কলকাতা, 29 জুন : সন্তান কোথায় ? সেই বিষয়ে তথ্য লুকোচ্ছে হাসপাতাল । এই অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে গেলেন এক ব্যক্তি । আগামীকাল বিচারপতি সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি হবে।
12 জুন চন্দননগরের বাসিন্দা বাবান মণ্ডলের স্ত্রী চন্দননগর সাব ডিভিশন হাসপাতালে সন্তানের জন্ম দেন । সদ্যোজাতর কিছু শারীরিক সমস্যা থাকায় তাকে কলকাতায় রেফার করা হয়। হাসপাতালের নির্দেশ মতোই 13 তারিখ কলকাতার আর জি কর মেডিকেল কলেজে বাবন মণ্ডল সন্তানকে ভরতি করেন। তিনি বলেন, সন্তানকে ভর্তি করার পর থেকেই তিনি হাসপাতালেই থাকতেন । SMCU বিভাগে ভরতি থাকায় নিরাপত্তারক্ষীরা তাঁকে কখনওই বিভাগের ভেতরে ঢুকতে দেয়নি। হাসপাতালের তরফে জানানো হয়েছিল, কোনও অসুবিধা হলে তাঁকে ডেকে নেওয়া হবে। সেই মতোই তিনি মাঝেমধ্যে যাবতীয় রিপোর্ট পৌঁছে দিতেন এবং ওয়ার্ডের বাইরে অপেক্ষা করতেন।
15 জুন বাবান মণ্ডলের স্ত্রীকে চন্দননগর সাবডিভিশন হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হয় । 21 তারিখ তাঁর সেলাই কাটা হয়। এরপরই বাবান বাড়িতে ফোন করে জানান, প্রসূতি বিভাগ হওয়ায় তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না । স্ত্রী এলে তাঁকে ঢুকতে দেওয়া হবে এবং সন্তানকে দেখতে দেওয়া হবে। স্বামীর কথামতো 23 জুন বাবান মণ্ডলের স্ত্রী আর জি কর হাসপাতালে আসেন । কিন্তু তাঁদের কাউকেই ওয়ার্ডে ঢুকতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। হাসপাতালের তরফে বাবানের স্ত্রীকে নাকি বলা হয়, বুকের দুধ পাম্প করে দিতে। তিনি 23, 24 এবং 25 তারিখ দুধ পাম্প করে দেন।
25 জুন ওই দম্পতি নিজেদের সন্তানকে দেখার জন্য বারবার আবেদন করলে হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, 15 জুন তাদের সন্তান মারা গেছে । দেহ মর্গে রয়েছে। মৃত্যুর পরই মাইকে সেই কথা ঘোষণা করা হয়েছিল । এরপর বাবান সন্তানের মৃতদেহ দেখতে চান কিন্তু তা দেখানো হয়নি বলে অভিযোগ । 26 জুন তাঁদের একটি বিকৃত হয়ে যাওয়া মৃতদেহ দেখানো হয়। তিনি সঙ্গে সঙ্গে জানান, এটি তাঁর সন্তান নয়। তাঁর সন্তানকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনও কিছু করেছে এবং তা লুকোনোর জন্যই এখন এই গল্প সামনে এনেছে। তিনি সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে অভিযোগ জানান এবং দাবি করেন মৃত বাচ্চাটির DNA পরীক্ষা ও ময়নাতদন্ত করা হোক। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কিছুই করেনি ।
নিজের সন্তানের খোঁজ পেতে ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কলকাতা হাইকোর্টে যান তিনি । তাঁর আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি বলেন," আমার মক্কেলের দাবি, যে বিকৃত মৃতদেহটি দেখানো হয়েছে সেটা তাঁর সন্তান নয় । অবিলম্বে মৃতদেহের DNA পরীক্ষা ও ময়নাতদন্ত করা হোক। তাঁদের সন্তান যদি মারা যায় তবে ঘটনার দশ দিন বাদে কেন জানাল হাসপাতাল ? এই ঘটনায় হাসপাতালের চিকিৎসক ও অন্যান্য কর্মচারীদের লাইসেন্স বাতিল করা সহ উপযুক্ত শাস্তির দাবিও করেছেন তিনি। "