আব্বাস সিদ্দিকির অল ইন্ডিয়া সেকিউলার ফ্রন্টের সঙ্গে বাম ও কংগ্রেসের জোট যে এ বার তৃণমূল কংগ্রেসের বিপুল জয়ের অন্যতম অনুঘটক তাতে কোনও সন্দেহ নেই ৷ এআইএসএফ-এর সঙ্গে জোট হওয়ায় মুসলিম ভোট তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে গিয়েছে ৷ পাশাপাশি ভোট ভাগ যাতে না-হয়ে যায়, সে জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে আবেদন জানিয়েছিলেন, তা তাঁর দলকে সুবিধে পাইয়ে দিয়েছে ৷ ফলে 2019 সাল পর্যন্ত যে সংখ্যালঘু ভোট কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের সঙ্গে ছিল, সেটাও এ বার তৃণমূলের পক্ষে চলে গিয়েছে ৷ সেই কারণেই মুর্শিদাবাদ ও মালদার মতো শক্ত ঘাঁটিতেও ভরাডুবি হয়েছে কংগ্রেসের ৷
এ ছাড়াও আব্বাস সিদ্দিকির ভাষণে সাম্প্রদায়িক মন্তব্য বাম ও কংগ্রেসের ধর্মনিরপেক্ষ হিন্দু ভোটারদেরও হতাশ করেছে ৷ ফলে এই বার সেই ভোটারদের একটা বড় অংশ তৃণমূলের পক্ষে গিয়েছে ৷
2019 সালে বাম ও কংগ্রেস ভোটারদের একটা বড় অংশ বিজেপির দিকে সরে গিয়েছিল ৷ তবে 2021 সালে ছবিটা উল্টে গিয়েছে ৷ সেই ভোটগুলিই চলে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে ৷
আরও পড়ুন: ভোটে বিজেপির ব্যর্থতা নিয়ে ফোনে কথা অমিত-কৈলাসের
কাজেই বাম-কংগ্রেসের এআইএসএফ ভুল তৃণমূলের পালে হাওয়া জুগিয়েছে ৷ এর প্রভাব পড়েছে বিজেপির মেরুকরণের রাজনীতিতেও ৷ এ বার তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে অনেকগুলো ফ্যাক্টর কাজ করছিল ৷ প্রথমত আম্ফান ত্রাণ নিয়ে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ ৷ ছিল আরও অভিযোগ ৷ তবে এই ভোট শিফটিং রাজনৈতিক সব অঙ্ক বদলে দিয়েছে ৷
এ বার এই জয়ের পর আগামী 2024 সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কতটা আক্রমণাত্মকভাবে নিজেকে জাতীয় রাজনীতির মুখ হিসেবে তুলে ধরেন সেটাই দেখার ৷ আগামী দিনে সেই আক্রমণ আরও জোরদার হবে বলে আমার ধারণা ৷ আর এই আক্রমণ যত বাড়বে ততই কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের সম্পর্কের তিক্ততা বাড়বে ৷ ফলে বাধা পাবে উন্নয়ন ৷ তবে এটা ঠিক যে, পরবর্তী ক্ষেত্রে বিজেপিকে তাদের বঙ্গনীতি নিয়ে নতুন করে ভাবনা চিন্তা করতে হবে ৷