কলকাতা, 13 এপ্রিল : মুকুল রায়সহ গতকাল BJP নেতাদের বিক্ষোভের জেরে পদক্ষেপ নিল মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তর। এখন থেকে অনুমতি ছাড়া কোনও রাজনৈতিক দলের নেতা CEO-র দপ্তরের মূল ফটকের ভেতরে ঢুকতে পারবেন না। গতকাল মুকুল রায়সহ একগুচ্ছ BJP নেতা ঢুকে পড়েন CEO-র চেম্বারে। মাটিতে বসে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। তারপরই এই সিদ্ধান্ত নেয় মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তর।
প্রথম দফার নির্বাচনে দু'টি লোকসভা কেন্দ্রে ভোট লুট হয়েছে। এই অভিযোগ তুলে গতকাল মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দপ্তরে বিক্ষোভ দেখান BJP নেতা ও কর্মীরা। উপস্থিত ছিলেন মুকুল রায়, জয়প্রকাশ মজুমদার, শঙ্কুদেব পন্ডা, রাকেশ সিংসহ অন্যরা। CEO-র দপ্তরের সদর দরজা বন্ধ করে দিয়ে ঘরের মেঝেতে বসেই বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। অতিরিক্ত মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক সঞ্জয় বসুর অপসারণের দাবিও তোলেন। চলতে থাকে তর্ক-বিতর্ক। BJP নেতারা বলেন, "আজ এর শেষ দেখে যাব।" উত্তর আসে, "দেখছি।" অফিসরুমের কার্পেটে বসা মুকুলবাবু বলেন, "না দেখছি নয়। এক ঘণ্টার মধ্যে শেষ দেখে যাব। দ্বিতীয় দফায় যদি আপনাদের পর্যাপ্ত বাহিনী না থাকে, তাহলে এটা আমাদের লিখিত দাবি লোকসভা নির্বাচন পিছিয়ে দিন। আমি আবার বলছি রাজ্য পুলিশকে রেখে কোনও জায়গায় ভোট করা যাবে না। যা 2009 হয়নি 2014 হয়নি আর 2016 হয়নি। তাই স্টেট পুলিশকে রেখে কোনও ভোট করা যাবে না।"
এরপর জয়প্রকাশ মজুমদার আবার বলেন, "কোচবিহার আর ওখানাকার যে রিপোর্ট আছে সেই বিষয়ে আপনি নির্দেশ দিতে পারেন। আপনার অধিকার আছে।" পরে মুকুল বলেন, "আপনি তো আমাদের কথাগুলি শুনলেন কিন্তু এগুলি নিয়ে আপনার কাছে কোনও রেকর্ড থাকবে ? পাঁচ মিনিট বাদে আমি চলে যাব। কোনও সেক্রেটারি এসে বসে এখানে। কী কী বলছে তা নোট করে। এভাবে সম্ভব? আপনি তো শৈবাল বর্মণ স্যারকে রেখে দিয়েছেন ঢালের মতো। জানেন তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক ভালো।" পরে কমিশনের আধিকারিক বলেন, "আমাদের কাছে এই বিষয়ে অভিযোগ এসেছে। দেখছি।"
এই ঘটনার জেরে ক্ষুব্ধ হয় মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তর। অনুমতি ছাড়াই CEO-র চেম্বারে যেভাবে একগুচ্ছ BJP নেতা ঢুকে পড়েন, তাঁর সিকিউরিটি নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। তারপরেই আজ কলকাতা পুলিশের ডেপুটি কমিশনার (সেন্ট্রাল)কে ডেকে পাঠানো হয়। বৈঠক হয় তাঁর সঙ্গে। সেই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, এখন থেকে যে কেউ মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তরের মূল ফটকের ভেতরে ঢুকতে পারবেন না। অনুমতি থাকলে তবেই ঢোকা যাবে। পাশাপাশি মুখ্য নির্বাচন আধিকারিকের দপ্তরের সিকিউরিটিও বাড়ানো হয়েছে। সূত্র জানাচ্ছে আজ মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ় আফতাব চিঠি লিখছেন দিল্লির নির্বাচন সদনে। নির্বাচন সদনের অনুমতি এলে নেওয়া হবে আইনি ব্যবস্থাও।