কলকাতা, 10 সেপ্টেম্বর : ইন্দিরা গান্ধি মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের (IGNOU) স্নাতকোত্তর বিভাগে চালু হচ্ছে জ্যোতিষ শাস্ত্রের পঠনপাঠন ৷ আর তা নিয়েই শুরু হয়েছে অশান্তি ৷ পড়ুয়াদের একাংশ ইগনুর পাঠক্রমে জ্যোতিষ শাস্ত্রের অন্তর্ভুক্তিতে অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ৷ তাঁদের দাবি, অবিলম্বে পাঠক্রম থেকে জ্যোতিষকে অপসারিত করতে হবে ৷ শুক্রবার এই দাবিতেই সল্টলেকের বিকাশ ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা ৷
আরও পড়ুন : SFI sneer : সরকার শিক্ষা ব্যবস্থায় ট্রাফিক জ্যাম তৈরি করেছে, কটাক্ষ এসএফআইয়ের
প্রসঙ্গত, দেশের বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্যোতিষ শাস্ত্র নিয়ে পড়াশোনা করানো হলেও সেগুলি সবই ডিপ্লোমা কোর্স ৷ এই ধরনের কোর্সের সময়সীমাও স্নাতক বা স্নাতকোত্তরের তুলনায় অনেকটাই কম ৷ কিন্তু, ইগনুতে যা হতে চলেছে, তা একেবারেই আনকোরা বলে জানিয়েছেন শিক্ষাবিদরা ৷ সেখানে পড়ুয়াদের জন্য দু’বছরের স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করা হচ্ছে ৷ আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই শুরু হচ্ছে নয়া পাঠক্রম ৷ সেই মতো, আগ্রহী পড়ুয়াদের কাছ থেকে আবেদনপত্র গ্রহণের কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে ৷
অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (AISA) পক্ষ থেকে স্বর্ণেন্দু মিত্র এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘‘জ্যোতিষ শাস্ত্র পড়ানো হবে বলে ইউজিসি-র তরফে কয়েক বছর আগে একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল ৷ অথচ ভারতীয় সংবিধানের 51-ক ধারা অনুসারে, ভারতের শিক্ষাব্যবস্থা এমন হতে হবে, যাতে পড়ুয়ারা আরও বেশি করে বিজ্ঞান মনোভাবাপন্ন হয়ে উঠতে পারেন ৷ এই ভাবনা মাথায় রেখেই তৈরি করতে হবে পাঠক্রম ৷ বাছতে হবে পড়াশোনার বিষয়বস্তু ৷ সেক্ষেত্রে জ্যোতিষ শাস্ত্রকে কোন বিজ্ঞান মেনে ইগনুর পাঠক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা হল ? কীভাবেই বা এই বিষয়টি নিয়ে একটি পূর্ণাঙ্গ স্নাতকোত্তর কোর্স চালু করতে পারে কর্তৃপক্ষ ? এভাবে পড়ুয়াদের মাথায় অবিজ্ঞানের বীজ বপন করা হচ্ছে ৷ ’’
আরও পড়ুন : Dilip Ghosh : তৃণমূল শাসনে রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থাও সুরক্ষিত নয়, বললেন দিলীপ
আইসা, ভারতীয় বিজ্ঞান ও যুক্তিবাদী সমিতি এবং পশ্চিমবঙ্গ গণবিজ্ঞান সমন্বয় কেন্দ্র এই ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়ে এদিন একটি প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করে ৷ সল্টলেকের করুণাময়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে মিছিল করে ইগনুর আঞ্চলিক দফতরের সামনে যায় তারা ৷ এরপর প্রতিবাদীরা স্মারকলিপি জমা দেন ৷ তাঁদের দাবি, কর্তৃপক্ষর তরফ থেকে গোটা বিষয়টি পুনর্বিবেচনার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে ৷ প্রসঙ্গত, মোদি জমানায় শিক্ষার গেরুয়াকরণ নিয়ে বারবার অভিযোগ উঠছে ৷ ইগনু কর্তৃপক্ষের জ্যোতিষ শাস্ত্র পড়ানোর সিদ্ধান্তে সেই জল্পনাই নতুন করে মাথাচাড়া দেবে বলে মত ওয়াকিবহাল মহলের ৷