ETV Bharat / city

WB Budget 22-23 : চন্দ্রিমার প্রথম বাজেটে গ্রামীণ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে জোর

রাজ্যের প্রথম মহিলা অর্থমন্ত্রী হিসেবে বিধানসভায় বাজেট পেশ চন্দ্রিমার ৷ বাজেটকে জনমুখী বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Bengal CM Mamata Banerjee) ৷

chandrima bhattacharya table the budget
চন্দ্রিমার প্রথম বাজেটে গ্রামীণ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানে জোর
author img

By

Published : Mar 11, 2022, 9:28 PM IST

কলকাতা, 11 মার্চ : রাজ্যে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, সামাজিক প্রকল্পের পাশাপাশি তিনি এবার কর্মসংস্থানেও জোর দিতে চান ৷ পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভালই জানেন, মানুষের যে বিপুল ভোটে জিতে তিনি ফের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন করেছেন, তাঁদের আকাঙ্খা পূরণ করতে না-পারলে সেই আশীর্বাদ ক্ষোভে রূপান্তরিত হতে বেশি সময় লাগবে না ৷ এই মুহূর্তে রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের মূল দাবি কর্মসংস্থান ৷

আর সে কারণেই শুক্রবার রাজ্য বাজেট (WB Budget 2022-2023) থেকে 1 লক্ষ কুড়ি হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিলেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য । আগামী বছরই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট ৷ সে কারণেই এ দিন বাজেট পেশ করতে গিয়ে গ্রামীণ উন্নয়নকেও পাখির চোখ করলেন অর্থমন্ত্রী । অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এদিন ঘোষণা করেন(Chandrima Bhattacharya Presents Budget), 2024 সালের মধ্যে রাজ্যের সব গ্রামে পৌঁছে যাবে পরিশ্রুত পানীয় জল, 'জলস্বপ্ন' প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিটি বাড়িতে পরিশ্রুত পানীয় জল যাবে ৷

এবারের বাজেটে গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ৷ 2022-23 অর্থবর্ষে পঞ্চায়েত দফতরের জন্য বরাদ্দ হয়েছে 25 হাজার 181 কোটি টাকা ৷ রাজ্যে তৃতীয়বার তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর গত বছর 7 জুলাই যে বাজেট পেশ করা হয়েছিল, সেখানে এই দফতরের জন্য যে বরাদ্দ করা হয়েছিল তার থেকে এবারের বরাদ্দ বেশি ৷ গত বছর এই বরাদ্দের পরিমাণ ছিল 23 হাজার 983.27 কোটি টাকা ৷ এবার বাজেটে গ্রামীণ পরিকাঠামোর উন্নয়নের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে । মুখ্যমন্ত্রী বারবার যে কথা বলেন এদিন তার পুনরাবৃত্তি শোনা গিয়েছে অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের গলাতেও । তিনি জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করা এই সরকারের প্রধান লক্ষ্য । এই পথে কৃষি ও শিল্পের মেলবন্ধন চান তাঁরা । আন্তর্জাতিক সংকট ও করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের ওপর আর্থিক চাপ কমোনো এবং রাজ্যে শিল্পায়ন ও কর্ম সংস্থানের লক্ষ্যকে সামনে রেখেই এই বাজেট তৈরি হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন ৷

আরও পড়ুন : ঋণ, আবগারি শুল্ক এবং কেন্দ্রীয় অনুদানের নির্ভরতা কাটানোর দিশা নেই বাজেটে

অতিমারি ও মূল্যবৃদ্ধির চাপে জর্জরিত সাধারণ মানুষকে কিছুটা রেহাই দিতে এবারের রাজ্য বাজেটে নতুন কিছু করছাড়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে । ইতিমধ্যেই চালু থাকা বেশ কিছু ছাড়ের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে । চা শিল্পকে উৎসাহ দিতে বিশেষ করে, ছোট চা বাগানগুলিকে সুবিধা দিতে বাজেটে কিছু গ্রামীণ সেস এবং কৃষি আয়কর মুকুবের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে । বেসরকারি প্রথমিক স্কুলগুলিকে উত্সাহ দিতে 1973 সালের রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা আইনের অধীনে শিক্ষাসেসও মকুব করার কথা বলা হয়েছে ।

