ETV Bharat / city

নির্বাচনী কাঁটায় দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধের মুখে মহানগরের একাধিক স্কুলের দরজা

গত 12 ফেব্রুয়ারি নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য খুলেছিল স্কুলের দরজা । ওই শ্রেণিগুলির ছাত্র-ছাত্রীরা সশরীরে এসে অংশগ্রহণ করেছিল পঠন-পাঠন ও পরীক্ষায় । এবার নির্বাচনের কারণে ফের সশরীরে ক্লাস বন্ধ করে ভার্চুয়াল ক্লাসে ফিরতে চলেছে একাধিক সরকারি স্কুল ।

নির্বাচনী কাঁটায় দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধের মুখে মহানগরের একাধিক স্কুলের দরজা
নির্বাচনী কাঁটায় দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধের মুখে মহানগরের একাধিক স্কুলের দরজা
author img

By

Published : Apr 8, 2021, 7:05 PM IST

কলকাতা, 8 এপ্রিল : রাজ্যে চলছে বিধানসভা নির্বাচন । আর সেই বিধানসভা নির্বাচনের কাঁটায় বন্ধ হতে চলেছে মহানগরের একাধিক স্কুলের দরজা । নির্বাচনের ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই, নির্বাচনে নিযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মচারীরা প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য নির্বাচন সংক্রান্ত কাজকর্মে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় পঠন-পাঠনের গতি কিছুটা কমে গিয়েছিল । এবার নির্বাচনের কাজে যে স্কুলগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলি দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ।

গত 12 ফেব্রুয়ারি নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য খুলেছিল স্কুলের দরজা । ওই শ্রেণিগুলির ছাত্র-ছাত্রীরা সশরীরে এসে অংশগ্রহণ করেছিল পঠন-পাঠন ও পরীক্ষায় । করোনা আবহে যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে, সতর্কতা অবলম্বন করে চলেছিল সশরীরে ক্লাস । দীর্ঘ 11 মাস পর স্কুলে সশরীরে ক্লাস চালু হওয়ায় পঠন-পাঠনে গতি এলেও তা কিছুটা থমকে গিয়েছিল রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ঘোষণা হওয়ার পর । এবার নির্বাচনের কারণে ফের সশরীরে ক্লাস বন্ধ করে ভার্চুয়াল ক্লাসে ফিরতে চলেছে একাধিক সরকারি স্কুল ।

বেথুন কলেজিয়েট স্কুলে বুধবার কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে গিয়েছে । সকাল 9টায় কেন্দ্রীয় বাহিনী স্কুলে ঢোকার খবর পেতেই স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ওই গার্লস স্কুলটির কর্তৃপক্ষ । বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী বলেন, "আমাদের স্কুলে গতকাল কেন্দ্রীয় বাহিনী ঢুকে গিয়েছে । বাহিনী 30 এপ্রিল পর্যন্ত থাকবে ততদিন আমরা বন্ধ রাখব ‌। অনলাইন ক্লাস চলবে এই সময়টাতে । আগে অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনেও ক্লাস হচ্ছিল । এই সময়টার জন্য পুরোপুরি অনলাইনে ক্লাস হবে ।"

শাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া নাগ বলেন, "ইলেকশন কমিশন যে স্কুলগুলো নিয়ে নিয়েছে সেখানে তো মেয়েদের আনা যাবে না । সেগুলো বন্ধ করতেই হবে । আমার স্কুল নিয়ে নিয়েছে প্রায় 15-20 দিন আগে । প্যাণ্ডেল বাঁধা হচ্ছে । এতদিন ক্লাস হচ্ছিল । তবে, এখনও কেন্দ্রীয় বাহিনী ঢোকেনি । কেন্দ্রীয় বাহিনী ঢুকে গেলে তখন বন্ধ করে দিতে হবে । ভার্চুয়ালে ক্লাস চলবে ।"

