কলকাতা, 3 মার্চ: সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করলেন আনিসুর রহমান । আগামী সোমবার এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে ।
গত 26 ফেব্রুয়ারি আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে চলা কুরবান শাহ খুনের মামলা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয় রাজ্য সরকার । সেই অনুযায়ী বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় । একই সঙ্গে তমলুক আদালতে আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারের আবেদন জানায় রাজ্য সরকার । তাতে সম্মতিও দেয় তমলুক সেশন আদালত । তারপরই জরুরি ভিত্তিতে কুরবান শাহর পরিবার কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় । বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর গত 26 ফেব্রুয়ারি রাজ্য সরকারের বিজ্ঞপ্তি এবং তমলুক সেশন আদালতের নির্দেশ খারিজ করে দেন ।
কিসের ভিত্তিতে বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য রাজ্যের বিজ্ঞপ্তি এবং তমলুক আদালতের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করলেন? বুধবার আপিল করার সময় এই প্রশ্নই তোলেন আনিসুর রহমানের পক্ষের আইনজীবী। তিনি প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করে জানান, আত্মপক্ষ সমর্থনে আনিসুর রহমানের বক্তব্য শোনা হয়নি এবং তমলুক আদালতের নির্দেশনামা বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য দেখেননি। একজন ব্যক্তির বক্তব্য না শুনে কীভাবে তিনি রায় দিলেন, সেই প্রশ্ন তোলেন আনিসুর রহমানের আইনজীবী ।
একসময়ে তৃণমূলে থাকা আনিসুর রহমান যোগ দিয়েছিলেন বিজেপিতে । পাঁশকুড়ার তৃণমূল নেতা কুরবান শাহ খুনে অভিযুক্তদের তালিকায় নাম ছিল তাঁর। তারপর তিনি গ্রেফতার হন । এই পরিস্থিতিতে কিছুদিন আগেই তাঁর তৃণমূল যোগের জল্পনা শুরু হয়ে যায় । এরপরই রাজ্য সরকার তাঁর বিরুদ্ধে চলা মামলা প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয় বলে জল্পনা শুরু হয়েছে । গতকাল জরুরি ভিত্তিতে কুরবান শাহের ভাগ্নে জহর শাহ কলকাতা হাইকোর্টে আবেদন জানান, অবিলম্বে যাতে আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে চলা মামলা প্রত্যাহারের আবেদন খারিজ করা হয় ।
মামলাকারীর তরফে আইনজীবী রাজদীপ মজুমদার বলেন, "রাজ্য সরকার কখনও পাবলিক প্রসিকিউটরকে দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করার জন্য বলতে পারে না । আনিসুর রহমান একজন ঘৃণ্য অপরাধী । তাঁকে এইভাবে ছেড়ে দিতে পারে না রাজ্য সরকার ।"
তমলুক সেশন আদালত রাজ্যের আবেদন গ্রহণ করে আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহারে সায় দিয়েছিল গতকালই । কিন্তু কলকাতা হাইকোর্ট সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য নির্দেশ দেন ,রাজ্য সরকার 26 ফেব্রুয়ারি যে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল সেই বিজ্ঞপ্তিকে খারিজ করা হচ্ছে । পাশাপাশি সেশন কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছিল, তাও এখন কার্যকরী হবে না । এই নির্দেশের বিরুদ্ধেই আজ ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেন আনিসুর রহমান ।
আরও পড়ুন : আনিসুরের বিরুদ্ধে মামলা প্রত্যাহার করতে গিয়ে হাইকোর্টে ধাক্কা রাজ্য সরকারের
এর পর গত 26 ফেব্রুয়ারি রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল ৷ তাঁর নামে যে মামলা চলছে, তা প্রত্যাহার করার জন্য গত 26 ফেব্রুয়ারি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল রাজ্য সরকার ৷ সেই বিজ্ঞপ্তি সোমবার তমলুক সেশন কোর্টে জমা দিয়েছিলেন সরকারি আইনজীবী ৷ মঙ্গলবার তমলুক সেশন বিচারক রাজ্যের সেই আবেদন গ্রহণ করেন । কলকাতা হাইকোর্ট সেই আবেদন গ্রহণ খারিজ করতেই আবার আনিসুরকে ধরে পুলিশ ৷ এরপরই হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ের বিরুদ্ধে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল করেন আনিসুর রহমান ।