কলকাতা, 27 মার্চ : ভোটদানের হার ৷ যা দেখে নাকি আভাস পাওয়া যায় যে ফলাফল কোন পক্ষের দিকে হতে চলেছে ৷ শনিবার পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফা ছিল ৷ সেখানে দিনের শেষে ভোটদানের হার প্রায় 80 শতাংশ ৷ স্বাভাবিক ভাবেই তাই প্রশ্ন উঠছে যে এটা কীসের ইঙ্গিত ? মানুষ কি গণতন্ত্রের এই উৎসবে যোগদান করে শাসক দল তৃণমূলকে ক্ষমতায় রাখার পক্ষে রায় দিলেন ? নাকি পুরোটাই প্রতিষ্ঠান বিরোধী ভোট হল ?
শনিবার ভোট ছিল পশ্চিমবঙ্গের পাঁচ জেলায়৷ দিনের শেষে নির্বাচন কমিশনের হিসেব অনুযায়ী, পুরুলিয়ায় 77.13 শতাংশ, বাঁকুড়ায় 80.03 শতাংশ, ঝাড়গ্রামে 80.55 শতাংশ, পশ্চিম মেদিনীপুরে 80.16 শতাংশ ও পূর্ব মেদিনীপুরে 82.42 শতাংশ ভোট পড়েছে ৷ সার্বিক ভাবে রাজ্যের 30 টি আসনে ভোটদানের হার 79.79 ৷
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন যে যখন ভোটদানের হার বেশি হয়, তখন সাধারণত শাসক পক্ষের বিরুদ্ধে ক্ষোভ সাধারণ মানুষ উগরে দেন ইভিএমে ৷ সেই হিসাব ধরলে এই ভোট তৃণমূল কংগ্রেসের বিপক্ষে যাওয়া উচিত ৷ আর যদি সত্যিই তাই হয়, তাহলে কোন পক্ষে পড়ল ভোট ! বিজেপির দিকে নাকি সিপিএম-কংগ্রেস-আইএসএফ এর সংযুক্ত মোর্চার দিকে ?
যদিও পশ্চিমবঙ্গে ভোটদানের হার বরাবর ভালো হয় ৷ বাম জমানায় বহুবার এমন উদাহরণ দেখা গিয়েছে ৷ আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ভোট শাসক পক্ষের দিকেই গিয়েছে ৷ এমনকী, তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পরও সেই ট্রেন্ড বজায় থেকেছে ৷ তাই রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের অন্য একটি অংশ এতে চিন্তার কোনও কারণ দেখছেন না শাসক দলের জন্য ৷
তবে 2019 সালে লোকসভা নির্বাচনেও রাজ্যে ভোটদানের হার বেশ ভালো ছিল ৷ আর ফলাফল প্রকাশের পর দেখা যায় যে 18 কেন্দ্রে মানুষ বিজেপির পক্ষেই মত দিয়েছেন ৷ সামান্য হলেও এগিয়ে থেকে তৃণমূল জিতেছিল 22টি আসনে ৷
কিন্তু রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বরং আগ্রহী অন্য একটি বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে ৷ আর তা হল, ভোটদানের ট্রেন্ড ৷ কারণ, অন্যবার ভোটদান বেশি হলেও ভোট দেওয়ার প্রবণতা কিন্তু দুপুর গড়িয়ে বিকেল শুরু হওয়ার সময় থেকে একেবারে শেষ পর্যন্ত মারাত্মক থাকে ৷ এবার কিন্তু একেবারে উল্টো ছবি দেখা গিয়েছে ৷ সকাল থেকেই বুথে বুথে লম্বা লাইন চোখে পড়েছে ৷ দুপুরের আগেই অধিকাংশ জায়গায় 70 শতাংশ ভোটদান হয়ে যায় ৷
আরও পড়ুন : খুনের হুমকি, এজেন্টকে মারধর ; প্রথম দফার সাত সতেরো
যা দেখে পলিটিক্যাল পণ্ডিতদের ধারণা হয় যে এবার ভোটদানের 100-এর কাছাকাছি চলে যেতে পারে ৷ যদিও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি ৷ 80-র কাছে গিয়েই থেমেছে ভোটদানের হার ৷ আর এর ফলে লাভ কোন পক্ষের হল, তা জানার জন্য অপেক্ষা করতেই হবে আগামী 2 মে পর্যন্ত ৷