ETV Bharat / city

Calcutta High Court: খাদ্য দফতরের 'দুর্নীতি' মামলায় তথ্য পেশে অনীহা ! রাজ্যের আচরণে ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট - কলকাতা হাইকোর্ট

রাজ্য খাদ্য দফতরে (Food and Supply Department) ফুড ইন্সপেক্টর (Food Inspector) পদে নিয়োগ দুর্নীতির (Recuitment Scam) অভিযোগ ৷ কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) মামলা চলাকালীন অনুপস্থিত সরকারি আইনজীবী ৷ সরকারের সমালোচনায় সরব বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন (Justice Harish Tandon) ৷

Calcutta High Court criticises West Bengal Government on Food Inspector Recruitment Scam Case
Calcutta High Court: খাদ্য দফতরের 'দুর্নীতি' মামলায় তথ্য পেশে অনীহা ! রাজ্যের আচরণে ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট
author img

By

Published : Aug 12, 2022, 2:14 PM IST

কলকাতা, 12 অগস্ট: রাজ্য খাদ্য দফতরে (Food and Supply Department) ফুড ইন্সপেক্টর (Food Inspector) নিয়োগে অনিয়ম (Recuitment Scam) সংক্রান্ত মামলায় সরকারের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন (Justice Harish Tandon) ৷ শুক্রবার সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানি চলাকালীন তাঁর পর্যবেক্ষণ, রাজ্যের গয়ংগচ্ছ মনোভাবের জন্যই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব হচ্ছে না ৷ আগামী মঙ্গলবার এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ৷ সংশ্লিষ্ট ডিভিশন বেঞ্চের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ওই দিনও যদি রাজ্যের তরফে আইনজীবীরা উপস্থিত না থাকেন, তাহলে এক তরফাভাবেই রায় ঘোষণা করতে বাধ্য হবে আদালত ৷ প্রসঙ্গত, এদিন রাজ্যের আইনজীবীরা এজলাসে হাজির না থাকাতেই সমালোচনায় সরব হন বিচারপতি ট্যান্ডন ৷

উল্লেখ্য, বাম জমানায় 2010 সালে রাজ্য খাদ্য দফতরে 614 জন (ফুড ইন্সপেক্টর গ্রেড-3) কর্মীকে নিয়োগ করা হয় ৷ অভিযোগ, এই নিয়োগে কোনওরকম নিয়মের তোয়াক্কাই করা হয়নি ৷ পরবর্তীতে রাজ্য প্রশাসনিক আদালত (State Administrative Tribunal) বা স্যাট (SAT)-এ এই বিষয়ে মামলা রুজু করা হয় ৷ সেই মামলার রায় চাকরিপ্রাপকদের বিরুদ্ধে যায় ৷ ফলে তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ৷ কিন্তু, 2016 সালের 10 জুন হাইকোর্ট ফের মামলাটি স্যাট-এ ফেরত পাঠায় ৷

আরও পড়ুন: Siliguri Teacher Recruitment: পাহাড়েও শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, নাম জড়াল অনিত থাপার

এরপর গত 8 জুন সংশ্লিষ্ট বিচারক ওই 614 জনেরই নিয়োগ বাতিল করে দেন ৷ একইসঙ্গে, তৎকালীন নির্বাচক বোর্ডের (Selection Board) পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করার নির্দেশ দেন ৷ তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয় খাদ্য দফতরকে ৷ সমগ্র প্রক্রিয়াটি শেষ করার জন্য মোট আট সপ্তাহ সময় দেওয়া হয় স্য়াট-এর তরফে ৷ স্য়াট-এর বিচারপতি সৌমিত্র পালের বেঞ্চ উল্লেখ করে, সংশ্লিষ্ট নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রহসন করা হয়েছে ৷ এই নিয়োগে স্বজনপোষণ ও পক্ষপাতিত্ব স্পষ্ট ৷

