ETV Bharat / city

দেশ আর তাঁর জন্ম তারিখ এক, কিন্তু স্বাধীনতা দেখে যেতে পারেননি সুকান্ত

15 অগাস্ট, 1947 ৷ প্রাণাধিক দেশ স্বাধীন হল ৷ বেঁচে থাকলে এই দিনে 21 শে পা দিতেন কবি৷ কিন্তু টিউবারকিউলোসিসে চির বিদায়৷

Sukanta Bhattacharya
সুকান্ত
author img

By

Published : Aug 15, 2020, 12:16 AM IST

কবিতার নাম "বোধন"৷ যেখানে আশ্চর্য মুন্সিয়ানায় মহামারি পরিস্থিতির কথা বর্ণনা করেছিলেন সুকান্ত ভট্টাচার্য ৷ যেন আজকের পৃথিবীর চিত্রই উঠে এসেছিল !

"পৃথিবী উদাস, শোনো হে দুনিয়াদার!

সামনে দাঁড়িয়ে মৃত্যু-কালো পাহাড়

দগ্ধ হৃদয়ে যদিও ফেরাও ঘাড়

সামনে পেছনে কোথাও পাবে না পার:

কি করে খুলবে মৃত্যু-ঠেকানো দ্বার-

এই মুহূর্তে জবাব দেবে কি তার?"

আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম নাম সুকান্ত ভট্টাচার্য ৷ রবীন্দ্র পরবর্তী কবি হওয়া সত্ত্বেও জনপ্রিয়তার তুঙ্গ স্পর্শ করা এই কবির নাম উচ্চারিত হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজি নজরুল ইসলামের মতো মহাকবিদের সঙ্গে৷ সুকান্তর অধিকাংশ রচনা প্রকাশিত হয় মৃত্যু পরবর্তীকালে ৷ জীবৎকালে তাঁর কবিতা ততখানি চর্চিত ছিল না৷ অথচ সেই কবিই মৃত্যুর পর বিশ শতকের অন্যতম জনপ্রিয় কবি হয়ে ওঠেন ৷ সুকান্ত ভট্টাচার্যের কাব্যভাবনায় প্রভাবিত পরের প্রজন্মের প্রথিতযশা কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়, বিখ্যাত সংগীত পরিচালক সলিল চৌধুরি প্রমুখ ৷ সলিল চৌধুরি সুকান্তর কবিতা থেকে জনপ্রিয় গান তৈরি করেন ৷ কিন্তু এই কবি পাঠকমনে এতখানি প্রভাব বিস্তার করেন কীভাবে ?

অন্যতম কারণ, সুকান্তর কবিতার বহুমুখী চরিত্র ৷ সমাজচিন্তা, জাতীয়তাবাদ, মানবিকতা, এমননকী রোম্যান্টিসিজ়মও তাঁর কবিতার বিষয় ৷

সুকান্ত ভট্টাচার্য যদি আর তিন মাস বাঁচতেন তাহলে হয়ত তাঁর জীবনের সেরা উপহার পেতেন! কবির মত্যুর ঠিক তিন মাস দু'দিন পরেই সেই তারিখ---15 অগাস্ট, 1947 ৷ কবির প্রাণাধিক দেশ স্বাধীন হয় ৷ বেঁচে থাকলে এই দিনে 21 শে পা দিতেন ৷ কিন্তু TB রোগে মৃত্যু হয় ৷ আজ বেঁচে থাকলে 95 বছর বয়স হত সুকান্ত ভট্টাচার্যর ৷

প্রথম জীবন ও শিক্ষা :

