কলকাতা, 16 সেপ্টেম্বর: এখনও ওঁদের ভবিষ্যত ঘিরে রয়েছে অসংখ্য়া প্রশ্ন ! অথচ, সেসবের উত্তর অধরা ! ওঁরা ইউক্রেন ফেরত ডাক্তারির পড়ুয়া ৷ একটা যুদ্ধ (Ukraine Russia War) যাঁদের পুরো জীবনটাই ওলট-পালট করে দিয়েছে ৷ প্রাণ নিয়ে দেশে ফিরতে পারলেও অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ ৷ আদৌ পড়াশোনা শেষ হবে কি না, ডাক্তারির ডিগ্রি মিলবে কি না, এসব ভেবেই ঘুম উড়েছে তাঁদের ৷ প্রথমে বলা হয়েছিল, যে পড়ুয়ারা যুদ্ধের কারণে ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছেন, তাঁদের এখানকার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজে পড়াশোনা করার সুযোগ দেওয়া হবে ৷ কিন্তু, এখনও পর্যন্ত সার্বিকভাবে তেমন কোনও উদ্যোগ নজরে পড়ছে না ৷ এখন তাহলে উপায় কী ? জানা নেই মহম্মদ সইফ আলির মতো মেধাবী তরুণদের ৷
অন্য অনেকের মতোই দু'চোখে চিকিৎসক হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ইউক্রেন পাড়ি দিয়েছিলেন সইফ ৷ কিন্তু, সেই স্বপ্ন ক্রমে ভাঙতে শুরু করেছে ৷ ইটিভি ভারতের প্রতিনিধিকে তিনি জানান, "ইউক্রেনের তরফ থেকে আমাদের ভার্চুয়াল ক্লাস করানো হচ্ছে ৷ তবে সমস্যা হচ্ছে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস নিয়ে ৷ সেটা করা সম্ভব হচ্ছে না ৷ আর সবথেকে বড় সমস্যা হল, এই ভার্চুয়াল ক্লাসকে আমাদের দেশে স্বীকৃতি দেওয়া হচ্ছে না ৷" বদলে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রস্তাব, ইউক্রেনের পরিবর্তে অন্য কোনও দেশে গিয়ে ডাক্তারি পড়ুক ইউক্রেন ফেরত এই ভারতীয় ছাত্রছাত্রীরা !
আরও পড়ুন: জমি ফেরত নিচ্ছে ইউক্রেন ! 3 হাজার বর্গকিলোমিটার পুনরুদ্ধার জেলেনস্কির সেনার
অন্যদিকে, পড়ুয়াদের দাবি, ভারতেরই বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাঁদের পড়ার সুযোগ করে দেওয়া হোক ৷ এমনকী, এই দাবিতে শীর্ষ আদালতে (Supreme Court) মামলাও রুজু করেছেন ইউক্রেন ফেরত ডাক্তারি পড়ুয়ারা ৷ সেখানে কেন্দ্রের তরফে জানানো হয়েছে, হঠাৎ করে 18 হাজার পড়ুয়াকে ভর্তি করানোর মতো পরিকাঠামো ভারতে নেই ৷ তাছাড়া, এই পড়ুয়ারা সকলেই ধনী পরিবারের সন্তান ৷ তাই তাঁরা বরং অন্য দেশে গিয়ে নিজেদের ডাক্তারির পাঠ শেষ করুন ৷
এদিকে, এই প্রেক্ষাপটে কেবলমাত্র পশ্চিমবঙ্গেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ইউক্রেন ফেরত ডাক্তারি পড়ুয়াদের জন্য রাজ্যে প্র্য়াকটিক্যাল ক্লাস চালু করার কথা ঘোষণা করেন ৷ সেই ক্লাস শুরুও হয়ে গিয়েছে ৷ কিন্তু, এক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট পড়ুয়ারা থিয়োরি ক্লাস করছেন অনলাইনে ৷ যাকে ভারত সরকার স্বীকৃতি দেবে না-বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে ৷ এই অবস্থায় ফাঁপড়ে পড়েছেন ওই 18 হাজার ডাক্তারি পড়ুয়া ৷ তাঁরা সরকারকে মূলত দু'টি প্রস্তাব দিয়েছেন ৷ প্রথমত, ইউক্রেনের ভার্চুয়াল পঠনপাঠনকে স্বীকৃতি দেওয়া হোক ৷ এবং দ্বিতীয়ত, ফাইনাল ইয়ারের প্রায় 6 হাজার পড়ুয়া বাদে বাকি 12 হাজার ছাত্রছাত্রীর জন্য দেশের মেডিক্য়াল কলেজগুলিতে প্র্য়াকটিক্যাল ক্লাসের ব্যবস্থা করা হোক ৷
তবে, কেন্দ্রীয় সরকার এই দাবি মেনে নেবে, এতটা আশা করতে পারছেন না ইউক্রেন ফেরত ডাক্তারি পড়ুয়ারা (Indian Medical Students from Ukraine) ৷ আর তার জেরেই বাড়ছে ভবিষ্যৎ নিয়ে আশঙ্কা ৷