কলকাতা, 12 অগস্ট: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে (SSC Recruitment Scam) আগেই ইডি (ED)-এর হাতে গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ৷ আর বৃহস্পতিবার বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে (Anubrata Mondal) গ্রেফতার করল সিবিআই (CBI) ৷ সেই ঘটনার পর 24 ঘণ্টা কাটতে না-কাটতেই ইঙ্গিতপূর্ণ টুইট করলেন বিজেপি'র আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য (Amit Malviya) ৷ তাঁর নিশানায় তৃণমূল সুপ্রিমো তথা বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee) ৷
অমিত তাঁর টুইটে লিখেছেন, "ঠিক সেই সময়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় পার্থ এবং অনুব্রতর ফোন ধরা বন্ধ করে দিয়েছিলেন, যখন তাঁকে তাঁদের সবথেকে বেশি প্রয়োজন ছিল ৷ যখনই ঝামেলা শুরু হল, তিনি ওঁদের ছেড়ে চলে গেলেন ৷ অন্য মন্ত্রী, তৃণমূল কর্মী এবং আমলাদের প্রতি বার্তা, যাঁরা ওঁর সঙ্গে লুঠতরাজ, খুন, ধর্ষণে অশুভ আঁতাত করেছিলেন, আপনাদেরও এভাবেই ত্যাগ করা হবে ৷"
আরও পড়ুন: TMC Rally দুর্নীতিকে আড়াল করতে নয়, কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে পথে নামছে তৃণমূল
প্রসঙ্গত, পার্থ চট্টোপাধ্য়ায় নিজেই জানিয়েছিলেন, ইডি-র হাতে গ্রেফতার হওয়ার আগে মমতাকে ফোন করেছিলেন তিনি ৷ কিন্তু, দলনেত্রী ফোন তোলেননি ৷ পরে নিজের অ্য়ারেস্ট মেমোয় মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায়ের নাম লিখিয়েছিলেন পার্থ ৷ এই ঘটনাপ্রবাহ নিয়ে জলঘোলা হয়েছে বিস্তর ৷ অনেকেরই ব্যাখ্য়া, পার্থ একা কোটি কোটি টাকার দুর্নীতি করেননি ৷ এর শিকড় ছড়িয়ে রয়েছে কালীঘাট পর্যন্ত ৷ অথচ, আজ শুধুমাত্র পার্থকেই সেই কুকর্মের খেসারত দিতে হচ্ছে ! তাঁর ফোন না-ধরে মমতা দায় এড়িয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ বিরোধীদের ৷
অন্যদিকে, পার্থর গ্রেফতারির পর মমতা নিজে জানিয়েছিলেন, তিনি দুর্নীতির সঙ্গে কোনও দিন আপস করেননি, করবেনও না ৷ তাই কেউ দোষী হলে সাজা পাবে ৷ তাতে তৃণমূল কংগ্রেস হস্তক্ষেপ করবে না ৷ এই প্রেক্ষাপটে অনুব্রত গ্রেফতার হতেই অনেকের কটাক্ষ, দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে রফা করেছেন মমতা ৷ সেই কারণেই সিবিআই-এর হাতে গ্রেফতার হতে হয়েছে কেষ্টকে ৷ প্রসঙ্গত, গ্রেফতারির পর অনুব্রতকে রীতিমতো বিধ্বস্ত দেখাচ্ছিল ৷ এমনকী, তাঁর চোখে জলও দেখেছেন সাংবাদিকরা ! সমালোচকদের অভিযোগ, নিজে বাঁচতেই পার্থর মতো 'স্নেহের' কেষ্টকেও 'বলি' দিয়েছেন মমতা ! আগামিদিনে মুখ্যমন্ত্রীর বহু কাছের লোকেরই এমন অবস্থা হবে বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহলের একাংশ ৷ শুক্রবারের টুইটে একই ইঙ্গিত দিয়েছেন অমিত মালব্য ৷
-
Mamata Banerjee stopped picking Partha and Anubroto’s calls, just when they needed her the most. She deserted them when it got inconvenient.
— Amit Malviya (@amitmalviya) August 12, 2022 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="
Message for other ministers, TMC workers and bureaucrats, who have colluded with her to loot, murder and rape - you too will be abandoned.
">Mamata Banerjee stopped picking Partha and Anubroto’s calls, just when they needed her the most. She deserted them when it got inconvenient.
— Amit Malviya (@amitmalviya) August 12, 2022
Message for other ministers, TMC workers and bureaucrats, who have colluded with her to loot, murder and rape - you too will be abandoned.Mamata Banerjee stopped picking Partha and Anubroto’s calls, just when they needed her the most. She deserted them when it got inconvenient.
— Amit Malviya (@amitmalviya) August 12, 2022
Message for other ministers, TMC workers and bureaucrats, who have colluded with her to loot, murder and rape - you too will be abandoned.
এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের দুই নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার এবং তাপস রায়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা কোনও মন্তব্য করতে চাননি ৷ পরে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অমিত মালব্যের এই "টুইট থেকেই স্পষ্ট, তৃণমূল কংগ্রেস দুর্নীতির সঙ্গে আপস করে না ৷ সেই কারণেই যাঁদের নাম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের ফোন ধরছেন না ৷ এর থেকেই পরিষ্কার, তিনি দুর্নীতিকে সমর্থন করেন না ৷ এরপরও কে, কেন, কী কারণে টুইট করেছেন, তা আমি বলতে পারব না ৷"
অন্যদিকে বিজেপি-র প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিনহার বক্তব্য হল, "তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এটা স্পষ্ট করে দিলেন যে এঁদের দিয়ে তিনি যে কুকর্মগুলো করিয়েছেন, এখন আর সেই কাদার ছিটে নিজের গায়ে নিতে চাইছেন না তিনি ৷ সেই কারণেই দূরে সরে যেতে চাইছেন ৷ অনুব্রত মণ্ডলকে মাছ বিক্রেতা থেকে ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন তৈরি করেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে ৷ প্রতি পদে আমরা তার প্রমাণ পেয়েছি ৷ পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও ওঁর নিত্যসঙ্গী ছিলেন ৷ কিন্তু, এখন মমতা দেখছেন, কাদার ছিটে তাঁর গায়েও লাগতে পারে ৷ তাই তিনি মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছেন। এটা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক দেউলিয়াপনার একটা বড় নিদর্শন ৷"