কলকাতা, 25 মার্চ: বঙ্গে দ্বিতীয় দফার নির্বাচনেও ফৌজদারি মামলায় জড়িতদের অনেকেই নানা দলের প্রার্থী ৷ অ্যাসোসিয়েশন ফর ডেমোক্র্যাটিক রিফর্মসের রিপোর্ট বলছে, প্রথম দফার মতোই দ্বিতীয় দফাতেও 25 শতাংশ প্রার্থীর বিরুদ্ধেই রয়েছে ফৌজদারি মামলা ৷
দ্বিতীয় দফায় 171 জন প্রার্থীর হলফনামা খতিয়ে দেখেছে এডিআর ৷ সেখানেই দেখা গিয়েছে 43 জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে রয়েছে ফৌজদারি মামলা ৷ আবার তাঁদের মধ্যে 36 জনের (21%) বিরুদ্ধে অভিযোগ গুরুতর ৷
একনজরে দেখে নেব কোন দলের কতজন প্রার্থীর বিরুদ্ধে রয়েছে ফৌজদারি ও গুরুতর ফৌজদারি মামলা...
দল | দ্বিতীয় দফার মোট প্রার্থী | ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত | গুরুতর ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত |
বিজেপি | 30 | 17 (57%) | 16 (53%) |
তৃণমূল কংগ্রেস | 30 | 8 (27%) | 5 (17%) |
এসইউসিআই(সি) | 28 | 3 (11%) | 2 (7%) |
সিপিআইএম | 15 | 7 (47%) | 6 (40%) |
জাতীয় কংগ্রেস | 9 | 2 (22%) | 2 (22%) |
বিএসপি | 7 | 2 (29%) | 2 (29%) |
সিপিআই | 2 | 1 (50%) | - |
দ্বিতীয় দফার 11 জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে রয়েছে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের মামলা ৷ খুনের অভিযোগে মামলা রয়েছে একজনের বিরুদ্ধে, তিনি হলেন তালডাংরার সিপিএম প্রার্থী মনোরঞ্জন পাত্র ৷ আর 6 জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে রয়েছে হত্যার চেষ্টার মামলা ৷ দ্বিতীয় দফায় 30টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে 6টি কেন্দ্রকে লাল সতর্কতা কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে ৷ যে কেন্দ্রের 3 বা ততোধিক প্রার্থীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা থাকলে তাকে লাল সতর্কতা কেন্দ্র হিসেবে চিহ্নিত করা হয় ৷
আরও পড়ুন: সুপ্রিম নির্দেশকে বুড়ো আঙুল ! বঙ্গে প্রথম দফার 25% প্রার্থী জড়িত ফৌজদারি মামলায়
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকা না-মেনেই পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল প্রার্থী দিয়েছে বলে জানানো হয়েছে এডিআর-এর রিপোর্টে ৷ বলা হয়েছে, রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম ও দ্বিতীয় দফার প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ রাজনৈতিক দলগুলির উপর কোনও প্রভাব ফেলেনি ৷ কারণ তারা আবারও ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত 25 শতাংশ প্রার্থীকে টিকিট দিয়ে তাদের পুরনো অভ্যেস অনুসরণ করেছে ৷ প্রথম দফার মতোই দ্বিতীয় দফাতেও একই ধারা অব্যাহত ৷
13 ফেব্রুয়ারি 2020 সালের নির্দেশে রাজনৈতিক দলগুলিকে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল, ফৌজদারি মামলা চলা ব্যক্তিকে দল টিকিট দিলে তার কারণ জানাতে হবে এবং অন্যান্য ব্যক্তি যাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ফৌজদারি অপরাধের মামলা নেই, তাঁদেরকে প্রার্থী হিসেবে বেছে নেওয়া হয়নি কেন, তার কারণও জানতে চাওয়া হবে ৷ ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত প্রার্থীদের বাছাইয়ের কারণ অবশ্যই তাঁদের যোগ্যতা, কাজের সাফল্য ও মেধার সঙ্গে সম্পর্কিত হবে, নির্বাচনে তাঁদের জয়লাভের সম্ভাবনা বেশি - এটা কারণ হিসেবে বিবেচ্য হবে না বলে জানিয়ে দেয় সুপ্রিম কোর্ট ৷ শীর্ষ আদালতের এই নির্দেশ সত্ত্বেও যে ভাবে সব রাজনৈতিক দল প্রথম দফার নির্বাচনে ফৌজদারি অপরাধের মামলায় জড়িত ব্যক্তিদের প্রার্থী করেছে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ৷ ভোটের মুখে এই রিপোর্টে ভোটারদের মানসিক দ্বন্দ্ব প্রকট হতে পারে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ৷