কলকাতা, 29 নভেম্বর : ভিড় এড়াতে অনেকেই অনলাইনে রেস্তরাঁয় টেবিল বুক করে নেন । ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে এই ব্যবস্থা । সেটা কি আপনিও করেন? তবে সাবধান । এবার সেদিকে নজর পড়েছে সাইবার অপরাধীদের । আরও ভালো করে বললে, ভারতে সাইবার অপরাধে ত্রাস হয়ে ওঠা 'জামতারা গ্যাং'-এর । রেস্তরাঁর টেবিল বুক করতে যাওয়ার সময় অসাবধানতার সুযোগ নিয়ে ইতিমধ্যেই তারা লুটে নিয়েছে বহু টাকা । ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছেন লালবাজারের গোয়েন্দারা ।
লালবাজার সূত্রের খবর, 16 নভেম্বর এক রেস্তরাঁ কর্তা দেবাশিস ঘোষ অভিযোগ দায়ের করেন লালবাজারের সাইবার ক্রাইম থানায় । জানান, তাঁর রেস্তরাঁর নামে কেউ বা কারা গুগলে দিয়েছে বিজ্ঞাপন । সেখানে দেওয়া হয়েছে একটি ফোন নম্বরও । তাঁরা অভিযোগ পেয়েছেন বহু কাস্টমার ওই বিজ্ঞাপনের ফাঁদে পড়ে বহু টাকা খুইয়েছেন । তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, কাস্টমাররা যখন ওই মোবাইল নম্বরটিতে যোগাযোগ করতেন তখন তাঁদের বলা হত বুকিং চার্জ হিসেবে 10 টাকা দিতে হবে । কাস্টমারের মোবাইল নম্বরে পাঠিয়ে দেওয়া হত একটি লিঙ্ক । সেই লিঙ্কই বুকিং চার্জ দেওয়ার জন্য বলা হত । লিঙ্কে 10 টাকা ট্রান্সফার করলেই কাস্টমারের অ্যাকাউন্ট থেকে গায়েব হয়ে যাচ্ছিল হাজার হাজার টাকা ।
তদন্তে নেমে পুলিশ গুগলের বিজ্ঞাপনে দেওয়া মোবাইল নম্বরের কল ডিটেলস রেকর্ড খতিয়ে দেখে । খতিয়ে দেখা হয় অনলাইনে টাকা লেনদেনকারী একটি সংস্থায় রেজিস্টার্ড মোবাইল নম্বরও । আর তখনই বোঝা যায় এটি 'জামতারা গ্যাং-এর কাজ । কারণ ওই অনলাইনে টাকা লেনদেনকারী সংস্থার সঙ্গে যুক্ত মোবাইল নম্বর এবং বিজ্ঞাপনে দেওয়া মোবাইল নম্বরের লোকেশন ঝাড়খণ্ডের জামতারাতেই দেখা যায় । অনলাইনে টাকা লেনদেনকারী একটি সংস্থায় লেনদেন খতিয়ে দেখে পুলিশ জানতে পারে বেশিরভাগ টাকা সরানো হয়েছে জামতারার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কারুয়া শাখায় । ওই অ্যাকাউন্ট রহিম আনসারি নামে একজনের । সহজেই পাওয়া যায় ওই ব্যক্তির ঠিকানা । আর তারপরই জামতারায় অভিযান চালায় কলকাতা পুলিশ । আজ জামতারা থেকে রহিম ছাড়াও গ্রেপ্তার করা হয়েছে নুরুল আনসারি এবং মহম্মদ আজহারউদ্দিনকে । তিনজনেরই বয়স 30-31 এর মধ্যে । তাদের ট্রানজ়িট রিমান্ডে কলকাতায় আনা হচ্ছে ।