কলকাতা, 30 মে : শীত-গ্রীষ্ম-বর্ষা কুমারটুলিই ভরসা ৷ প্রতিমা নির্মাণের ক্ষেত্রে কলকাতাবাসীর তো বটে, দেশ বিদেশের বাঙালিরও ভরসার জায়গা কুমোরটুলি ৷ দুর্গা, কালী থেকে জগদ্বাত্রী সব পুজোতেই কুমোরটুলি থেকে প্রতিমা যায় দেশ বিদেশের নানা স্থানে ৷
তবে এবার সেই কুমোরটুলি থেকেই এক্কেবারে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে জায়গা করে নিচ্ছে কৌশিক ঘোষের ফাইবারের কালী প্রতিমা (Artisan Kaushik Ghosh's fibre idol to be displayed in British Museum)। লন্ডনে ব্রিটিশ মিউজিয়ামের অন্য বেশ কিছু জিনিসের সঙ্গেই এই কালী প্রতিমাও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘুরবে । তারপর পাকাপাকিভাবে থাকবে ব্রিটিশ মিউজিয়ামে । রাতারাতি এই প্রাপ্তি আসেনি কৌশিক ঘোষের কাছে । একটু একটু করে খ্যাতি বেড়েছে । রাজ্য তথা দেশের গণ্ডি পেরিয়ে এখন খ্যাতি ছড়িয়েছে বিদেশেও । দুর্গা প্রতিমা পাঠানোর পর এবার বিশেষ সম্মানের হাতছানি । ব্রিটিশ মিউজিয়ামে জায়গা করে নিচ্ছে কুমোরটুলির নামজাদা শিল্পী কৌশিক ঘোষের হাতে গড়া ফাইবারের কালী মূর্তি । সেই সম্মান পেয়ে আপ্লুত শিল্পীও ।
চলতি মাসের 17 তারিখ তাঁর হাতের তৈরি মূর্তি ব্রিটিশ মিউজিয়ামে উন্মোচন করা হয় । শিল্পী কৌশিক ঘোষ বলেন, "সেন্ট্রাল লন্ডনের ক্যামডেন পুজো কমিটির দুর্গা প্রতিমা করি আমি । সেখানকারই এক কর্মকর্তা আমার সঙ্গে ব্রিটিশ মিউজিয়াম কর্তৃপক্ষের যোগাযোগ করিয়ে দেন । এরপর আমাকে মাপ নির্দিষ্ট করে বলে দেওয়া হয় । সেই মতো মূর্তি তৈরি করি আমি ।" মাস খানেকের বেশি সময় লেগেছে ফাইবারের এই মূর্তি করতে । শিসা, মুক্ত, রং ব্যবহার থেকে সোনার তবক দিয়ে সাজিয়েছেন তিনি মূর্তিটিকে । ব্রিটিশ মিউজিয়ামে বিশেষ অনুষ্ঠানে নিজের শিল্পকর্ম নিয়ে বক্তব্য রাখেন কৌশিক ঘোষ । ভারত তথা বাংলার এই শিল্পকর্মের ব্রিটিশ মিউজিয়ামে স্থান পাওয়া অত্যন্ত গর্বের বলেই মনে করেন তিনি । তাঁর কথায়, জুম মিটিং হয়েছিল । একাধিক ছবি পাঠানো হয় তাঁকে । তার মধ্যে থেকে এই ধরনের কালী মূর্তি বানানোর বরাত মেলে । নির্দিষ্ট উচ্চতা বলে দেওয়া হয়েছিল । সেইমতো সব মিলিয়ে সাড়ে পাঁচ ফুটের এই প্রতিমা, বানাতে সময় লেগেছে মাস দেড়েক ।
আরও পড়ুন : Kumartuli : মাকে গড়ছে মেয়ে, কুমোরটুলির সপ্তদশীর হাতে 'প্রাণ' পাচ্ছে দশভূজা
এটা যেকোনও শিল্পীর কাছে অত্যন্ত গর্বের । এমন সম্মান পেয়ে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছেন কৌশিক ঘোষ । শুধু এই মূর্তি মিউজিয়ামে থাকবে তা নয়, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ঘোরানো হবে । এই ঘটনা কুমোরটুলির মুকুটে নতুন পালক জুড়ল বলে মনে করছেন শিল্পীরা ।