বাগুইআটি, 9 সেপ্টেম্বর: বাগুইআটিতে জোড়া খুনের দ্বিতীয় সপ্তাহে হাওড়া স্টেশন থেকে মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট । ধৃতের নাম সত্যেন্দ্র চৌধুরী । জানা গিয়েছে, হাওড়া স্টেশন থেকে ট্রেন ধরে বিহারের দিকে পালানোর ছক কষছিল সত্যেন্দ্র ৷ তবে আগে থেকে খবর পেয়ে তাকে বৃহস্পতিবার প্রথমে আটক করে এবং শুক্রবার তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ (Bidhannagar police arrests a person for alleged connection in Baguiati Murder) ।
জানা গিয়েছে, একাধিকবার মোবাইলের সিম এবং ফোন নম্বর বদলে ফেলছিল অভিযুক্ত সত্যেন্দ্র ৷ এভাবেই সে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল । ঘটনার তদন্ত নেমেছিল সিআইডির গোয়েন্দারা । তবে বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দাদের কাছেই আগে খবর আসে, সত্যেন্দ্র এই শহরে গা ঢাকা দিয়ে রয়েছে ।
ভিন রাজ্যে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল সত্যেন্দ্র ৷ ফলে হাওড়া-সহ একাধিক কমিশনারেটের সঙ্গে বিধাননগর কমিশনারেটের খবর দেওয়া-নেওয়া চলছিল ৷ সেই মতো বিধাননগর পুলিশ জানতে পারে সত্যেন্দ্র ট্রেন ধরে বিহারে পালানোর চেষ্টা করছে । বৃহস্পতিবার ট্রেনে ওঠার ঠিক আগের মুহূর্তে তাকে ধরে ফেলে বিধাননগর কমিশনারেট ।
আরও পড়ুন: 2 সপ্তাহ ধরে মর্গে পড়ে অপহৃত দুই ছাত্রের দেহ, অভিযোগ পেয়েও কেন দেহ শনাক্তকরণে দেরি ?
বাগুইআটিতে দুই ছাত্রের অপহরণ এবং পরে তাদের খুনের ঘটনায় রাজ্যরাজনীতি উত্তাল হয়ে উঠেছে ৷ পরিবারের দাবি, গোটা ঘটনার তদন্ত সিবিআই করুক । পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে ৷ বসিরহাট জেলা পুলিশের সঙ্গে বিধাননগর কমিশনারেটের সমন্বয়ের অভাব নিয়ে অভিযোগ উঠেছে । পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সাসপেন্ড করা হয় বাগুইআটি থানার আইসি কল্লোল ঘোষ এবং ঘটনার তদন্তকারী আধিকারিক প্রীতম সিংকে । বুধবার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী দুই পুলিশ কর্মীর বিরুদ্ধে এই কঠিন পদক্ষেপ করা হয়েছে ৷
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, 22 অগস্ট অভিষেক নস্কর (16) এবং অতনু দে (15) নামের ওই দুই অপহৃত ছাত্রের অপহরণের ঘটনায় থানায় ডায়েরি করা হয় ৷ এর 14 দিন কেটে যাওয়ার পর বসিরহাটের মর্গে মিলল তাদের মৃতদেহ ৷ পুলিশের বক্তব্য, অপহরণের দিনই ওই দুই ছাত্রকে খুন করা হয় ৷ 6 সেপ্টেম্বর, মঙ্গলবার পুলিশের কাছ থেকে খবর পেয়ে দেহ দু'টি শনাক্ত করে মৃত ছাত্রদের পরিবার ৷
এই বিষয়ে বসিরহাট জেলার পুলিশ সুপার জোবি থমাস বলেন, "বাগুইআটির জগৎপুরের বাসিন্দা দশম শ্রেণির ওই দুই ছাত্রকে অপহরণ করা হয় 22 অগস্ট । এরপর 23 অগস্ট সন্ধেয় ন্যাজাট থানা এলাকা থেকে প্রথমে এক কিশোরের দেহ উদ্ধার হয় । এর একদিন পর অর্থাৎ 25 অগস্ট অপর এক কিশোরের দেহ উদ্ধার হয় মিনাখাঁ থানা এলাকা থেকে । একদিনের ব্যবধানে দেহ দু'টি উদ্ধার হলেও তখন শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি । বসিরহাট জেলা হাসপাতালের মর্গেই কার্যত 13 দিন ধরে অশনাক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল ওই দুই কিশোরের দেহ । তাঁদের পরিচয় পেতে বিভিন্ন থানায় বার্তা পাঠানো হয়েছিল । মঙ্গলবার ওই দুই ছাত্রের পরিবারের সদস্যরা এসে দেহ দুটি শনাক্ত করে ৷"
আরও পড়ুন: বাগুইআটি কাণ্ডে ব্যবহৃত গাড়িতে মিলল 7টি আঙুলের ছাপ
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অপহরণের পরপরই ওই দুই কিশোরকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয় (student of baguiati found in basirhat) ৷ এরপর তাদের দেহ ফেলে দেওয়া হয় বসিরহাটের দু'টি ভিন্ন জায়গায় । অপহরণ এবং খুনের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে পুলিশ ইতিমধ্যেই চারজনকে গ্রেফতার করেছে । শুধু বেপাত্তা ছিল ঘটনার মূল ষড়যন্ত্রকারী সত্যেন্দ্র চৌধুরী । এবার তাঁকেও গ্রেফতার করা হল ।