কলকাতা, 22 জুন : সারদা মামলায় (Saradha Chitfund Scam) আমানতকারীদের টাকা ফেরাতে কমিটি গঠনের ভাবনা কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) । ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল ও বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে আগামী 29 জুন এই মামলার শুনানি রয়েছে ৷ তার পর আদালত সিদ্ধান্ত নেবে যে আদৌ এই ধরনের কমিটি গঠন করা যেতে পারে কি না ।
এই ব্যাপারে আমানতকারীদের আইনজীবী শুভাশিস চক্রবর্তী জানালেন, সারদা সংস্থায় ক্ষতিগ্রস্তদের টাকা ফেরাতে আদালতের নির্দেশেই শ্যামল সেন কমিশন করা হয়েছিল । কিন্তু সেই কমিশনের রিপোর্ট এখনও আদালতের কাছে জমা পড়েনি । সেই রিপোর্ট আগামী 29 জুনের মধ্যে সরকারকে আদালতে জমা দিতে বলা হয়েছে ।
আরও পড়ুন : মিঠুনের বিরুদ্ধে মামলা বিচারপতি কৌশিক চন্দের বেঞ্চ থেকে সরানোর আবেদন
পাশাপাশি শ্যামল সেন কমিশনকে সারদায় প্রতারিতদের টাকা ফেরতে রাজ্য সরকার 287 কোটি টাকা দিয়েছিল । কিন্তু তার মধ্যে প্রায় 138 কোটি টাকার মতো আমানতকারীদের বিভিন্ন কারণে ফেরত দেওয়া হয়নি । এছাড়াও কমিশনের কাছে সারদার সম্পত্তি বিক্রি করে প্রায় আড়াই কোটি টাকার মতো উদ্ধার হয়েছিল । সেই টাকাও ছিল । কিন্তু শ্যামল সেন কমিশন বন্ধ করে দেওয়ার পর সেই টাকা বর্তমানে রয়েছে রাজ্য সরকারের তহবিলে ।
সেই টাকা কিভাবে রাজ্য সরকার ফেরত দেবে 29 জুনের মধ্যে তা জানাতে বলেছে আদালত । আর সিবিআই সারদার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার পর তাদের কাছে কী পরিমাণ অর্থ রয়েছে, এই সমস্ত বিষয়েই 29 জুনের মধ্যে আদালতকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ । ওইদিনই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখার পর সাধারণ প্রতারিত আমানতকারীদের টাকা কিভাবে ফেরত দেওয়া যায়, সেই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন । এইখানেই প্রধান বিচারপতি ডিভিশন বেঞ্চে আজ কমিটি গঠনের প্রস্তাব উঠেছে । যে কমিটি ছিল সেই কমিটিকেও যদি পুনরায় কার্যকরী করা যায়, সেই বিষয়টিও খতিয়ে দেখবে আদালত ।
আরও পড়ুন : সুপ্রিম কোর্টে নারদ মামলার শুনানি থেকে নিজেকে সরালেন বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু
গত 4 জুন চিটফান্ড সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দাল জানিয়েছিলেন, এবার থেকে যেকোনও একটি চিটফান্ড (Chitfund) সংস্থার যত মামলা আছে সব তিনি দ্রুত নিষ্পত্তি করার চেষ্টা করবেন । সেই মতোই আজ ছিল সারদা মামলার শুনানি ।
বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থায় টাকা রেখে প্রতারিত হওয়া রাজ্যের কোটি কোটি মানুষকে ক্ষতিপূরণ পাইয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে 2015 সালের ডিসেম্বর মাসে তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের ডিভিশন বেঞ্চ বিশেষ বেঞ্চ তৈরি করে দিয়েছিল । সেই বেঞ্চেই মূলত প্রতারকদের টাকা, সম্পত্তি বিক্রি, সম্পত্তির হিসেব নিকেশ-সহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে শুনানি হত । কিন্তু মহামারি পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে চিটফান্ড সংক্রান্ত মামলার শুনানি একেবারেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল । ফলে প্রতারিতদের টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়টিও চাপা পড়েছিল ।
আরও পড়ুন : শুভ্রা কুণ্ডুর ঘনিষ্ঠ প্রাক্তন ইডি আধিকারিক মনোজ কুমারকে তলব আদালতের