এছাড়াও, পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে বৈদ্যুতিক ও সিএনজি চালিত গাড়ির ব্যবহারে উত্‍সাহ দিতে আগামী দু'বছরের জন্য এই ধরণের দু'চাকা ও চার চাকার গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ফি ও রোড ট্যাক্স মুকুব করার প্রস্তাব রয়েছে বাজেটে । জমি বাড়ির স্ট্যাম্প ডিউটিতে চলতি ছাড়ের মেয়াদ আরও ছ'মাস বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে রাজ্য বাজেটে । স্ট্যাম্প ডিউটিতে 2 শতাংশ এবং সার্কেল রেটে 10 শতাংশ ছাড় আগামী 30 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে । অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন দেশের মধ্যে সর্বাধিক সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প এরাজ্যেই চালু রয়েছে । আগামী দিনে আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে এর আওতায় আনা হবে । আরও 8 লক্ষ মহিলাকে বিধবা পেনশনের আওতায় আনার লক্ষমাত্রা নিয়েছে রাজ্য । এর জন্য 960 কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে ।

আরও পড়ুন : রাজ্য বাজেট শুধু তৃণমূলের লোকেদের মুখে হাসি ফোটাবে, কটাক্ষ সুকান্তের

1 কোটি 53 লক্ষ মহিলাকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে প্রতি মাসে অর্থ সাহায্য করতে 10 হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে । এদিন বাজেট পেশ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, "তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে কর ব্যবস্থার সরলীকরণের মাধ্যমে অতিমারীর প্রভাব সত্ত্বেও বিগত দুবছরে রাজ্যে রাজস্ব আদায় সন্তোষজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে । রাজ্যের আর্থিক সীমাবদ্ধতা ও কেন্দ্রীয় সরকারের নানা বিমাতৃসুলভ আচরণ সত্ত্বেও দক্ষ ও সক্রিয় প্রশাসনিক পদক্ষেপের মধ্যে দিয়ে দুর্যোগ কাটিয়ে আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে ।" অর্থমন্ত্রী জানান, 2021-22 আর্থিক বছরে দেশের নেতিবাচক আর্থিক বৃদ্ধির প্রেক্ষিতও রাজ্যে ইতিবাচক আর্থিক বৃদ্ধি ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে । আগামী দিনে রাজ্যের অর্থনীতি আরও দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাবে । বাজেটে অর্থমন্ত্রী 12.82 শতাংশ অর্থনৈতিক বৃদ্ধির পূর্বাভাষ দিয়েছেন । চন্দ্রিমার বাজেটকে এদিন জনমুখী বাজেট বলে আখ্যা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বিশেষ করে যেভাবে রাজ্যের সামাজিক প্রকল্পগুলিকে চালিয়ে নিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও জিএসডিপির হার বৃদ্ধি পেয়েছে, তার প্রশংসা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷

কলকাতা, 11 মার্চ : রাজ্যে তৃতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, সামাজিক প্রকল্পের পাশাপাশি তিনি এবার কর্মসংস্থানেও জোর দিতে চান ৷ পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভালই জানেন, মানুষের যে বিপুল ভোটে জিতে তিনি ফের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন করেছেন, তাঁদের আকাঙ্খা পূরণ করতে না-পারলে সেই আশীর্বাদ ক্ষোভে রূপান্তরিত হতে বেশি সময় লাগবে না ৷ এই মুহূর্তে রাজ্যের বেকার যুবক-যুবতীদের মূল দাবি কর্মসংস্থান ৷

আর সে কারণেই শুক্রবার রাজ্য বাজেট (WB Budget 2022-2023) থেকে 1 লক্ষ কুড়ি হাজার মানুষের কর্মসংস্থানের প্রতিশ্রুতি দিলেন অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য । আগামী বছরই রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট ৷ সে কারণেই এ দিন বাজেট পেশ করতে গিয়ে গ্রামীণ উন্নয়নকেও পাখির চোখ করলেন অর্থমন্ত্রী । অর্থ দফতরের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এদিন ঘোষণা করেন(Chandrima Bhattacharya Presents Budget), 2024 সালের মধ্যে রাজ্যের সব গ্রামে পৌঁছে যাবে পরিশ্রুত পানীয় জল, 'জলস্বপ্ন' প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতিটি বাড়িতে পরিশ্রুত পানীয় জল যাবে ৷

এবারের বাজেটে গ্রামীণ এলাকার উন্নয়নকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ৷ 2022-23 অর্থবর্ষে পঞ্চায়েত দফতরের জন্য বরাদ্দ হয়েছে 25 হাজার 181 কোটি টাকা ৷ রাজ্যে তৃতীয়বার তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর গত বছর 7 জুলাই যে বাজেট পেশ করা হয়েছিল, সেখানে এই দফতরের জন্য যে বরাদ্দ করা হয়েছিল তার থেকে এবারের বরাদ্দ বেশি ৷ গত বছর এই বরাদ্দের পরিমাণ ছিল 23 হাজার 983.27 কোটি টাকা ৷ এবার বাজেটে গ্রামীণ পরিকাঠামোর উন্নয়নের পাশাপাশি কর্মসংস্থানের ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে । মুখ্যমন্ত্রী বারবার যে কথা বলেন এদিন তার পুনরাবৃত্তি শোনা গিয়েছে অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্যের গলাতেও । তিনি জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করা এই সরকারের প্রধান লক্ষ্য । এই পথে কৃষি ও শিল্পের মেলবন্ধন চান তাঁরা । আন্তর্জাতিক সংকট ও করোনা অতিমারি পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষের ওপর আর্থিক চাপ কমোনো এবং রাজ্যে শিল্পায়ন ও কর্ম সংস্থানের লক্ষ্যকে সামনে রেখেই এই বাজেট তৈরি হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন ৷