কিন্তু, এই রায়ের বিরুদ্ধে আবারও কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা রুজু করেন চাকরি হারানো ব্যক্তিরা ৷ অথচ, হাইকোর্ট আগেই তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল, উল্লেখিত নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যেভাবে সিলেকশন বোর্ড একদিনে 800 (আটশো) জনের ইন্টারভিউ বা মৌখিক পরীক্ষা নিয়েছিল বলে দাবি করেছে, তা এককথায় অবিশ্বাস্য ৷ তাছাড়া, শুধুমাত্র ওই বিভাগের জন্যই এই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল ৷ তাঁদের আলাদা করে কোনও লিখিত পরীক্ষাও নেওয়া হয়নি !

শুক্রবার এই মামলারই শুনানি শুরু হয় বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চে ৷ এদিন রাজ্যের তরফে আদালতে কিছু নির্দিষ্ট তথ্য জমা দেওয়ার কথা ছিল ৷ সেই মতোই নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট ৷ কিন্তু, বিচারপতিরা সেই তথ্য চাইতেই জুনিয়র আইনজীবী সায়ন গঙ্গোপাধ্য়ায় আদালতকে জানান, এই মামলার দায়িত্বে রয়েছেন দুই সিনিয়র আইনজীবী রাজা সাহা ও বিশ্বব্রত বসুমল্লিক ৷ কিন্তু, দু'জনই আদালতে উপস্থিত ছিলেন না ৷ তাই শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেন আইনজীবী সায়ন গঙ্গোপাধ্য়ায় ৷

আরও পড়ুন: Calcutta High Court: শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি কীভাবে বাড়ছে, মামলায় ইডিকে যুক্ত করার নির্দেশ হাইকোর্টের

এই বক্তব্য শোনার পরই রাজ্যের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি ট্যান্ডন ৷ তাঁর পর্যবেক্ষণ, আদালত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে চাইছে ৷ অথচ, রাজ্য ইচ্ছাকৃতভাবে সময় নষ্ট করছে ৷ কেন দায়িত্বজ্ঞানহীন আইনজীবীদের নিয়োগ করা হয়েছে ? রাজ্যের এই আচরণ অভিপ্রেত নয় বলেই মনে করছে আদালত ৷ এরপরই আগামী মঙ্গলবার মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয় ৷ সেদিন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের আদালতে উপস্থিত থাকার কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷

কলকাতা, 12 অগস্ট: রাজ্য খাদ্য দফতরে (Food and Supply Department) ফুড ইন্সপেক্টর (Food Inspector) নিয়োগে অনিয়ম (Recuitment Scam) সংক্রান্ত মামলায় সরকারের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডন (Justice Harish Tandon) ৷ শুক্রবার সংশ্লিষ্ট মামলার শুনানি চলাকালীন তাঁর পর্যবেক্ষণ, রাজ্যের গয়ংগচ্ছ মনোভাবের জন্যই মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করা সম্ভব হচ্ছে না ৷ আগামী মঙ্গলবার এই মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ৷ সংশ্লিষ্ট ডিভিশন বেঞ্চের পক্ষ থেকে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ওই দিনও যদি রাজ্যের তরফে আইনজীবীরা উপস্থিত না থাকেন, তাহলে এক তরফাভাবেই রায় ঘোষণা করতে বাধ্য হবে আদালত ৷ প্রসঙ্গত, এদিন রাজ্যের আইনজীবীরা এজলাসে হাজির না থাকাতেই সমালোচনায় সরব হন বিচারপতি ট্যান্ডন ৷

উল্লেখ্য, বাম জমানায় 2010 সালে রাজ্য খাদ্য দফতরে 614 জন (ফুড ইন্সপেক্টর গ্রেড-3) কর্মীকে নিয়োগ করা হয় ৷ অভিযোগ, এই নিয়োগে কোনওরকম নিয়মের তোয়াক্কাই করা হয়নি ৷ পরবর্তীতে রাজ্য প্রশাসনিক আদালত (State Administrative Tribunal) বা স্যাট (SAT)-এ এই বিষয়ে মামলা রুজু করা হয় ৷ সেই মামলার রায় চাকরিপ্রাপকদের বিরুদ্ধে যায় ৷ ফলে তাঁরা কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন ৷ কিন্তু, 2016 সালের 10 জুন হাইকোর্ট ফের মামলাটি স্যাট-এ ফেরত পাঠায় ৷

