীন এখন ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (IMA)-এর দেশজুড়ে আন্দোলনের কর্মসূচি।
Body:ডাক্তারদের সর্বভারতীয় স্তরের এই নেতার নাম শান্তনু সেন। এবং, রাজ্য স্তরের এই নেতা, ডাক্তার নির্মল মাজি। ডাক্তার শান্তনু সেন বর্তমানে IMA-র ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট। এবং, ডাক্তার নির্মল মাজি IMA-র পশ্চিমবঙ্গ শাখার প্রেসিডেন্ট। অতীতেও এই দুই নেতাকে নিয়ে বিতর্ক কিছু কম হয়নি। পশ্চিমবঙ্গে IMA-এর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এই দুই নেতাকে একে অন্যের বিরুদ্ধে আদালতেও যেতে দেখা গিয়েছে। বিভিন্ন মহলে এমন শোনা যেত, এই দুই নেতা তৃণমূল কংগ্রেসের দুই লবির ঘনিষ্ঠ। তবে, রাজনৈতিক পরিচয় বাদ দিয়ে ডাক্তারদের নেতা হিসেবে এই দু'জন ফের বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে। কেন্দ্রীয় সরকারের NMC বিলের বিরুদ্ধে দিল্লিতে IMA-র হেড কোয়ার্টারের এক ঘোষণার জেরে এই বিতর্কের সূত্রপাত। মঙ্গলবার, ৩০ জুলাই IMA-র ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট ডাক্তার শান্তনু সেন এবং IMA-র সেক্রেটারি জেনারেল ডাক্তার আর ভি অশোকানের নামে যৌথভাবে IMA-র প্রতিটি রাজ্যের প্রেসিডেন্ট এবং সেক্রেটারি, প্রতিটি রাজ্যের বিভিন্ন লোকাল ব্রাঞ্চেরর প্রেসিডেন্ট এবং সেক্রেটারি সহ IMA-র ন্যাশনাল ওয়ার্কিং কমিটির প্রতিটি সদস্য এবং দিল্লির হেডকোয়ার্টারের প্রতিটি পদাধিকারীর উদ্দেশ্যে একটি চিঠি ইস্যু করা হয়।
ওই চিঠিতে ঘোষণা করা হয়, বুধবার, ৩১ জুলাই সকাল ছ'টা থেকে পরের দিন সকাল ছ'টা পর্যন্ত জরুরি এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্র বাদে অন্য সব ক্ষেত্রে চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ রাখবেন গোটা দেশের ডাক্তাররা। এই ঘোষণা অনুযায়ী, এদেশের সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতাল, নার্সিং হোম এমনকী প্রাইভেট প্র্যাকটিসের জন্য ডাক্তারের চেম্বারও ডাক্তারদের এই ধর্মঘটের আওতায় রয়েছে। লোকসভায় NMC বিল, ২০১৯ পাস হয়ে যাওয়ার জেরে IMA-র ইমারজেন্সি অ্যাকশন কমিটি ২৪ ঘন্টার জন্য এভাবে চিকিৎসা পরিষেবা বন্ধ রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মঙ্গলবারের ওই চিঠিতে জানানো হয়, ইমারজেন্সি, ক্যাসুয়ালটি, আইসিইউ এবং এই সংক্রান্ত অন্যান্য পরিষেবা স্বাভাবিক রাখা হবে এই ২৪ ঘন্টায়। এই ঘোষণা অনুযায়ী, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের বহির্বিভাগ এমনকী, যে সব অস্ত্রোপচার পূর্ব নির্ধারিত অর্থাৎ, ডাক্তারি ভাষায় "কোল্ড কেস", যা জরুরি ভিত্তিতে হচ্ছে না, সে সব অস্ত্রোপচারও না হওয়ার কথা। আর, দেশজোড়া এমন আন্দোলনকে কেন্দ্র করে, ডাক্তারদের বিভিন্ন সংগঠনের সমালোচনার সম্মুখীন এখন IMA-র এ রাজ্যের অবস্থান।
বুধবারের এই কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ডাক্তার শান্তনু সেন মঙ্গলবার ইটিভি ভারতকে বলেছিলেন, "ন্যাশনাল মেডিকেল কমিশন বিলের বিরুদ্ধে ২০১৭ থেকে আমরা আন্দোলন করছি। কারণ, এই বিল গণতন্ত্রবিরোধী। ফেডেরাল স্ট্রাকচার বিরোধী। চিকিৎসক বিরোধী। সমাজের স্বার্থ বিরোধী। এই বিলটি মেডিকেল এডুকেশনকে কর্পোরেটের হাতে বিক্রি করে দেওয়ার চক্রান্ত করছে।" একইসঙ্গে তিনি বলেছিলেন, "সোমবার গোটা দেশের ১০ হাজার চিকিৎসক দিল্লিতে আন্দোলন করেছেন। ৩০০ চিকিৎসককে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে (এই ৩০০ জনের মধ্যে তিনিও ছিলেন)। এর পরেও গায়ের জোরে লোকসভায় কেন্দ্রীয় সরকার এই বিল পাশ করিয়েছে। এই বিল কোয়াক প্র্যাকটিসকে প্রমোট করছে। তার পরও জোর করে পাস করিয়েছে লোকসভায়। এর প্রতিবাদে বুধবার সারা দেশে ইমারজেন্সি এবং এসেন্সিয়াল সার্ভিস চালু থাকবে। বাকি সব সার্ভিস বন্ধ থাকবে। ২৪ ঘন্টার স্ট্রাইক।" সম্প্রতি NRS-এ জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিলেন ডাক্তার শান্তনু সেন। কিন্তু, বুধবার তাঁর এই ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘটের ডাকে, ডাক্তারদের বিভিন্ন সংগঠনের তরফে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে, দেশজুড়ে আন্দোলন বলেই কি শেষ পর্যন্ত ডাক্তারদের ধর্মঘটের কথা বলতে হয়েছে IMA-র ন্যাশনাল প্রেসিডেন্টকে? এ দিকে বুধবারের এই কর্মসূচির বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে মঙ্গলবার ডাক্তার নির্মল মাজি ইটিভি ভারতকে বলেছিলেন, "বুধবার আমরা প্রতীকী প্রতিবাদ করব। কাজ বন্ধ করে লক্ষ লক্ষ মানুষকে দুর্গতির মধ্যে ফেলে দিয়ে প্রতিবাদ নয়। প্রতিবাদ মন থেকে হবে। প্রতিবাদ চলবে। আমরা কালো ব্যাজ পড়ে প্রতিবাদ করব। আমাদের প্রতিবাদ নীরব। কাজে ফাঁকি দিয়ে প্রতিবাদ নয়।"
IMA-র হেড কোয়ার্টারের ঘোষণা অনুযায়ী বুধবারের কর্মসূচিকে সমর্থন করে ডাক্তারদের অন্য বিভিন্ন সংগঠন। পশ্চিমবঙ্গে ডাক্তারদের বিভিন্ন সংগঠনের তরফে, বিশেষ করে বহির্বিভাগে পরিষেবা না দেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। বুধবার কর্মসূচি শুরু হওয়ার পরে দেখা যায় কলকাতার বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে অন্যদিনের তুলনায় রোগীদের সংখ্যা কম। কলকাতার অন্য বিভিন্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে এই কর্মসূচি যতটা প্রভাব ফেলেছে, তার অনেক বেশি প্রভাব ফেলেছে কলকাতা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। কলকাতার এই মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বুধবার বহির্বিভাগের পরিষেবা কার্যত স্তব্ধ হয়ে গিয়েছিল। পূর্ব নির্ধারিত কিছু অস্ত্রোপচার হয়নি। বহির্বিভাগের জন্য টিকিট করেছেন রোগী, তবে তাঁকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া হয়েছে হাসপাতালের ইমার্জেন্সিতে। যদিও, এই হাসপাতালে চেস্ট মেডিসিন সহ অন্য দু'-একটি বহির্বিভাগে বুধবার পরিষেবা দিয়েছেন ডাক্তাররা। কলকাতা লাগোয়া কামারহাটির কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড সাগর দত্ত হাসপাতাল, এবং, কলকাতার বাইরে মালদহ, মুর্শিদাবাদ আর উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে বুধবারের এই কর্মসূচি বেশ ভালো প্রভাব ফেলেছে বলে জানিয়েছে চিকিৎসকদের বিভিন্ন সংগঠন।