সুকান্ত ভট্টাচার্যর জন্ম 1926 সালের 15 অগাস্ট ৷ বাবা নিবারণ চন্দ্র ভট্টাচার্য, মা সুনীতা দেবী ৷ সুকান্তর বাবার ছিল প্রকাশনা সংস্থা ৷ সরস্বতী লাইব্রেরি ৷ নিবরাণ ও সুনীতার ছয় সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন কবি ৷ সুকান্ত ভট্টাচার্যের সহদররা হলেন সুশীল, প্রশান্ত, বিভাস, অশোক ও অমিয় ৷ বাম নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সম্পর্কে সুকান্ত ভট্টাচার্যের ভাইপো ৷

কবির জন্ম মাতুলালয়ে ৷ কলকাতার কালীঘাট এলাকায় ৷ পূর্বপুরুষের বাড়ি ছিল বর্তমান বাংলাদেশে ৷ গোপালগঞ্জের কোতালিপাড়ায় ৷

লেখালিখি শুরু:

প্রথম ছোটোগল্প প্রকাশিত হয় স্কুল ম্যগাজিন "সঞ্চয়"-এ ৷ পরবর্তী রচনা "বিবেকানন্দের জীবনী" প্রকাশিত হয় বিজন ভট্টাচার্য সম্পাদিত "শিখা" পত্রিকায়৷

কমিউনিস্ট দলে যোগ:

1944 সালে কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়াতে যোগ দেন সুকান্ত ভট্টাচার্য ৷ এই সময়ই প্রকাশিত হয় "আকাল"৷ প্রকাশক "অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট রাইটার্স অ্যান্টি আর্টিস্টস" ৷ 1945 সালে এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিলেও পাশ করতে পারেননি কবি ৷ ততদিনে তিনি দলের দৈনিক মুখপাত্র "দৈনিক স্বাধীনতা"র যুব বিভাগ "কিশোর সভা"র সম্পাদক ৷

মৃত্যু:

1947 সালের 13 মে ৷ মাত্র 20 বছরে বয়সে TB রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় সুকান্ত ভট্টাচার্যের ৷ ভরতি ছিলেন যাদবপুরের TB হাসপাতালে ৷ তবে এত অল্প সময় বাঁচলেও নিজের কাজের জন্য স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন তিনি ৷

তাঁর কবিতার অমর পংক্তি মানুষের মুখে মুখে- খুদার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি !

কবিতার নাম "বোধন"৷ যেখানে আশ্চর্য মুন্সিয়ানায় মহামারি পরিস্থিতির কথা বর্ণনা করেছিলেন সুকান্ত ভট্টাচার্য ৷ যেন আজকের পৃথিবীর চিত্রই উঠে এসেছিল !

"পৃথিবী উদাস, শোনো হে দুনিয়াদার!

সামনে দাঁড়িয়ে মৃত্যু-কালো পাহাড়

দগ্ধ হৃদয়ে যদিও ফেরাও ঘাড়

সামনে পেছনে কোথাও পাবে না পার:

কি করে খুলবে মৃত্যু-ঠেকানো দ্বার-

এই মুহূর্তে জবাব দেবে কি তার?"

আধুনিক বাংলা কবিতার অন্যতম নাম সুকান্ত ভট্টাচার্য ৷ রবীন্দ্র পরবর্তী কবি হওয়া সত্ত্বেও জনপ্রিয়তার তুঙ্গ স্পর্শ করা এই কবির নাম উচ্চারিত হয় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও কাজি নজরুল ইসলামের মতো মহাকবিদের সঙ্গে৷ সুকান্তর অধিকাংশ রচনা প্রকাশিত হয় মৃত্যু পরবর্তীকালে ৷ জীবৎকালে তাঁর কবিতা ততখানি চর্চিত ছিল না৷ অথচ সেই কবিই মৃত্যুর পর বিশ শতকের অন্যতম জনপ্রিয় কবি হয়ে ওঠেন ৷ সুকান্ত ভট্টাচার্যের কাব্যভাবনায় প্রভাবিত পরের প্রজন্মের প্রথিতযশা কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়, বিখ্যাত সংগীত পরিচালক সলিল চৌধুরি প্রমুখ ৷ সলিল চৌধুরি সুকান্তর কবিতা থেকে জনপ্রিয় গান তৈরি করেন ৷ কিন্তু এই কবি পাঠকমনে এতখানি প্রভাব বিস্তার করেন কীভাবে ?