আরও পড়ুন : ঋণ, আবগারি শুল্ক এবং কেন্দ্রীয় অনুদানের নির্ভরতা কাটানোর দিশা নেই বাজেটে

অতিমারি ও মূল্যবৃদ্ধির চাপে জর্জরিত সাধারণ মানুষকে কিছুটা রেহাই দিতে এবারের রাজ্য বাজেটে নতুন কিছু করছাড়ের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে । ইতিমধ্যেই চালু থাকা বেশ কিছু ছাড়ের মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব রয়েছে । চা শিল্পকে উৎসাহ দিতে বিশেষ করে, ছোট চা বাগানগুলিকে সুবিধা দিতে বাজেটে কিছু গ্রামীণ সেস এবং কৃষি আয়কর মুকুবের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে । বেসরকারি প্রথমিক স্কুলগুলিকে উত্সাহ দিতে 1973 সালের রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা আইনের অধীনে শিক্ষাসেসও মকুব করার কথা বলা হয়েছে ।

এছাড়াও, পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণে বৈদ্যুতিক ও সিএনজি চালিত গাড়ির ব্যবহারে উত্‍সাহ দিতে আগামী দু'বছরের জন্য এই ধরণের দু'চাকা ও চার চাকার গাড়ির রেজিস্ট্রেশন ফি ও রোড ট্যাক্স মুকুব করার প্রস্তাব রয়েছে বাজেটে । জমি বাড়ির স্ট্যাম্প ডিউটিতে চলতি ছাড়ের মেয়াদ আরও ছ'মাস বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে রাজ্য বাজেটে । স্ট্যাম্প ডিউটিতে 2 শতাংশ এবং সার্কেল রেটে 10 শতাংশ ছাড় আগামী 30 সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বজায় রাখার কথা বলা হয়েছে । অর্থমন্ত্রী জানিয়েছেন দেশের মধ্যে সর্বাধিক সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প এরাজ্যেই চালু রয়েছে । আগামী দিনে আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে এর আওতায় আনা হবে । আরও 8 লক্ষ মহিলাকে বিধবা পেনশনের আওতায় আনার লক্ষমাত্রা নিয়েছে রাজ্য । এর জন্য 960 কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে ।

আরও পড়ুন : রাজ্য বাজেট শুধু তৃণমূলের লোকেদের মুখে হাসি ফোটাবে, কটাক্ষ সুকান্তের

1 কোটি 53 লক্ষ মহিলাকে লক্ষ্মীর ভাণ্ডার প্রকল্পে প্রতি মাসে অর্থ সাহায্য করতে 10 হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব রাখা হয়েছে । এদিন বাজেট পেশ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, "তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারে কর ব্যবস্থার সরলীকরণের মাধ্যমে অতিমারীর প্রভাব সত্ত্বেও বিগত দুবছরে রাজ্যে রাজস্ব আদায় সন্তোষজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে । রাজ্যের আর্থিক সীমাবদ্ধতা ও কেন্দ্রীয় সরকারের নানা বিমাতৃসুলভ আচরণ সত্ত্বেও দক্ষ ও সক্রিয় প্রশাসনিক পদক্ষেপের মধ্যে দিয়ে দুর্যোগ কাটিয়ে আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখা সম্ভব হয়েছে ।" অর্থমন্ত্রী জানান, 2021-22 আর্থিক বছরে দেশের নেতিবাচক আর্থিক বৃদ্ধির প্রেক্ষিতও রাজ্যে ইতিবাচক আর্থিক বৃদ্ধি ধরে রাখা সম্ভব হয়েছে । আগামী দিনে রাজ্যের অর্থনীতি আরও দ্রুত হারে বৃদ্ধি পাবে । বাজেটে অর্থমন্ত্রী 12.82 শতাংশ অর্থনৈতিক বৃদ্ধির পূর্বাভাষ দিয়েছেন । চন্দ্রিমার বাজেটকে এদিন জনমুখী বাজেট বলে আখ্যা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । বিশেষ করে যেভাবে রাজ্যের সামাজিক প্রকল্পগুলিকে চালিয়ে নিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও জিএসডিপির হার বৃদ্ধি পেয়েছে, তার প্রশংসা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.