কলকাতা, 17 জানুয়ারি : একদিকে সাংবাদিক বৈঠক করছেন বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু ৷ ঠিক তখনই সবরকম সৌজন্য এড়িয়ে তড়িঘড়ি পাশ থেকে উঠে গেলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে আসন সমঝতার প্রথম বৈঠকেই কার্যত বিভেদ স্পষ্ট বাম ও কংগ্রেস শিবিরে ৷ আর সেটা বুঝিয়ে দিলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি ৷ সাংবাদিকদের উদ্দেশ্য়ে তিনি জানালেন, তিনি কারও চাকর নন ৷ সাংবাদিকদের তিনি ডাকেননি ৷ যাঁরা ডেকেছে, তাঁরাই জানেন ৷
অধীর চৌধুরির এই ব্য়বহারে বিচলিত প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব ৷ কিন্তু, কেন এমনটা করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি ? জানা গিয়েছে বৈঠকে অধীর চৌধুরি বাম নেতৃত্বকে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়েছেন যে, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর দল অধিকাংশ আসনে লড়াই করবে ৷ আর এই নিয়েই চাপানউতোর বেড়েছে দু’পক্ষে ৷ এদিন সিপিআইএমের রাজ্য় সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্রকে উদ্দেশ্য় করে অধীর চৌধুরি বলেন, ‘‘আপনাদের ভোট অনেক কমে গিয়েছে ৷ ক্রমশ তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে আপনাদের জনসমর্থন। লোকসভা নির্বাচনে ধরাশায়ী হয়েছেন। অতএব, আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিশেষ কিছু আশা করবেন না। শরিক দলগুলির বিষয়ে সিপিআইএম বুঝে নেবে। আলাদাভাবে শরিক দলের জন্য আসন বরাদ্দ করা হবে না। দেড়শো আসন কংগ্রেসের থাকবে। বাকি নিয়ে আলোচনা হবে।’’
অধীরের এই বক্তব্য় শুনে কার্যতই ক্ষুব্ধ সিপিআইএমের শরিক দলগুলি ৷ তারা স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝতা চায় না শরিক দলগুলি ৷ বিশেষ করে ফরওয়ার্ড ব্লক ও আরএসপি-র তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে ৷ তবে, শুধুই বাম শরিক দলগুলি না ৷ কংগ্রেসের তরফেও বামেদের সঙ্গে আসন সমঝতা নিয়ে আপত্তি রয়েছে ৷ যে কথা নেপাল মাহাতোর মত প্রদেশ কংগ্রেস নেতা আগেই জানিয়েছিলেন ৷ আজ বৈঠক শেষ হওয়ার পরেই সেখান থেকে উঠে বেরিয়ে যান তিনি ৷
আরও পড়ুন : আসন সমঝোতা নিয়ে বাম-কংগ্রেস বৈঠক, শুরুতেই অধীর-বিমান বাকবিতণ্ডা
এদিন অধীর চৌধুরি সাংবাদিক বৈঠক থেকে উঠে যাওয়ায় কার্যত অস্বস্তিতে পড়ে যান কংগ্রেসের অন্য়ান্য় নেতারা ৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে কংগ্রেস নেতা তথা সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য অধীর চৌধুরিকে বারবার ডাকতে থাকেন ৷ তাঁকে শান্ত করতে উঠে যান আব্দুল মান্নান ৷ এসবের মধ্য়েই রসিকতা করে আরএসপি নেতা মনোজ ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ও আসলে বনেদিয়ানা দেখাতে চাইল ৷’’ এই পরিস্থিতিতে আসন সমঝতা নিয়ে বাম কংগ্রেসের আগামী দু’টি বৈঠকে কী হয়, সেটাই দেখার ৷