আরও পড়ুন: Siliguri Teacher Recruitment: পাহাড়েও শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি, নাম জড়াল অনিত থাপার

এরপর গত 8 জুন সংশ্লিষ্ট বিচারক ওই 614 জনেরই নিয়োগ বাতিল করে দেন ৷ একইসঙ্গে, তৎকালীন নির্বাচক বোর্ডের (Selection Board) পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করার নির্দেশ দেন ৷ তাঁদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয় খাদ্য দফতরকে ৷ সমগ্র প্রক্রিয়াটি শেষ করার জন্য মোট আট সপ্তাহ সময় দেওয়া হয় স্য়াট-এর তরফে ৷ স্য়াট-এর বিচারপতি সৌমিত্র পালের বেঞ্চ উল্লেখ করে, সংশ্লিষ্ট নিয়োগ প্রক্রিয়ায় প্রহসন করা হয়েছে ৷ এই নিয়োগে স্বজনপোষণ ও পক্ষপাতিত্ব স্পষ্ট ৷

কিন্তু, এই রায়ের বিরুদ্ধে আবারও কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা রুজু করেন চাকরি হারানো ব্যক্তিরা ৷ অথচ, হাইকোর্ট আগেই তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছিল, উল্লেখিত নিয়োগ প্রক্রিয়ায় যেভাবে সিলেকশন বোর্ড একদিনে 800 (আটশো) জনের ইন্টারভিউ বা মৌখিক পরীক্ষা নিয়েছিল বলে দাবি করেছে, তা এককথায় অবিশ্বাস্য ৷ তাছাড়া, শুধুমাত্র ওই বিভাগের জন্যই এই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছিল ৷ তাঁদের আলাদা করে কোনও লিখিত পরীক্ষাও নেওয়া হয়নি !

শুক্রবার এই মামলারই শুনানি শুরু হয় বিচারপতি হরিশ ট্যান্ডনের ডিভিশন বেঞ্চে ৷ এদিন রাজ্যের তরফে আদালতে কিছু নির্দিষ্ট তথ্য জমা দেওয়ার কথা ছিল ৷ সেই মতোই নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট ৷ কিন্তু, বিচারপতিরা সেই তথ্য চাইতেই জুনিয়র আইনজীবী সায়ন গঙ্গোপাধ্য়ায় আদালতকে জানান, এই মামলার দায়িত্বে রয়েছেন দুই সিনিয়র আইনজীবী রাজা সাহা ও বিশ্বব্রত বসুমল্লিক ৷ কিন্তু, দু'জনই আদালতে উপস্থিত ছিলেন না ৷ তাই শুনানি পিছিয়ে দেওয়ার আবেদন করেন আইনজীবী সায়ন গঙ্গোপাধ্য়ায় ৷

আরও পড়ুন: Calcutta High Court: শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীদের সম্পত্তি কীভাবে বাড়ছে, মামলায় ইডিকে যুক্ত করার নির্দেশ হাইকোর্টের

এই বক্তব্য শোনার পরই রাজ্যের ভূমিকায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিচারপতি ট্যান্ডন ৷ তাঁর পর্যবেক্ষণ, আদালত মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে চাইছে ৷ অথচ, রাজ্য ইচ্ছাকৃতভাবে সময় নষ্ট করছে ৷ কেন দায়িত্বজ্ঞানহীন আইনজীবীদের নিয়োগ করা হয়েছে ? রাজ্যের এই আচরণ অভিপ্রেত নয় বলেই মনে করছে আদালত ৷ এরপরই আগামী মঙ্গলবার মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয় ৷ সেদিন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের আদালতে উপস্থিত থাকার কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.