কলকাতা, 8 এপ্রিল : আগামী শনিবার চতুর্থ দফার নির্বাচন রয়েছে পশ্চিমবঙ্গে ৷ রাজনৈতিক ভাবে এই দফার ভোট খুবই গুরুত্বপূর্ণ ৷ বিশেষ করে হাওড়া ও হুগলি এবং উত্তরবঙ্গের আসনগুলির দিকেই সকলের নজর রয়েছে ৷ কারণ, এই জায়গাগুলিতে 2016 সালের পর থেকে এই জায়গাগুলিতে ক্রমশ শক্তিশালী হয়েছে বিজেপি ৷ ফলে সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের অবস্থা ঠিক কী হয়, সেই দিকেই তাকিয়ে রয়েছেন সকলে ৷
হাওড়ার 9টি আসনে ভোট হবে আগামী শনিবার ৷ এই আসনগুলির সবক’টিতে তৃণমূল কংগ্রেস 2016 সালের লোকসভা নির্বাচনে জিতেছিল ৷ কিন্তু 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে এই 9টি আসনের মধ্যে 8টিতে তৃণমূল এগিয়েছিল ৷ আর হাওড়া উত্তরে এগিয়ে ছিল বিজেপি ৷
এই হিসেবে এই অঞ্চলকে তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তঘাঁটি হিসেবে সামগ্রিক ভাবে মনে হতে পারে ৷ কিন্তু গত কয়েক মাসে ছবিটা একেবারেই বদলে গিয়েছে ৷ কারণ, হাওড়ার এই অংশ থেকেই তৃণমূলে সবচেয়ে বড় ভাঙন হয়েছে ৷
আর তার মধ্যে অন্যতম হাওড়ার ডোমজুড় ৷ ওই কেন্দ্রের গত দু’বার তৃণমূলের টিকিটে জিতেছিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ মমতার সরকারে তিনি মন্ত্রীও ছিলেন ৷ দলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি তৃণমূল ছাড়েন ও বিজেপিতে যোগদান করেন ৷ তাঁর সঙ্গেই আরও অনেকে তৃণমূল ছেড়েছিলেন ৷ সেই তালিকায় অন্যতম বৈশালী ডালমিয়া ৷ পরে টিকিট না পেয়ে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদান করেন শিবপুরের বিধায়ক জটু লাহিড়িও ৷
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ব্যাখ্যা, এই অঞ্চলে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রভাব রয়েছে ৷ তার বড় কারণ তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তি ৷ যা দিয়েই তিনি এতদিন নিজের প্রভাব বিস্তার করেছেন ৷ আর এই ভোটে সেটাই তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ৷ অন্যদিকে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসে নিজের সমর্থন অটুট রাখাও রাজীবের কাছে চ্যালেঞ্জ ৷
অন্যদিকে শনিবার ভোটগ্রহণ হবে হুগলির সিঙ্গুরেও ৷ সিঙ্গুর এমন একটি এলাকা যেখান থেকে রাজনৈতিক উত্থান হয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ৷ সেই সিঙ্গুরের তৃণমূল বিধায়ক এবার বিজেপির প্রার্থী ৷ তার উপর গত লোকসভা নির্বাচনেও সিঙ্গুরে এগিয়েছিল বিজেপি ৷ ফলে আন্দোলনের আঁতুরঘর-সহ গোটা হুগলিতেও ভালো ফল করা তৃণমূলের অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷
2016 ও 2019 সালের ফলে দক্ষিণ 24 পরগনায় সেভাবে পরিবর্তন হয়নি ৷ ফলে সেখানে তৃণমূল কংগ্রেসের নিজেদের আসন ধরে রাখতে হবে ৷ আর বিজেপির কাছে চ্য়ালেঞ্জ সেখানে তৃণমূলকে হারিয়ে অধিকাংশ আসন ছিনিয়ে আনা ৷
অন্যদিকে 2016 সালে উত্তরবঙ্গের কোচবিহার ও আলিপুরদুয়ারে যে অবস্থায় ছিল তৃণমূল ৷ 2019 এ সেখান থেকে অনেকটাই খারাপ অবস্থায় চলে যায় শাসক দল ৷ ফলে শনিবারের ভোটে সেখানকার আসনগুলিতে হারানো জমি পুনরুদ্ধার করতে চাইবে তৃণমূল ৷
আরও পড়ুন : 10টা শো-কজ করলেও আমার কিছু যায় আসে না : মমতা
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের বক্তব্য, সব কিছু ছাপিয়ে হাওড়া ও হুগলিতেই নজর থাকবে বেশি ৷ কারণ, সেখানে দলের নেতাদের সঙ্গে কর্মী-সমর্থকরা বিজেপি মুখি হলেন নাকি তৃণমূলের জমি শক্ত রইল, সেই উত্তরই ইভিএম বন্দি হবে আগামী শনিবার ৷ আর সেই উত্তর কী, তা জানার জন্য অপেক্ষা করতেই হবে আগামী 2 মে পর্যন্ত ৷