অন্যদিকে, বেশ কয়েকদিন ধরেই রাজ্য তথা গোটা দেশেই ঊর্ধ্বমুখী কোরোনার গ্রাফ । নির্বাচনের কারণে করোনা স্কুলে চলে আসতে পারে এই আশঙ্কা করে 11 এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি দেওয়া হয়েছে যাদবপুর বিদ্যাপীঠে । ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য বলেন, "আমাদের প্রায় সকলেরই ভোটের দায়িত্ব পড়ে গিয়েছে। বেশিরভাগ শিক্ষক বাড়িতে গিয়ে ভোট নিচ্ছে বয়স্কদের । এই অবস্থায় হঠাৎ করে বাড়িতে থাকাকালীন একজনের করোনা ধরা পড়েছে । শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভাব পড়ছে । উচ্চমাধ্যমিক ও মাধ্যমিকের পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে । ঊর্ধ্বমুখী করোনা গ্রাফ । মা-বাবা ভোট দিতে যাবে । সেখান থেকে করোনা হতে পারে । শেষ পর্যন্ত স্কুলের দোষ হবে । এই সমস্ত চিন্তাভাবনা করে 5 এপ্রিল থেকে 11 এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি দেওয়া হয়েছে । 12 এপ্রিল স্কুল চালু করার আবার চেষ্টা করব যদি অন্য কোনও সমস্যা না হয় ।"

অন্যদিকে, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে অভিভাবক সকলেই । যেমন, হিন্দু স্কুলে ইতিমধ্যেই করোনা আবহে 6 দিনের পরিবর্তে 3 দিন সশরীরে ক্লাস করানোর আবেদন জানানো হয়েছে । হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্ত বলেন, "আমরা এখনই স্কুল বন্ধ করছি না । অভিভাবকদের কাছ থেকে আবেদন এসেছে, স্কুল যাতে তিনদিন খোলা রাখতে ও তিনদিন বন্ধ রাখতে । তার প্রেক্ষিতেই আমরা সোমবার একটা বৈঠক ডাকছি । সেখানে অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষিকা সকলেই থাকবেন । সেখানে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কিছু করা যায় কি না সেটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করব । সেখানে যা সিদ্ধান্ত হবে সেটা লাগু করা হবে ।" হিন্দু স্কুলে শুক্রবার থেকে বিভিন্ন কারণে 18 এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি রয়েছে । সোমবারের বৈঠকে যা সিদ্ধান্ত হবে তা 19 এপ্রিল থেকে লাগু করা হবে ।

তবে, লম্বা ছুটি দেওয়া হলেও সরকারি নির্দেশিকা ছাড়া স্কুল বন্ধ করার কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না কোনও স্কুল । শাশ্বতী অধিকারী বলেন, "সরকারি নির্দেশিকা না পেলে আমরা কিছু করতে পারব না । স্কুল শিক্ষা দফতর বন্ধ করে দিতে বললে আমরা বন্ধ করে দেব । সেরকম কিছু এখনও আসেনি । চিন্তা তো আছেই । কিছুদিন ধরে উপস্থিতির হারাও একটু কম ছিল । সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, স্কুল খোলা থাকবে । তবে, অভিভাবকরা পাঠাবেন কি না সেটা তাঁরা ঠিক করবেন । সরকার ঠিক করবে স্কুল খোলা থাকবে না বন্ধ করা হবে ।"

আরও পড়ুন : উত্তরে কামব্যাক, দক্ষিণে ক্ষমতা ধরে রাখাই চতুর্থ দফায় চ্যালেঞ্জ শাসক দলের

পাপিয়া নাগ বলেন, "করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সরকারি নির্দেশিকা ছাড়া কিছু করতে পারব না । আশঙ্কা, চিন্তা, উদ্বেগ সবসময়ই রয়েছে । এতগুলো বাচ্চা আসছে, যাচ্ছে গণপরিবহণে । উদ্বেগ নিয়েই আমরা স্কুল খুলেছি । এবার সরকারেরও চিন্তাভাবনা করা উচিত ।"