অন্যতম কারণ, সুকান্তর কবিতার বহুমুখী চরিত্র ৷ সমাজচিন্তা, জাতীয়তাবাদ, মানবিকতা, এমননকী রোম্যান্টিসিজ়মও তাঁর কবিতার বিষয় ৷

সুকান্ত ভট্টাচার্য যদি আর তিন মাস বাঁচতেন তাহলে হয়ত তাঁর জীবনের সেরা উপহার পেতেন! কবির মত্যুর ঠিক তিন মাস দু'দিন পরেই সেই তারিখ---15 অগাস্ট, 1947 ৷ কবির প্রাণাধিক দেশ স্বাধীন হয় ৷ বেঁচে থাকলে এই দিনে 21 শে পা দিতেন ৷ কিন্তু TB রোগে মৃত্যু হয় ৷ আজ বেঁচে থাকলে 95 বছর বয়স হত সুকান্ত ভট্টাচার্যর ৷

প্রথম জীবন ও শিক্ষা :

সুকান্ত ভট্টাচার্যর জন্ম 1926 সালের 15 অগাস্ট ৷ বাবা নিবারণ চন্দ্র ভট্টাচার্য, মা সুনীতা দেবী ৷ সুকান্তর বাবার ছিল প্রকাশনা সংস্থা ৷ সরস্বতী লাইব্রেরি ৷ নিবরাণ ও সুনীতার ছয় সন্তানের মধ্যে দ্বিতীয় ছিলেন কবি ৷ সুকান্ত ভট্টাচার্যের সহদররা হলেন সুশীল, প্রশান্ত, বিভাস, অশোক ও অমিয় ৷ বাম নেতা তথা রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সম্পর্কে সুকান্ত ভট্টাচার্যের ভাইপো ৷

কবির জন্ম মাতুলালয়ে ৷ কলকাতার কালীঘাট এলাকায় ৷ পূর্বপুরুষের বাড়ি ছিল বর্তমান বাংলাদেশে ৷ গোপালগঞ্জের কোতালিপাড়ায় ৷

লেখালিখি শুরু:

প্রথম ছোটোগল্প প্রকাশিত হয় স্কুল ম্যগাজিন "সঞ্চয়"-এ ৷ পরবর্তী রচনা "বিবেকানন্দের জীবনী" প্রকাশিত হয় বিজন ভট্টাচার্য সম্পাদিত "শিখা" পত্রিকায়৷

কমিউনিস্ট দলে যোগ:

1944 সালে কমিউনিস্ট পার্টি অফ ইন্ডিয়াতে যোগ দেন সুকান্ত ভট্টাচার্য ৷ এই সময়ই প্রকাশিত হয় "আকাল"৷ প্রকাশক "অ্যান্টি-ফ্যাসিস্ট রাইটার্স অ্যান্টি আর্টিস্টস" ৷ 1945 সালে এন্ট্রান্স পরীক্ষা দিলেও পাশ করতে পারেননি কবি ৷ ততদিনে তিনি দলের দৈনিক মুখপাত্র "দৈনিক স্বাধীনতা"র যুব বিভাগ "কিশোর সভা"র সম্পাদক ৷

মৃত্যু:

1947 সালের 13 মে ৷ মাত্র 20 বছরে বয়সে TB রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় সুকান্ত ভট্টাচার্যের ৷ ভরতি ছিলেন যাদবপুরের TB হাসপাতালে ৷ তবে এত অল্প সময় বাঁচলেও নিজের কাজের জন্য স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন তিনি ৷

তাঁর কবিতার অমর পংক্তি মানুষের মুখে মুখে- খুদার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি !

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.