তবে, বুধবারের এই কর্মসূচিতে, IMA-র বেঙ্গল হেডকোয়ার্টার অর্থাৎ, সর্বভারতীয় স্তরে ডাক্তারদের এই সংগঠনের রাজ্য শাখার অবস্থানকে ধিক্কার জানিয়েছে ডাক্তারদের বিভিন্ন সংগঠন। দেশ জোড়া এই আন্দোলনে IMA বেঙ্গলের এই অবস্থানের কোনও প্রভাব পড়বে? পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ডাক্তারদের একটি সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অফ হেলথ সার্ভিস ডক্টরস, ওয়েস্ট বেঙ্গল। এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক, ডাক্তার মানস গুমটা বলেন, "নিশ্চয়ই প্রভাব পড়বে। ন্যাশনাল IMA বা জাতীয় IMA এই NMC বিলের বিরুদ্ধে শুরু থেকে।যে ভূমিকা পালন করছে, এর জন্য IMA-র হেড কোয়ার্টারকে আমরা ধন্যবাদ জানাই যে, তারা অন্তত পথে নেমেছে। এবং, সারা দেশের সব চিকিৎসক সমাজ এবং জুনিয়র ডাক্তার, সবাইকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে।" একই সঙ্গে তিনি বলেন, "সব প্রতিবাদ সত্ত্বেও শেষ পর্যন্ত এই বিল যখন লোকসভায় পাস হল এবং, রাজ্যসভায় পাস করিয়ে আইনে রূপান্তরিত হওয়ার একটা মধ্যবর্তী সময়ে দেশ জুড়ে যে আন্দোলনের ডাক IMA হেডকোয়ার্টার দিয়েছে, তাতে আমাদের আশা ছিল যে, আমাদের রাজ্যের IMA সদর্থক ভূমিকা পালন করবে এবং, একই সঙ্গে পা মিলিয়ে এই আন্দোলনে শামিল হবে। কিন্তু, আমাদের দুর্ভাগ্য। আমাদের বহু ডাক্তার সংগঠন, তারা হয়তো IMA-র মতো সংখ্যায় এত ভারী নয়, তারা এই আন্দোলনের সমর্থনে এগিয়ে এসে সারা পশ্চিমবঙ্গে সরকারি-বেসরকারি সব জায়গায় চিকিৎসকদের সমবেত করে প্রতিবাদ আন্দোলনে শামিল হল। অথচ, আমাদের রাজ্য IMA, বলতে নেই একদমই নিষ্ক্রিয় থেকে গেল। তাদের ভূমিকা একটি চিঠি দিয়ে, সোশ্যাল মিডিয়ায় কয়েকটি পোস্ট করে তার মধ্যেই তারা সীমাবদ্ধ রাখল।"
সরকারি ডাক্তারদের এই সংগঠনের এই নেতা বলেন, "যদি এরকম ভাবে ঐক্যকে নষ্ট করে আমাদের রাজ্য IMA, সেটা যেমন ন্যাক্কারজনক, ধিক্কারজনক। একই ভাবে এটা এই আন্দোলনের ক্ষতি করবে বলে আমাদের মনে হয়। সংগঠনগত ভাবে রাজ্য IMA-র এই ভূমিকার নিন্দা করছি আমরা।" তিনি বলেন, "এটা কেন হচ্ছে, তাঁদের নেতৃত্বের মধ্যে কোনও দলাদলি আছে কি না, সেটা আমরা জানি না। থাকাটাই হয়তো স্বাভাবিক, সেটা আমরা শুনতে পাই। কিন্তু, IMA তো শুধু এই দুই নেতার সংগঠন নয়, সারা পশ্চিমবঙ্গ এবং সারা দেশের সব স্তরের চিকিৎসকদের সংগঠন।।সব রাজনৈতিক বিশ্বাসের লোকরা এখানে থাকেন। ফলে এ রকম একটি ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে নিষ্ক্রিয় থাকাটা অত্যন্ত নিন্দাজনক, ধিক্কারজনক। আমাদের সংগঠন, আমরা বলেছি, আপনাদের এই ভূমিকাকে আমরা নিন্দা করলাম।"
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি ডাক্তারদের অন্য একটি সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম। এই সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক, ডাক্তার সজল বিশ্বাস বলেন, 'আন্দোলনের ক্ষেত্রে এর প্রভাব পড়বে। কারণ বিভিন্ন ব্রাঞ্চ যদি আলাদা আলাদা সিদ্ধান্ত নেয়, তা হলে সেই আন্দোলনের শক্তিটা কমে যায়। জয়যুক্ত হওয়ার জন্য শক্তি অর্জন করতে পারে না আন্দোলন। স্বাভাবিকভাবে এটা আন্দোলনের ক্ষতি করে।" একই সঙ্গে তিনি বলেন, "আমরা দেখতে পাচ্ছি যে, IMA-র বর্তমানে যা কর্মপদ্ধতি বা নিষ্ক্রিয়তা বিভিন্ন বিষয়ে আমরা দেখতে পাই, সেখানে দীর্ঘদিনের ইন্যাক্টিভিটির জন্য তাদের যে ইউনিটি, বিভিন্ন রাজ্যে যে সংগঠনগুলি রয়েছে, তার ইউনিটি অনেকটা অংশ হলেও ব্রেক করে গিয়েছে।" এই ডাক্তার-নেতা বলেন, "এটা তাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। সাংগঠনিক ব্যাপার। আমরা এই বিষয়ে বলতে পারি না। কিন্তু, এটা অবশ্যই, বিভিন্ন ব্রাঞ্চ যদি আলাদা আলাদা কথা বলে, তা হলে আন্দোলনের শক্তি কিন্তু অনেকটা কমে যায়।
আমরা যেটা বলতে চাই, সমস্ত চিকিৎসক সমাজ দল, মত, বিভিন্ন সংগঠন নির্বিশেষে, এমনকী সাধারণ মানুষের কাছে আমরা আবেদন জানাতে চাই, জনসাস্থ্য এবং মেডিকেল শিক্ষার উপরে এই যে ভয়ংকর আক্রমণ (NMC বিল), এর বিরুদ্ধে সবাই যেন এক ডাকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাস্তায় নামেন। সবাই যেন প্রতিবাদ করেন। আমরা সেই আন্দোলনই করতে চাই।"
IMA-র দিল্লি হেড কোয়ার্টার এবং বেঙ্গল হেড কোয়ার্টারের এমন দুই অবস্থানের বিষয়ে ডাক্তার নির্মল মাজির কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, "কখনোই আলাদা নয়। আমি ডাক্তার সেনের সঙ্গে কথা বলেছি। এবং, আমরা দু'জনে মিলেই এই বিচার করেছি। যেহেতু আমাদের এখানে মুখ্যমন্ত্রী এবং এখানকার সরকার মেডিকেল ফ্যাটারনিটির ফ্রেন্ড, ফিলোসফার, গাইড। এবং, NMC বিলের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক প্রতিবাদ এই রাজ্য থেকে মুখ্যমন্ত্রী করেছেন। এখানে জনমুখী একটা স্বাস্থ্যব্যবস্থা রয়েছে, যেটা নজিরবিহীন, একটা নবজাগরণের সূচনা করেছে। পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্যসংস্কৃতি হিসাবে এর আগেও IMA-র হেড কোয়ার্টারের পরিপ্রেক্ষিতে, আমরা এখানে চিকিৎসা ব্যবস্থা, পরিষেবাকে আঘাত না দিয়ে আন্দোলন চালিয়েছি।" বুধবার কালো ব্যাজ পরে তাঁরা প্রতিবাদ করেছেন। বিভিন্ন পোস্টার লিখে জনগণকে সচেতন করেছেন। এ কথা জানিয়ে ডাক্তার নির্মল মাজি বলেন, "এটা দীর্ঘমেয়াদী আন্দোলন। সংখ্যাতত্ত্বের বিচারে কেন্দ্রীয় সরকার এই বিল লোকসভায় পাস করিয়েছে এবং, রাজ্যসভায়ও পাস করিয়ে দেবে। এই বিরুদ্ধে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে। লাগাতার আমরা রোগীদের যদি চিকিৎসা না করে তাঁদের মৃত্যুর মুখে প্রোথিত করি, মানুষ-সমাজ-সময়-দেশ-কাল আমাদের চিকিৎসক সমাজকে ক্ষমা করবে না।"
তিনি বলেন, "বাংলা বরাবরই দেশকে পথ দেখিয়েছে। গোখেল সাহেব বলতেন, আজ বাংলা যা ভাবছে, দেশ তাই ভাববে। আর, আমরা বলছি, আজ বাংলা যা করছে, দেশ তা আগামী দিনে করবে।" একই সঙ্গে ডাক্তার নির্মল মাজি বলেন, "ভোগান্তি যাতে না হয়, তার জন্য আমরা পশ্চিমবঙ্গের চিকিৎসক সমাজ যতটা সম্ভব চেষ্টা করছি। মানবিক মুখের অঙ্গীকার আমাদের মেডিকেলে এথিকস। চিকিৎসক হিসাবে আমাদের যে এথিকস, যে ধর্ম, মানবসেবা, আমরা কোনও রোগীকে মৃত্যুর মুখে ফেলে দিয়ে আন্দোলন করতে পারি না।" বুধবারের ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, IMA-র