কলকাতা, 9 জানুয়ারি : তৃণমূলে যোগ দিলেন মিমের কার্যকরী সভাপতি ও সাংগঠনিক প্রধান শেখ আবদুল কালাম। শনিবার তৃণমূল ভবনে চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য তাঁর হাতে দলীয় পতাকা তুলে দেন ৷ শেখ আবদুল কালামের সঙ্গে এদিন মিমের বিভিন্ন জেলার নেতারাও তৃণমূলে যোগ দেন। মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসিসের রাজ্যে সফরের এক সপ্তাহের মধ্যে মিম সংগঠনে বড় ভাঙন ধরালো তৃণমূল ৷ গত মাসেই মিমের যুব শাখার প্রধান মহঃ সফিউল্লা খান তৃণমূলে যোগ দেন ৷
গত রবিবার অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (মিম) প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি রাজ্যে এসে ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকির সঙ্গে দেখা করেন ৷ বিধানসভা নির্বাচনের উত্তাপ বাড়িয়েছে ওয়েইসিসের দল রাজ্যে প্রার্থী দেওয়ার কথা ঘোষণা করায় ৷ মিম রাজ্যে ভোটে দাঁড়ালে তৃণমূলের ভোট ব্যাঙ্কে ভাঙন ধরতে পারে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা ৷ আর এর ফলে সুবিধা হবে বিজেপির ৷ এজন্য তৃণমূল নেতারা মিমকে বিজেপির বি-টিম বলে একাধিকবার কটাক্ষ করেছেন ৷ অন্যদিকে ফুরফুরা শরিফের পিরজাদা আব্বাস সিদ্দিকিও রাজ্যে বেশ কিছু জায়গায় ভোটে লড়াই করার কথা ঘোষণা করেন ৷ এরই মধ্যে মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসিসের সঙ্গে পীরজাদা সিদ্দিকি বৈঠক করে রাজ্যে বিধানসভা ভোটে জোট তৈরি করে লড়াইয়ের কথা ঘোষণা করেন ৷
সম্প্রতি বিহার বিধানসভা নির্বাচনে মিম 5টি আসনে জয় পেয়েছে ৷ বিহারে এই সাফল্যের পরেই মিম প্রধান পশ্চিমবঙ্গে ভোটে লড়াই করার কথা ঘোষণা করেন ৷ মালদা, মুর্শিদাবাদ, বীরভূম সহ রাজ্যের বেশকিছু জেলায় সংখ্যালঘু ভোট বিভানসভা নির্বাচনে বড় নির্ণায়ক হতে যাচ্ছে ৷ মুর্শিদাবাদ কংগ্রেসের বড় ঘাঁটি ৷ অধীর চৌধুরির দুর্গে মিম ভোটে দাঁড়ালে কংগ্রেসের মুসলিম ভোট ব্যাঙ্কেও বড় প্রভাব পড়তে পারে ৷ এই পরিস্থিতিতে তৃণমূলের মতো কংগ্রেস ও বাম দলগুলিও মিমের বিরুদ্ধে প্রচার শুরু করেছে ৷ অধীর কিছুদিন আগে মিম-কে বিজেপির বি-টিম বলে সমালোচনা করেছেন ৷ এই পরিস্থিতিতে মিমকে পালটা চাপে ফেলতে চায় শাসক দল ৷ ওয়াকিবহাল মহলের ধারণা, মিম-কে ভাঙাতে উদ্যোগ নিয়েছে তৃণমূল। শুধু মালদা বা মুর্শিদাবাদ নয়, দক্ষিণবঙ্গে বীরভূম ও দক্ষিণ 24 পরগনার মতো জেলাতেও মিমের শক্তি বাড়ছে ৷ উত্তরবঙ্গে মুর্শিদাবাদকে প্রধান টার্গেট করলেও রাজ্যে মিম প্রায় 100 আসনে প্রার্থী দেবে বলে ঘোষণা করে ৷ মিমের দাবি, রাজ্যে ইতিমধ্যে মিমের সদস্য সংখ্যা তিন লাখেরও বেশি ৷ বীরভূমেও মিম যেভাবে বেড়েছে তাতে তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের গলাতেও শঙ্কার সুর ধরা পড়েছে ৷ অনুব্রত মণ্ডলও কিছুদিন আগে বলেন, "মিম-কে কেউ বিশ্বাস করবেন না। এই দলটা বিজেপির দালাল। বিহারে ভোট কেটে বিজেপিকে সুবিধা পাইয়ে দিয়েছে।"
আরও পড়ুন : অনেককে দেখলে ভয় পায়, তাই গুন্ডা বলে; বহিরাগত ইশুতে অভিষেককে খোঁচা দিলীপের
এই পরিস্থিতিতে মিমকে কমজোরি করতে মাঠে নেমে পড়েছে তৃণমূল ৷ মিমের যুব সংগঠনের প্রধান মহঃ সফিউল্লা খানের পর তৃণমূলে আজ যোগ দিলেন মিমের কার্যকরী সভাপতি ও সাংগঠনিক প্রধান শেখ আবদুল কালাম। শেখ কালামের যোগদান মিমকে বড় ধাক্কা দেবে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷ মিম সংগঠনকে কমজোরি করে নিজেদের ঘর গোছাতে তৃণমূল মরিয়া ৷ এই পরিস্থিতিতে নিজের দল রক্ষায় কীভাবে সামাল দেবে মিম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি , তা নিয়েই প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে ৷