কলকাতা, 7 অক্টোবর: শারদোৎসবের সময় বই বিক্রয় কেন্দ্রের বরাবর আয়োজন করে সিপিএম-সহ বাকি বাম দলগুলো (CPIM Book Stalls)। শুধু বই বিক্রি নয়, এই স্টলগুলো জনসংযোগ বাড়ানোর একটি মাধ্যম তাদের কাছে (Hope for CPIM)। তবে রাজ্যে পালাবদলের পর হাতে গোনা দু-একটি স্টলে ছাড়া বই বিক্রি হত না বললেই চলে । বেশ কিছু জায়গায় শাসক তৃণমূলের বাধায় সিপিএম স্টল বসাতে পারেনি বলেও অভিযোগ উঠেছে বারবার ৷ আবার কিছু জায়গায় স্টল বসলেও সেখানে বয়স্ক পার্টি কমরেডদের বসে মাছি মারতে দেখা যেত । অন্যদিকে, 2011 সালের পর থেকে বুক স্টলের ময়দানে নামে তৃণমূলের মুখপত্র জাগো বাংলা । তবে সবকিছু পেরিয়ে এ বার যেন বাম জামানার ছবি ফিরল সিপিএমের বুক স্টলগুলিতে (Footfall in CPIM book stalls)।
গত বছরও কলকাতায় বুক স্টলের সংখ্যা 100 ছুঁতে পারেনি । তবে এ বার সেই বুক স্টল হয়েছে কলকাতা জুড়ে 120টিরও বেশি । বুক স্টলের সংখ্যাই শুধু বেড়েছে তা নয়, বেড়েছে বই বিক্রিও । যাদবপুর 8বি বুক স্টলে একাদশী পর্যন্ত 5 লক্ষ টাকা পেরিয়ে গিয়েছে বই বিক্রি । পাশাপাশি আরও তিনটি স্টলে প্রায় 75 হাজার টাকার বই বিক্রি হয়েছে ।
একই ভাবে কাশীপুর, বাগবাজার মোড়, বেলেঘাটা, গৌরীবাড়ি-সহ বিভিন্ন জায়গায় বেশ বড় অংকের অর্থের বই বিক্রি হয়েছে । বই বিক্রি বৃদ্ধির থেকে সিপিএম বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে একইদিনে স্টলে থাকা জনতার ভিড়কে । পুজোর দিনগুলিতে স্টলগুলি এ বার জমজমাট থাকায় উৎসাহিত সিপিএম নেতৃত্ব ।
আরও পড়ুন: উৎসবের মরশুমে সোশাল মিডিয়ায় লড়াইয়ের ‘সহজ পাঠ’ সিপিএমের
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য ও কলকাতা জেলা কমিটির সম্পাদক কল্লোল মজুমদার বলেন, "গত বারের থেকে এ বার কলকাতায় বুক স্টলের সংখ্যা বেশি । বিভিন্ন এরিয়া কমিটি জানাচ্ছে, সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর থেকে এ বছর প্রথম তাদের বই বিক্রির টাকা বড় অঙ্ক ছুঁয়েছে । তবে অন্য বারের মতো আমরা একটা প্রোফর্মা পাঠিয়েছি, কোন স্টলে কত বিক্রি হয়েছে, আগের বার কত বিক্রি হয়েছিল, কোন বই বেশি বিক্রি হয়েছে, এমন নানা তথ্য জমা দিতে বলেছি । এগুলো জমা পড়তে আরও বেশ কয়েক দিন সময় লাগবে ৷ তার পরেই টাকার অংক নির্দিষ্ট করে বলতে পারব । বুক স্টল যেমন বেড়েছে তেমন বই বিক্রিও বেড়েছে । আর তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে পাঠকদের বা আমজনতার ভিড় । আগে অধিকাংশ স্টল মাছি মারত । এ বার সেই ছবিটা উলটো ৷ বহু মানুষ এসেছেন । শুধু বই কেনা নয়, নানা রাজনৈতিক আলোচনা হয়েছে । অনেকে নানা প্রশ্ন করেছেন । তাঁদের এই কাছে আসা আমাদের কাছে নিঃসন্দেহে ইতিবাচক ।"
প্রসঙ্গত, এ বার যে সমস্ত জায়গায় অন্য রাজনৈতিক দলের স্টল হয়েছে সেখানেও এত মানুষজনের অংশগ্রহণ দেখা যায়নি । আরও এক সিপিএম নেতা সুদীপ সেনগুপ্ত জানাচ্ছেন, "আজ পর্যন্ত স্টল চলবে । মানুষের জমায়েত, তাঁদের কথা, প্রশ্ন ও পরামর্শে আমরা যেমন পুষ্ট হয়েছি, তেমনই এ বার আগামীকাল থেকে ভ্রাম্যমাণ বুক স্টল হবে দুদিনের জন্য । বই যা বাঁচবে তা ঘুরে ঘুরে বিক্রি করা হবে । এটাও বলতে পারেন জনসংযোগ ।"
অর্থাৎ রাজ্য নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন পুজোর এই সময়কে কাজে লাগিয়ে আরও জনসংযোগ বৃদ্ধির ৷ সেই কাজ অনেকটাই সফল বলে মনে করছেন সিপিএম নেতৃত্ব ।
সম্প্রতি সিপিএমের ছাত্র ও যুব সংগঠন বা সরাসরি দলীয় মিছিল মিটিং-এ ভালোই লোকসমাগম হচ্ছে । এ বার তাদের বুক স্টলেও ভালো সাড়া মিলেছে ৷ তবে এই ভিড়ের প্রভাব ভোটবাক্সে পড়বে ? সেই ফলাফলই বলবে মানুষের হারানো সমর্থন ফিরে পাচ্ছে কি না বামেরা ।