হেড কোয়ার্টারের অবস্থান এবং পশ্চিমবঙ্গে IMA-র হেড কোয়ার্টারের এই নীরব প্রতিবাদের অবস্থানের কারণে দেশের অন্যান্য প্রান্তের এই আন্দোলনের উপরে কোনও প্রভাব পড়বে? তিনি বলেন, "সব জায়গাতেই নীরব প্রতিবাদ। ডাক্তাররা তো আর চটকল কর্মীদের ধর্মঘটী নয় যে, তাঁরা জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ করে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করবেন। তাদের ধরনটা অন্য। ডাক্তাররা ইন্টেলেক্ট, ডাক্তাররা সমাজ সেবা করেন, ডাক্তাররা মানুষের সেবা করেন, ডাক্তাররা মৃত্যুর মুখে প্রোথিত মানুষকে বাঁচায়। সুতরাং, তাঁদের এক-এক জনের প্রতিবাদে ধরন এক-এক রকম।" ডাক্তার নির্মল মাজি বলেন, "কেউ যেন রোগী পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হয়ে ফিরে না যায়। বাংলার চিকিৎসক সমাজ, ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের বঙ্গীয় শাখা, কলকাতা শাখা, আমরা মনে করি, চিকিৎসকদের একমাত্র ধর্ম, একমাত্র এথিকস হচ্ছে আমাদের রোগীদের পরিষেবা ঠিকমতো সংরক্ষিত করা। প্রতিবাদ থাকবে। আন্দোলন থাকবে। প্রতিরোধ থাকবে। এটা দীর্ঘমেয়াদি আন্দোলন। একদিনে ফুরিয়ে যাবে না। এটা লাগাতার চলবে।" যদিও, এই বিষয়ে ডাক্তার শান্তনু সেনের বক্তব্য জানতে চেয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। তবে, বুধবার তাঁর বক্তব্য মেলেনি।
Conclusion:তবে, NMC বিলের বিরোধিতা করে ডাক্তার নির্মল মাজি বুধবার বলেন, "আমরা মনে করি, আরও বেশি ঐক্যবদ্ধভাবে ইন্ডিয়ান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন সর্বাত্মকভাবে শুধু সরকারি দল নয়, সরকারবিরোধী সদস্য যাঁরা আছেন, আমরা একযোগে, একই সঙ্গে সহবস্থান করছি। একই সঙ্গে প্রতিবাদ সংগঠিত করছি।" তিনি বলেন, "চিকিৎসক সমাজ বিরোধী যে আঘাত (NMC বিল), এই আঘাত নজিরবিহীন। এটা গণতন্ত্রের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতে দেওয়ার কেন্দ্রীয় সরকারের একটি তুঘলকি আইনের মাধ্যমে একটি অপচেষ্টা। আমরা মনে করি, দেশের ফেডেরাল সিস্টেম এতে ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে।" একই সঙ্গে তিনি বলেন, "শুধু মেধা নয়, টাকা হচ্ছে ভূমিকা। এর পরে দেখবেন ৫ কোটি টাকা দিয়ে ডাক্তারিতে চান্স পাবে, একটা মেডিকেল কলেজ পারমিশন পাবে কয়েকশো কোটি টাকার মাধ্যমে। একটা ব্যবসা, কিছু ব্যবসায়ী, অবৈজ্ঞানিক, কিছু অসাংবিধানিক, কিছু শক্তি, যারা ডাক্তারই নয় অচিকিৎসক, তাঁরা শুধুমাত্র চাটুকারবৃত্তি করে, পদলেহন করে কেন্দ্রীয় সরকারের স্বাস্থ্যমন্ত্রীর স্নেহভাজন হওয়ার সুবাদে সারা দেশে মেডিকেল স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ন্ত্রণ করবে। এটা ভারতের চিকিৎসকসমাজ, বাংলার চিকিৎসকসমাজ কোনও মতেই মেনে নেবে না।"
_______
বাইট:
সজল বিশ্বাস
wb_kol_03a_nmc_ima_delhi_bengal_byte_7203421
মানস গুমটা
wb_kol_03b_nmc_ima_delhi_bengal_byte_7203421
নির্মল মাজি
wb_kol_03c_nmc_ima_delhi_bengal_byte_7203421
wb_kol_03d_nmc_ima_delhi_bengal_byte_7203421
Last Updated : Aug 1, 2019, 10:25 AM IST