কলকাতা, 8 এপ্রিল : রাজ্যে চলছে বিধানসভা নির্বাচন । আর সেই বিধানসভা নির্বাচনের কাঁটায় বন্ধ হতে চলেছে মহানগরের একাধিক স্কুলের দরজা । নির্বাচনের ঘোষণা হওয়ার পর থেকেই, নির্বাচনে নিযুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মচারীরা প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য নির্বাচন সংক্রান্ত কাজকর্মে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় পঠন-পাঠনের গতি কিছুটা কমে গিয়েছিল । এবার নির্বাচনের কাজে যে স্কুলগুলিকে ব্যবহার করা হচ্ছে সেগুলি দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ।

গত 12 ফেব্রুয়ারি নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের জন্য খুলেছিল স্কুলের দরজা । ওই শ্রেণিগুলির ছাত্র-ছাত্রীরা সশরীরে এসে অংশগ্রহণ করেছিল পঠন-পাঠন ও পরীক্ষায় । করোনা আবহে যাবতীয় স্বাস্থ্যবিধি মেনে, সতর্কতা অবলম্বন করে চলেছিল সশরীরে ক্লাস । দীর্ঘ 11 মাস পর স্কুলে সশরীরে ক্লাস চালু হওয়ায় পঠন-পাঠনে গতি এলেও তা কিছুটা থমকে গিয়েছিল রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের ঘোষণা হওয়ার পর । এবার নির্বাচনের কারণে ফের সশরীরে ক্লাস বন্ধ করে ভার্চুয়াল ক্লাসে ফিরতে চলেছে একাধিক সরকারি স্কুল ।

বেথুন কলেজিয়েট স্কুলে বুধবার কেন্দ্রীয় বাহিনী এসে গিয়েছে । সকাল 9টায় কেন্দ্রীয় বাহিনী স্কুলে ঢোকার খবর পেতেই স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় ওই গার্লস স্কুলটির কর্তৃপক্ষ । বেথুন কলেজিয়েট স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা শাশ্বতী অধিকারী বলেন, "আমাদের স্কুলে গতকাল কেন্দ্রীয় বাহিনী ঢুকে গিয়েছে । বাহিনী 30 এপ্রিল পর্যন্ত থাকবে ততদিন আমরা বন্ধ রাখব ‌। অনলাইন ক্লাস চলবে এই সময়টাতে । আগে অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনেও ক্লাস হচ্ছিল । এই সময়টার জন্য পুরোপুরি অনলাইনে ক্লাস হবে ।"

শাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পাপিয়া নাগ বলেন, "ইলেকশন কমিশন যে স্কুলগুলো নিয়ে নিয়েছে সেখানে তো মেয়েদের আনা যাবে না । সেগুলো বন্ধ করতেই হবে । আমার স্কুল নিয়ে নিয়েছে প্রায় 15-20 দিন আগে । প্যাণ্ডেল বাঁধা হচ্ছে । এতদিন ক্লাস হচ্ছিল । তবে, এখনও কেন্দ্রীয় বাহিনী ঢোকেনি । কেন্দ্রীয় বাহিনী ঢুকে গেলে তখন বন্ধ করে দিতে হবে । ভার্চুয়ালে ক্লাস চলবে ।"

