কলকাতা, 21 অক্টোবর : উত্তর কলকাতার অন্যতম ঐতিহ্যবাহী পুজো বাগবাজার সর্বজনীন দুর্গোৎসব ও প্রদর্শনী । এ বছর 102 বছরে পা দিল এই পুজো । 100 বছরের বেশি পুরোনো এই পুজোতেও এবার কোরোনার প্রভাব । দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা পুজোর আদলেও এসেছে পরিবর্তন । বাগবাজার সর্বজনীনের দুর্গা পুজোর বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে । উত্তর কলকাতার অন্যতম পুরোনো সর্বজনীন পুজো হওয়ার ফলে জনসমাগমও হয় প্রচুর । পুজো ঘিরে বসে মেলা । এই পুজোর আরও একটি অন্যতম বৈশিষ্ট্য সিঁদুর খেলায় ।
কিন্তু, এ বছর কোরোনা পরিস্থিতিতে স্থগিত থাকছে সিঁদুর খেলা । বিধিনিষেধ থাকছে অঞ্জলির দেওয়ার ক্ষেত্রেও । কোর্টের রায় মেনেই পুজো হবে দাবি পুজো উদ্যোক্তাদের ।
প্রতি বছরের মতোই মন্দিরের আদলে তৈরি হয়েছে মণ্ডপটি । তবে মণ্ডপে প্রবেশের অধিকার নেই সাধারণ মানুষের । মণ্ডপটির তিনদিক খোলা রাখা হয়েছে । দর্শনার্থীরা প্রায় কুড়ি মিটার দূর থেকেই এবছর বাগবাজারের প্রতিমা দর্শন করবেন । অঞ্জলির ক্ষেত্রেও বেশ কিছু বিধিনিষেধ পরিকল্পনা নিয়েছেন পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা । একসঙ্গে অঞ্জলি না দিয়ে মাইকিং করে দূরত্ব বজায় রেখে অঞ্জলি হবে। তাছাড়াও 100 দু'বছর ধরে চলে আসা সিঁদুর খেলা স্থগিত রাখা হয়েছে ।
যদিও এ বছর ছোটো করে হলেও বহু খাবারের দোকান বসেছে । পুজোর উদ্যোক্তারা দাবি করেছেন, মণ্ডপ থেকে অনেকটা দূরত্ব বজায় রেখে ছোটো ছোটো কয়েকটি স্টল বসানো হয়েছে । তবে খাবারের স্টল নিয়ে যেহেতু কোর্ট কোনও আপত্তি জানায়নি তাই কোনও সমস্যা হবে না বলেই আশা প্রকাশ করেছেন পুজো উদ্যোক্তারা । সরকারি বিধিনিষেধ ও কোরোনা বিধি মেনেই এইসব কিছুর আয়োজন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা । এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে আছেন স্থানীয় কাউন্সিলর বাপি ঘোষ । তিনি জানিয়েছেন, কোরোনা মোকাবিলায় সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে । প্রবীণ নাগরিকদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে । নির্দিষ্ট চিহ্ন করে দেওয়া হবে । দূরত্ব বজায় রেখে সেখান থেকেই দর্শনার্থীরা প্রতিমা দর্শন করে বেরিয়ে যাবেন । মাস্ক বাধ্যতামূলক ।
এই পুজোর প্রধান কর্মকর্তা অভ্যাস বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, "প্রতি বছরের মতো এ বছরও খাবারের দোকানের অনুমতি দিলেও থাকবে কড়া নজরদারি । দর্শকরা যাতে দূর থেকে প্রতিমা দর্শন করে বেরিয়ে যেতে পারেন তার ব্যবস্থা করা হয়েছে । কোথাও ভিড় জমতে দেওয়া হবে না । তার জন্য অতিরিক্ত ভলেন্টিয়ার মোতায়েন করা হচ্ছে পুজোর চার দিন । অষ্টমীর অঞ্জলির ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে । সিঁদুর খেলা আপাতত স্থগিত রাখা হচ্ছে এ-বছর ।"
কিন্তু এই পরিস্থিতির মধ্যে অনেক কিছুই বদল করতে হচ্ছে । তবে বাগবাজারের ঐতিহ্যবাহী এই পুজোর রীতিনীতি ও উপাচার একই ভক্তি ও বিশ্বাসের সঙ্গে এই বছরও অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন উদ্যোক্তারা।