কলকাতা, 5 ফেব্রুয়ারি: রাজ্য়ের ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্প নিয়ে অপপ্রচার করছেন বিরোধীরা৷ অপমান করছেন রাজ্য়ের মানুষকেই৷ শুক্রবার নাম না করে এই ইশুতে গেরুয়া শিবিরকে দুষলেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের অন্যতম নেতা ব্রাত্য বসু৷
ভোটমুখী বাংলায় ‘স্বাস্থ্যসাথী’ প্রকল্প চালু করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের সরকার৷ চালু হয়েছে ‘দুয়ারে সরকার’, ‘পাড়ায় পাড়ায় সমাধান’-এর মতো প্রকল্পও৷ যার সবক’টাই চূড়ান্ত সফল বলে দাবি রাজ্য় প্রশাসন তথা শাসকদলের৷ তবে, এই তত্ত্ব মানতে নারাজ বিরোধীশিবির৷ পালটা তাদের যুক্তি, এতদিন কোনও কাজ করেনি বলেই ভোটের মুখে এইসব জনমোহিনী প্রকল্প আনতে হচ্ছে মমতার সরকারকে৷
আরও একধাপ এগিয়ে ‘দুয়ারে সরকার’ প্রকল্পকে নিয়ে রীতিমতো ব্যঙ্গ করতে শুরু করে দিয়েছেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা৷ তাঁদের ভাষায়, এই প্রকল্প আদতে ‘যমের দুয়ারে সরকার’৷ মানুষকে যমের দুয়ারে পাঠাতেই নাকি ব্য়বস্থা পাকা করেছে রাজ্য৷
শুক্রবার এনিয়ে মুখ খুললেন ব্রাত্য৷ তাঁর অভিযোগ, রাজ্য সরকারি প্রকল্পকে খাটো করতে গিয়ে আদতে বাংলার মানুষকেই অপমান করছে বিজেপি৷ মানুষের দরজাকে ‘যমের দুয়ার’ বলে অবিহিত করছে তারা৷ অর্থাৎ রাজ্যবাসী তাঁদের ভাষায় ‘যম’৷
ব্রাত্যর দাবি, শুধুমাত্র বিরোধিতা করতে হবে বলেই এইসব কাণ্ড ঘটাচ্ছে বিজেপি৷ অথচ তাঁদের দলের নেতা-কর্মীদের আত্মীয়রাই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে নাম লেখাচ্ছেন৷ বিশ্বব্যাঙ্ক এবং ইউনিসেফের মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাও মমতার উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে৷
এদিন কলকাতায় তৃণমূলের সদর দপ্তরে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে টেট দুর্নীতি নিয়েও মুখ খোলেন ব্রাত্য়৷ সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তাঁর দাবি, যখন এই ঘটনা ঘটেছিল, তখন শুধুমাত্র একটি ক্ষেত্রেই অনিয়ম হয়েছিল৷ যিনি সেই অনিয়ম করেছিলেন, তিনি বর্তমানে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন৷
আরও পড়ুন: ‘বাংলার মানুষ রাজনৈতিক ভাবে বিজেপিকে যমের দুয়ারে পাঠিয়ে দেবে’
ব্রাত্য যে কালনার বিধায়ক বিশ্বজিৎ কুণ্ডুর কথাই বলতে চেয়েছেন, তা বলাই বাহুল্য৷ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েই টেট দুর্নীতি নিয়ে মুখ খোলেন বিশ্বজিৎ৷ ব্রাত্যর দাবি, তিনি শিক্ষামন্ত্রী থাকাকালীনই এই অনিয়ম নিয়ে বিশ্বজিৎকে প্রশ্ন করেছিলেন৷ কিন্তু তখন তিনি এর কোনও জবাবই দিতে পারেননি৷ অথচ দলবদলের পরই তাঁর অবস্থান বদলে গিয়েছে৷
পাশাপাশি, বিজেপির রাজ্য নেতাদের নিয়েও কাটক্ষ করতে ছাড়েননি ব্রাত্য৷ তাঁর মতে, বাংলার বিজেপি নেতাদের দলে কোনও গুরুত্বই নেই৷ সেই কারণেই তৃণমূল ছেড়ে যাওয়া একাধিক নেতা-মন্ত্রী বিজেপি রাজ্য নেতৃত্বের হাত থেকে পতাকা নেননি৷ তাঁদের বিজেপিতে যোগদান করাতে দিল্লি থেকে হেভিওয়েটদের ছুটে আসতে হয়েছে৷ এমনকী, আস্ত একটা চাটার্ড বিমানও পাঠাতে হয়েছে৷ অর্থাৎ বিজেপির নিজস্ব ঘরানায় বাংলা নেতৃত্বের উপর কেন্দ্রীয় নেতাদের এবং নবাগতদের যে কোনও ভরসাই নেই, তারই বার্তা দিতে চেয়েছেন ব্রাত্য৷