কলকাতা, 02 মে : মুর্শিদাবাদ ৷ দক্ষিণবঙ্গের এই জেলা রাজ্য রাজনীতিতে অধীর-গড় হিসেবে বিখ্যাত ৷ আর সেই জেলাতেই এবার শূন্য হাতে ফিরতে হল কংগ্রেসকে ৷ যে জেলায় এক সময় অধীরের নেতৃত্বে কংগ্রেসের দাপট তো চলতই, পাশাপাশি দলের বিরুদ্ধে গিয়ে নির্দল প্রার্থীকে জিতিয়ে আনার নজির রয়েছে বহরমপুরের সাংসদের ৷ অথচ সেই জেলায় তৃণমূলের কাছে পর্যদুস্ত হতে হল কংগ্রেসকে ৷ শুধু এখানেই শেষ নয় ৷ বহরমপুর বিধানসভা আসনেই হারল কংগ্রেস ৷ তাও আবার ভারতীয় জনতা পার্টির কাছে ৷
ফলে এই নিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে রাজ্যের রাজনৈতিক মহলে ৷ কেন এমন ফলাফল হল মুর্শিদাবাদে ? কেন সেখানে কংগ্রেসকে খালি হাতে ফিরতে হল, এই নিয়েই কাটাছেঁড়া চলছে বিভিন্ন মহলে ৷ আর এই চর্চা আরও বড় হচ্ছে, তার কারণ মুর্শিদাবাদ সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলা ৷ আর সেই কারণেই কার্যত কংগ্রেসের প্রতি বরাবর সমর্থন দিয়ে এসেছেন মুর্শিদাবাদের ভোটাররা ৷ তাহলে এবার কেন তাঁরা মুখ ফিরিয়ে নিলেন ?
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, মুর্শিদাবাদে ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু হচ্ছিল কংগ্রেস ৷ তার একটা প্রমাণ 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে পাওয়া গিয়েছিল ৷ ওই জেলার তিনটি লোকসভা আসনের মধ্যে একটিতে জিতেছিল কংগ্রেস ৷ আর সেটি ছিল বহরমপুর ৷ যেখান থেকে জিতেছিলেন অধীররঞ্জন চৌধুরী ৷ বাকি দু’টি আসন পেয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস ৷
সেই ধারা 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনেও বজায় থাকল ৷ এর সঙ্গে যুক্ত হল সংখ্যালঘু ফ্যাক্টর ৷ রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা অন্তত এমনটাই মনে করছেন ৷ তাঁদের মতে, বিজেপিকে ঠেকাতে মানুষের কাছে বিকল্প হিসেবে তৈরি হয়েছে তৃণমূল ৷ কংগ্রেসকে মানুষ বিকল্প বলে মনে করেনি ৷ তার উপর আইএসএফ-এর সঙ্গে জোট নিয়ে জটিলতা ছিল ওই জেলায় ৷ সেই কারণেই সংখ্যালঘু ভোটের বড় অংশ তৃণমূলের দিকে চলে গিয়েছে ৷
আরও পড়ুন : গণি-মিথের অবসান, তৃণমূল ও বিজেপিতেই ভরসা রাখল মালদা
যদিও কংগ্রেসের আইনজীবী নেতা পার্থপ্রতীম বিশ্বাসের মতে, কংগ্রেস কখনও ধর্মের নামে রাজনীতি করেনি ৷ কিন্তু নীতির বিরুদ্ধে গিয়ে এবার বামেদের চাপে আইএসএফের সঙ্গে জোট করতে বাধ্য হয় কংগ্রেস ৷ সেটাই কংগ্রেসের বিরুদ্ধে গিয়েছে ৷