অন্যদিকে, বেশ কয়েকদিন ধরেই রাজ্য তথা গোটা দেশেই ঊর্ধ্বমুখী কোরোনার গ্রাফ । নির্বাচনের কারণে করোনা স্কুলে চলে আসতে পারে এই আশঙ্কা করে 11 এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি দেওয়া হয়েছে যাদবপুর বিদ্যাপীঠে । ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্য বলেন, "আমাদের প্রায় সকলেরই ভোটের দায়িত্ব পড়ে গিয়েছে। বেশিরভাগ শিক্ষক বাড়িতে গিয়ে ভোট নিচ্ছে বয়স্কদের । এই অবস্থায় হঠাৎ করে বাড়িতে থাকাকালীন একজনের করোনা ধরা পড়েছে । শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভাব পড়ছে । উচ্চমাধ্যমিক ও মাধ্যমিকের পরীক্ষা হয়ে গিয়েছে । ঊর্ধ্বমুখী করোনা গ্রাফ । মা-বাবা ভোট দিতে যাবে । সেখান থেকে করোনা হতে পারে । শেষ পর্যন্ত স্কুলের দোষ হবে । এই সমস্ত চিন্তাভাবনা করে 5 এপ্রিল থেকে 11 এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি দেওয়া হয়েছে । 12 এপ্রিল স্কুল চালু করার আবার চেষ্টা করব যদি অন্য কোনও সমস্যা না হয় ।"

অন্যদিকে, করোনা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন স্কুল কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে অভিভাবক সকলেই । যেমন, হিন্দু স্কুলে ইতিমধ্যেই করোনা আবহে 6 দিনের পরিবর্তে 3 দিন সশরীরে ক্লাস করানোর আবেদন জানানো হয়েছে । হিন্দু স্কুলের প্রধান শিক্ষক শুভ্রজিৎ দত্ত বলেন, "আমরা এখনই স্কুল বন্ধ করছি না । অভিভাবকদের কাছ থেকে আবেদন এসেছে, স্কুল যাতে তিনদিন খোলা রাখতে ও তিনদিন বন্ধ রাখতে । তার প্রেক্ষিতেই আমরা সোমবার একটা বৈঠক ডাকছি । সেখানে অভিভাবক, শিক্ষক-শিক্ষিকা সকলেই থাকবেন । সেখানে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কিছু করা যায় কি না সেটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করব । সেখানে যা সিদ্ধান্ত হবে সেটা লাগু করা হবে ।" হিন্দু স্কুলে শুক্রবার থেকে বিভিন্ন কারণে 18 এপ্রিল পর্যন্ত ছুটি রয়েছে । সোমবারের বৈঠকে যা সিদ্ধান্ত হবে তা 19 এপ্রিল থেকে লাগু করা হবে ।

তবে, লম্বা ছুটি দেওয়া হলেও সরকারি নির্দেশিকা ছাড়া স্কুল বন্ধ করার কোনও সিদ্ধান্ত নেবে না কোনও স্কুল । শাশ্বতী অধিকারী বলেন, "সরকারি নির্দেশিকা না পেলে আমরা কিছু করতে পারব না । স্কুল শিক্ষা দফতর বন্ধ করে দিতে বললে আমরা বন্ধ করে দেব । সেরকম কিছু এখনও আসেনি । চিন্তা তো আছেই । কিছুদিন ধরে উপস্থিতির হারাও একটু কম ছিল । সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, স্কুল খোলা থাকবে । তবে, অভিভাবকরা পাঠাবেন কি না সেটা তাঁরা ঠিক করবেন । সরকার ঠিক করবে স্কুল খোলা থাকবে না বন্ধ করা হবে ।"

আরও পড়ুন : উত্তরে কামব্যাক, দক্ষিণে ক্ষমতা ধরে রাখাই চতুর্থ দফায় চ্যালেঞ্জ শাসক দলের

পাপিয়া নাগ বলেন, "করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সরকারি নির্দেশিকা ছাড়া কিছু করতে পারব না । আশঙ্কা, চিন্তা, উদ্বেগ সবসময়ই রয়েছে । এতগুলো বাচ্চা আসছে, যাচ্ছে গণপরিবহণে । উদ্বেগ নিয়েই আমরা স্কুল খুলেছি । এবার সরকারেরও চিন্তাভাবনা করা উচিত ।"

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.