কলকাতা, 7 জুন: ছাত্র নেতা আনিশ খানের (Anish Khan) মৃত্য়ু নিয়ে কোনও তদন্তই করেনি পুলিশ! তাই এই ঘটনার (Anish Khan Death Controversy) অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ এবং নিরপেক্ষ তদন্ত হওয়া দরকার ৷ মঙ্গলবার একথা বলেন আনিশ খানের পরিবারের আইনজীবী তথা সিপিএম নেতা বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য (Bikash Ranjan Bhattacharya) ৷ যদিও রাজ্যের বক্তব্য, আনিশ খানের মৃত্যুর ঘটনায় রাজ্যের পুলিশকে কাঠগড়ায় তোলা হলেও তাদের বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগই প্রমাণিত হয়নি ৷ তাই পুলিশের তদন্তের উপরেই আস্থা রাখা উচিত ৷ প্রসঙ্গত, ছাত্র নেতা আনিশ খানের মৃত্যুরহস্য এবং তার তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) মামলা চলছে ৷ এদিনই সেই মামলার শুনানি শেষ হয় ৷ সংশ্লিষ্ট সমস্ত পক্ষের বক্তব্য শোনার পর রায়দান স্থগিত রাখেন বিচারপতি রাজাশেখর মান্থা (Justice Rajasekhar Mantha)৷
ছাত্র নেতা আনিশ খানের মৃত্যুতে ইতিমধ্যেই বিশেষ তদন্তকারী দল বা সিট গঠন করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে ৷ কিন্তু, এই ঘটনায় কার্যত রাজ্যের পুলিশের বিরুদ্ধেই খুনের অভিযোগ উঠেছে ৷ কলকাতা হাইকোর্টে আনিশের পরিবারের হয়ে মামলা লড়ছেন আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ৷ এদিন তিনি বলেন, "আনিশ খানের মৃত্যুরহস্য উদ্ঘাটনে সিট সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে ৷ তাই, অন্য কোনও এজেন্সি দিয়ে এই ঘটনার তদন্ত করা দরকার ৷"
বিকাশের বক্তব্য, "রাজ্যের অ্য়াডভোকেট জেনারেল পুলিশকে একটা সুযোগ দিতে বলেছিলেন ৷ কিন্তু, ঘটনার সময় পুলিশ কেন আনিশের বাড়ি গিয়েছিল, কীভাবে আনিশের মৃত্যু হয়েছিল, সেসব প্রশ্নের উত্তর আজও অধরা ৷ সূত্রের দাবি, আনিশ খান যাতে পালাতে না পারেন, তার জন্যই নাকি পুলিশ পাশের বাড়ির ছাদে উঠেছিল ৷ কিন্তু, আসলে কী ঘটেছিল, তা আজও স্পষ্ট নয় ৷ পুলিশের তদন্তে এইসব কোনও প্রশ্নেরই জবাব মেলেনি ৷"
আরও পড়ুন: Firhad Hakim: 'বাম-বিজেপি লাশ ধরে ভোট পাওয়ার প্রতিযোগিতায় নেমেছে', কটাক্ষ ফিরহাদের
প্রসঙ্গত, ছাত্র নেতা আনিশ খানকে তাঁদেরই বাড়ির ছাদ থেকে নীচে ঠেলে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল পুলিশের বিরুদ্ধে ৷ যদিও পুলিশের তরফে তা অস্বীকার করা হয় ৷ এই প্রসঙ্গে রাজ্যের অ্য়াডভোকেট জেনারেল আদালতকে জানান, "আনিশকে সত্যিই ছাদ থেকে ঠেলে ফেলা হয়েছিল কি না, তা জানতেই পলিগ্রাফ পরীক্ষা করানো হয়েছিল ৷ দিল্লি থেকে আসা ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা সেই পরীক্ষা করেছিলেন ৷ আমরা সেই পরীক্ষার রিপোর্ট আগেই পেশ করেছি ৷ তদন্তে কোথাও ষড়যন্ত্রের অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি ৷ ঘটনায় পুলিশ কোনওভাবে জড়িত ছিল, এমন প্রমাণও মেলেনি ৷ তাই পুলিশের তদন্তে আমাদের আস্থা রাখা দরকার ৷ সব মামলাই যদি সিবিআই-এর মতো এজেন্সির হাতে তুলে দেওয়া হয়, তাহলে তাদেরও কাজের চাপ বাড়বে ৷ সেক্ষেত্রে তাদের পক্ষেও সঠিকভাবে তদন্ত করা সম্ভব হবে না ৷"
অ্যাডভোকেট জেনারেলের এই তত্ত্ব শোনার পর পাল্টা প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি মান্থা ৷ এজি-র কাছে তিনি জানতে চান, "পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত হলে আপনার এই আত্মবিশ্বাস থাকবে তো?" উত্তরে এজি বলেন , "অবশ্যই থাকবে!" এরই পাশাপাশি, রাজ্যের তরফে আর এক আইনজীবী অমিতেশ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, "আনিশের বাবা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে যে গোপন জবানবন্দি দিয়েছেন, সেখানে কোথাও তিনি তাঁর ছেলের মৃত্যুর নেপথ্য়ে কোনও ষড়যন্ত্রের উল্লেখ করেননি ৷" একথা শোনার পরই বিচারপতি মান্থা আনিসের বাবার গোপন জবানবন্দি আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন ৷