এবার শোভনকে ফোন বিধানসভার অধ্যক্ষের

শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ফোন করলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ আগামী সপ্তাহে বিধানসভায় গিয়ে অধ্যক্ষের সঙ্গে দেখা করার কথা জানিয়েছেন শোভনবাবু ৷ আর তাতেই অন্য সমীকরণের ইঙ্গিত পাচ্ছেন অনেকে ৷

কলকাতা, 10 অগাস্ট : তিনি বিধানসভার মৎস্য ও আবাসন বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ৷ কিন্তু, দীর্ঘদিন ধরে বৈঠকে উপস্থিত থাকছেন না ৷ বিধানসভাতেও আসছেন না ৷ তাই অনুপস্থিতির কারণ জানতে চেয়ে আজ শোভন চট্টোপাধ্যায়কে ফোন করলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ কিন্তু, এর পিছনে অন্য কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে । তাঁর অভিমান ভাঙানোর যে চেষ্টা চলছে তাঁর অংশ হিসেবেও বিষয়টিকে দেখছেন তাঁরা । বলছেন, অন্যদের আবেদনে কাজ না হওয়াতেই এবার উদ্যোগী হয়েছেন বিমানবাবু । আগামী সপ্তাহে বিধানসভায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন বলে জানিয়েছেন শোভনবাবু ৷ আর এতেই অনেকের প্রশ্ন, তাহলে কি অবশেষে বরফ গলতে শুরু করল ?

দলের থেকে বেশ কয়েক মাস হল দূরে সরে গিয়েছেন শোভন চট্টোপাধ্যায় ৷ বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে সম্পর্ক ও তাঁকে কেন্দ্র করে পারিবারিক অশান্তির জেরে দলের সঙ্গে দূরত্বের সূত্রপাত ৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বৃত্ত থেকেও সরে গিয়েছেন ৷ এরপর গত বছর নভেম্বরে মন্ত্রিত্ব পদ ছাড়েন ৷ ছাড়তে হয় কলকাতার মেয়র পদও ৷ তারপর থেকেই দলের সঙ্গে কার্যত সম্পর্ক ছিন্ন করেন তিনি ৷ মাঝে BJP-তে যোগ দিতে পারেন বলেও জল্পনা ছড়ায় ৷

ইতিমধ্যে লোকসভা ভোটে ফল খারাপ হয় দলের ৷ তারপর থেকেই ছবিটা বদলাতে শুরু করে ৷ পুরোনো যোদ্ধাকে দলে ফেরাতে তৎপর হয় তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব ৷ তার উপর আগামী বছর পৌরসভা ভোট ৷ সেজন্যই কখনও তাঁকে ফোন করেছেন ফিরহাদ হাকিম আবার কখনও তাঁর বাড়ি গেছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ৷ আবার তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেছেন মমতার ঘনিষ্ঠ বৃত্তে থাকা রতন মুখোপাধ্যায়ও ৷ কিন্তু, তাতেও অভিমান ভাঙানো যায়নি ৷ উলটে দু'দিন আগে বৈশাখি বন্দ্যোপাধ্যায় যখন সাংবাদিক বৈঠক করে পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে তোপ দাগছেন তখন তাঁর পাশেই দেখা গিয়েছিল শোভনবাবুকে ৷ কিন্তু, তারপর সেই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়ি গিয়ে ইস্তফাপত্র জমা দিতে যান বৈশাখি ৷ কিন্তু, তা গ্রহণ করেননি পার্থবাবু ৷

এরই মাঝে শোভনবাবুকে ফোন করলেন বিধানসভার অধ্যক্ষ ৷ আজ তাঁদের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ কথা হয় ৷ তাঁকে বিধানসভায় আসার পরামর্শ দেন বিমানবাবু ৷ কারণ তিনি মৎস্য ও আবাসন বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান ৷ তাই তিনি অনুপস্থিত থাকায় কমিটিগুলির কাজ চালিয়ে যেতে অসুবিধা হচ্ছে ৷ অধ্যক্ষ নাকি তাঁকে বলেছেন, "স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান হয়ে বৈঠকে যোগদান না করা নীতি বহির্ভূত কাজ । মিটিংয়ে অন্য সদস্যদের অসুবিধা হচ্ছে । সদস্যরা আমার কাছে বিষয়টি জানিয়েছেন । " আর অধ্যক্ষের কথা ফেলতে পারেননি শোভনবাবু ৷ বলেছেন, পরের সপ্তাহে বিধানসভায় এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করবেন ৷ আর এতেই অন্য সমীকরণের ইঙ্গিত পাচ্ছেন অনেকে ৷