কলকাতা, 7 অক্টোবর: ভাইফোঁটা, কালীপুজোর পরই দুর্নীতি ইস্যুতে (Corruption) রাজ্যের সরকার ও শাসকদলের বিরুদ্ধে সার্বিক আন্দোলনে নামবে গেরুয়া শিবির ৷ বিজেপি (BJP)-এর সূত্র মারফত অন্তত এমনটাই জানা যাচ্ছে ৷ তাদের লক্ষ্য, আসন্ন পঞ্চায়েত ভোট (Panchayat Election 2023) ৷ আর তাই জেলাস্তরে শুরু হবে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি (Protest Programme) ৷
আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের লড়াই নিয়ে ইতিমধ্যেই রণকৌশল তৈরি করে ফেলেছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব ৷ এবার তা প্রয়োগ করার পালা ৷ সেই মতোই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে রাজ্য এবং জেলাস্তরের নেতানেত্রীদের ৷ ত্রিস্তরীয় পঞ্চায়েত ভোট হবে গ্রামাঞ্চলে ৷ তাই রাজ্য সরকার এবং তৃণমূল কংগ্রেসের দুর্নীতির বিরুদ্ধে গড়ে তোলা আন্দোলন শুধুমাত্র কলকাতাকেন্দ্রিক হলে তাতে কোনও লাভ হবে না বলে মনে করছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব ৷ সেই কারণেই আন্দোলনের প্রবাহ কলকাতা ছাপিয়ে প্রত্যেকটি জেলার একেবারে তৃণমূলস্তরে ছড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷
আরও পড়ুন: তিন বছরেই হাল ছাড়ল পদ্মশিবির, উমার আরাধনায় আর নেই বিজেপি
উল্লেখ্য, গত 13 সেপ্টেম্বর দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতেই নবান্ন অভিযান (Nabanna AbhiJan) করেছিল বিজেপি ৷ এবার সেই কর্মসূচিই পালন করা হবে বিভিন্ন জেলায় ৷ এক্ষেত্রে প্রতিবাদ মিছিলের গন্তব্য হবে সংশ্লিষ্ট জেলার প্রধান প্রশাসনিক কার্যালয় অথবা জেলাশাসকের দফতর ৷ শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করছে, নবান্ন অভিযান নিয়ে অনেক বিতর্ক হলেও এই কর্মসূচি মানুষের নজর কেড়েছে ৷ এবার তাই একই ধাঁচে বাংলাজুড়ে পথে নামতে প্রস্তুতি নিচ্ছে বিজেপি ৷
শীর্ষ নেতৃত্বের তরফ থেকে আরও নির্দেশ এসেছে, জেলাস্তরের এই অভিযানগুলির নেতৃত্বে থাকবেন সংশ্লিষ্ট জেলার সমস্ত বিধায়ক এবং অন্তত একজন দলীয় সাংসদ ৷ বিজেপি রাজ্য কমিটির এক সদস্য এই প্রসঙ্গে জানান, "প্রাথমিকভাবে স্থির করা হয়েছিল, দুর্গাপুজোর পরই জেলাস্তরের এই কর্মসূচি আরম্ভ করা হবে ৷ কিন্তু, পরবর্তীতে তা পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৷ ঠিক হয়, উৎসবের মরশুম পার করেই দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনে নামা হবে ৷ কারণ, দুর্গাপুজোর মতোই কালীপুজো ও ভাইফোঁটার সঙ্গেও বাঙালির আবেগ জড়িয়ে রয়েছে ৷ সেক্ষেত্রে এই সময় আন্দোলন শুরু করলে মানুষ তা ভালোভাবে নাও নিতে পারে ৷"
রাজ্য বিজেপি-এর মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya) এই প্রসঙ্গে বলেন, "বর্তমান সরকারের আমলে পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে দুর্নীতির শিখর আকাশ ছুঁয়েছে ৷ এদিকে, রোজই টাকার পাহাড় উদ্ধার হচ্ছে ৷ এসব দেখে বাংলার মানুষ বিধ্বস্ত ৷ আমাদের বার্তা হল, দুর্নীতির সঙ্গে কোনও আপস নয় ৷ এই বার্তা নিয়েই আমরা মানুষের দরজায় পৌঁছে যাব ৷"
অন্যদিকে, বিজেপি-এর কর্মসূচিকে পাত্তা দিতে নারাজ তৃণমূল কংগ্রেস নেতৃত্ব ৷ দলের প্রথম সারির নেতা তথা বিধায়ক তাপস রায় (Tapas Roy) এই প্রসঙ্গে বলেন, "এই রাজ্যে বিজেপি-এর সাংগঠনিক শক্তি যেমন নেই, তেমনই কোনও জননেতাও নেই ৷ তাদের সমস্ত কর্মসূচিই একের পর এক ফ্লপ হচ্ছে ৷"