কলকাতা, 7 জুন: ভবানীপুরে গুজরাতি দম্পতি অশোক শাহ এবং রেশমি শাহ খুনের ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে লুটের উদ্দেশ্য । কারণ রেশমি শাহের গলার সোনার চেইন এবং হাতের আংটি রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ । তদন্তে নেমে কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড বিভাগের গোয়েন্দারা দেখেন, ঘরের ভিতরে যে আলমারিটি ছিল সেটি লণ্ডভণ্ড অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে । সেখান থেকে বেশকিছু নথিপত্র-সহ সোনার গয়না নিখোঁজ । পুলিশের অনুমান, লুঠের উদ্দেশ্যেই খুন করা হয়েছে ওই দম্পতিকে (Bhowanipore Murder Case)।
কিন্তু ভবানীপুরের মতো একটি জনবহুল এলাকায় কীভাবে বাড়িতে ঢুকে ব্যক্তিকে গুলি চালিয়ে খুন এবং মহিলাকে ধারালো অস্ত্রের কোপ মেরে ঠান্ডা মাথায় খুন করে ঘরের আসবাবপত্র লুট করে পালাতে পারল আততায়ীরা ? লালবাজার সূত্রে খবর, ওই ব্যক্তিকে প্রথমে গুলি করে হত্যা করা হয় (sniffer dogs)। পরে কোনও ভারী এবং ভোঁতা জিনিস দিয়ে একাধিকবার মারা হয় । ইতিমধ্যেই বাড়ির এক পরিচারিকাকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা । তাছাড়াও পাশে একটি নির্মীয়মাণ বহুতলের একাধিক ঠিকা কর্মীকেও ভবানীপুর থানা এনে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা ।
আরও পড়ুন: Bhawanipur Double Murder : ভবানীপুরে খুন বৃদ্ধ দম্পতি, দেহে গুলি ও ধারাল অস্ত্রের ক্ষত
যদিও লালবাজার সূত্রের খবর, ইতিমধ্যেই ভবানীপুর এলাকায় একাধিক সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ (cctv footage) সংগ্রহ করা হয়েছে । সেখানেই দেখা গিয়েছে 2 রহস্যজনক ব্যক্তিকে । যারা ঘটনার পরেই ওই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে যাচ্ছে বলে সন্দেহ তদন্তকারীদের । ঘটনাস্থলে আসে কলকাতা পুলিশের স্নিফার ডগ । গন্ধ শুঁকতে শুঁকতে সেই পুলিশ কুকুরটি হরিশ পার্কের দিকে চলে যায় (Kolkata murder case)।
এলাকাটি জনবহুল হওয়া সত্ত্বেও কেউ গুলির আওয়াজ কেন পেল না এই প্রশ্নই ভাবাচ্ছে গোয়েন্দাদের ৷ ঘটনাস্থল থেকে খানিকটা সামনেই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর বাড়ি । সব সময় কড়া নিরাপত্তার চাদরে মোড়া থাকে ওই এলাকা । ইতিমধ্যেই তদন্তে নেমে শিয়ালদা এবং হাওড়া রেল পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা । ওই গুজরাতি দম্পতির আত্মীয়দের সঙ্গেও কথা বলছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা ।
জানা গিয়েছে, স্টক মার্কেটে কাজ করতেন ওই ব্যক্তি । তাঁদের তিন মেয়ে । দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে এবং এক মেয়ে তাঁদের সঙ্গেই থাকতেন । ঘটনার দিন অর্থাৎ গতকাল রাতে তাঁর ছোট মেয়ে বাড়িতে ঢুকে দেখতে পান বাবা-মা রক্তাক্ত অবস্থায় ঘরে পড়ে রয়েছেন । গোটা ঘটনার খবর পেয়ে আত্মীয়-স্বজনরা ঘটনাস্থলে পৌঁছন । ওই দম্পতির কোনও ব্যবসায়িক শত্রু ছিল কি না তাও খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা ।