কলকাতা, 18 জুলাই: রাজ্যের স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের সাপেক্ষে শিক্ষিক-শিক্ষিকাদের অনুপাত কত ? সেগুলির পরিকাঠামো-সহ অন্য়ান্য পরিস্থিতিই বা কেমন ? এই বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য (Report on School Conditions) জানতে চাইল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) ৷ সোমবার প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের তরফে রাজ্যের (State Government) কাছে এই বিষয়ে রিপোর্ট তলব করা হয় ৷ তার জন্য অ্য়াডভোকেট জেনারেল তিন সপ্তাহ সময় চান ৷ আদালত তাতে সম্মতি দিয়েছে ৷
সম্প্রতি ইউনেসকো (UNESCO)-এর রিপোর্টে পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয় ৷ এছাড়াও, করোনা-সহ নানা ইস্যুতে বারবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে বাংলার শিক্ষাব্যবস্থা ৷ বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা মহলের পাশাপাশি রাজনৈতিক মহলেও সমালোচনা, পালটা সমালোচনা চলছে ৷ তারই প্রেক্ষিতে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে মামলা রুজু হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে ৷ সোমবার সেই মামলারই শুনানি ছিল প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে ৷
মামলাকারীদের দাবি, রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও সরকারের কোনও হেলদোল নেই ৷ এই বিষয়ে কোনও প্রশ্ন তোলা হলে মুখ্য সচিবের তরফে হলফনামা দিয়ে জানানো হয়, সব ঠিক আছে ! কিন্তু আদালতে জমা পড়া বিভিন্ন নথি বলছে, বড়সড় গলদ রয়েছে ! এদিন মামলাকারীর তরফে আইনজীবী শুভ্রপ্রকাশ লাহিড়ি জানান, "পড়ায় পাড়ায় সমাধান প্রকল্পের মাধ্যমে আমরা জানতে পারি, 87 জন শিক্ষককে হঠাৎ করেই অন্যত্র বদলি করা হয়েছিল ৷ সেই নথি আমাদের কাছে ছিল ৷ আমরা তা আদালতকে দিয়েছি ৷ আমাদের প্রশ্ন, এমন হঠাৎ বদলিতে কি পড়াশোনার উপর প্রভাব পড়ে না ? করোনার সংক্রমণে কমার পর সরকারি স্কুলের পঠনপাঠনের বিষয়ে রাজ্য সরকারের আরও যত্নশীল হওয়া উচিত ছিল ৷ কীভাবে অসংখ্য পড়ুয়া স্কুলছুট হল, সেই তথ্য কি রাজ্যের কাছে আছে ?"
মামলাকারীদের আরও অভিযোগ, রাজ্যের সমস্ত সরকার পোষিত স্কুলেই পড়ুয়া ও শিক্ষকদের অনুপাত সঠিক নেই ৷ ক্রমশ স্কুলছুটের সংখ্যা বাড়ছে ৷ আবার কোনও কোনও স্কুলে পড়ুয়া থাকলেও পর্যাপ্ত শিক্ষক, শিক্ষিকা নেই ৷ উলটোদিকে, এমন অনেক স্কুল রয়েছে, যেখানে শিক্ষক-শিক্ষিকা আছেন ৷ কিন্তু, পড়ুয়া নেই ৷ অথচ, এই সমস্ত স্কুলের জন্য মোটা টাকা খরচ করা হচ্ছে ৷ কীভাবে এই টাকা খরচ করা হচ্ছে, সেই তথ্য প্রকাশ্যে আনার দাবি তুলেছেন মামলাকারীরা ৷ কোনও কোনও ক্ষেত্রে আবার প্রয়োজন থাকলেও স্কুলগুলি পর্যাপ্ত টাকা পাচ্ছে না ৷ এতেও পড়ুয়াদের ক্ষতি হচ্ছে বলে সওয়াল করেছেন মামলাকারীদের আইনজীবী ৷
সংশ্লিষ্ট সমস্ত পক্ষের বক্তব্য শোনার পরই এই বিষয়ে রাজ্যকে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেয় আদালত ৷ আগামী 29 অগাস্ট মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ৷